Advertisement
২০ ডিসেম্বর ২০২৪

চিনা মাঞ্জার বলি কিশোর

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:০৫
Share: Save:

তিন বছর আগে নিষিদ্ধ করেছিল পরিবেশ আদালত। তবু বাজারে চিনা মাঞ্জার সুতো বিক্রি বন্ধ হয়নি। কলকাতায় সেই মারণ সুতোয় একাধিক দুর্ঘটনাও ঘটেছে। এ বার চিনা মাঞ্জার সুতোয় গলা কেটে মৃত্যু হল এক কিশোরের।

মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে খড়্গপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। জখম কিশোরের নাম মহম্মদ সাদেক (১৫)। তার বাড়ি শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাঁচবেড়িয়ার কাজিমহল্লায়। শহরের সাউথসাইড হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ওই কিশোর সাইকেলে বাসস্ট্যান্ড এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে। উড়তে থাকা একটি ঘুড়ির সুতো জড়িয়ে তার গলার নলি কেটে যায় বলে অভিযোগ। জখম ওই কিশোরকে নিয়ে যাওয়া হয় খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে। চালু হয় অক্সিজেন। তবে বেশ কিছুক্ষণ পরেই মৃত্যু হয় তার। পরিজন ও পড়শিদের অভিযোগ, চিনা মাঞ্জা দেওয়া ছিল ওই ঘুড়ির সুতোয়। তাতেই গলা কেটে যায় সাদেকের। ওই সুতো ব্যবহারে ঘুড়ি ওড়ানোর অভিযোগে বছর দশেকের এক বালককে গ্রেফতারের দাবিও তোলেন মৃতের পরিজনেরা। থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মৃত কিশোরের বাবা মহম্মদ সরফরাজ। পরে পুলিশ ওই বালককে গ্রেফতার করে।

চিনা মাঞ্জায় একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে কলকাতায়। জেলাতেও এমন নজির রয়েছে। চিনা মাঞ্জায় হাতের আঙুল কেটেছে। বছর খানেক আগে মেদিনীপুরের ধর্মার কাছে মোটরসাইকেলে যাওয়ার সময় ব্যক্তির গলা কেটে যাওয়ার অভিযোগও উঠছিল। তবে জেলায় এই সুতোয় মৃত্যুর নজির আগে সে ভাবে নেই।

দুই ছেলে ও এক মেয়ের পরিবারে বড় ছেলে সাদেককে হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন বাবা সরফরাজ ও মা আফরিন বানো। শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা। পেশায় বাসস্ট্যান্ড এলাকার স্টেশনারি দোকানি সরফরাজ বলেন, “আমার ছেলে ওর বোনকে পড়াতে নিয়ে যাচ্ছিল সাইকেলে। এক বালক ঘুড়ি ওড়াচ্ছিল। তাতে চিনা মাঞ্জার সুতো ব্যবহার করা হয়েছিল। সেটাই আমার ছেলের গলায় জড়িয়ে যায়। চিৎকার করলেও ওই বালক সুতো টানতে থাকে। তাতে গভীরভাবে কেটে যায় গলা।।”

চিনা মাঞ্জা বন্ধের দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় কাউন্সিলর তথা উপ-পুরপ্রধান শেখ হানিফ বলেন, “চিনা মাঞ্জার সুতোর জন্যই এ ভাবে একটি নিরীহ প্রাণ চলে গেল। এই সুতো যখন মানুষের ক্ষতি করছে, তখন কেন ব্যবসায়ীরা তা বিক্রি করছে? অবিলম্বে এই সুতোর বিক্রি বন্ধে পদক্ষেপ করতে হবে প্রশাসনকে।”

২০১৬ সালের ডিসেম্বরে পরিবেশ আদালতের পক্ষ থেকে এই সুতোর আমদানি ও কেনা-বেচায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। চিন থেকে আমদানি বন্ধ হয়েছে এই সুতোর। তবে এখন বেঙ্গালুরুতেই তৈরি হচ্ছে নাইলনের এই সুতো। সেখান থেকে পৌঁছচ্ছে এ রাজ্যের নানা প্রান্তে। ফলে, কী ভাবে ওই সুতো বিক্রিতে রাশ টানা যাবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ শুধু ঘুড়ি ওড়ানো সহজ করা নয়, এর উপর অনেকের রুটিরুজিও নির্ভরশীল। ঘুড়ি প্রতিযোগিতাতেও হচ্ছে ব্যবহার এই সুতো। শহরের শ্রীকৃষ্ণপুরের বাসিন্দা ঘুড়িপ্রেমী সানি দাস বলেন, “আমি বছরের নানা সময় বিভিন্ন জায়গায় আয়োজিত ঘুড়ি প্রতিযোগিতায় যাই। সবাই এই চিনা মাঞ্জা ব্যবহার করে। কারণ দাম কম!” তবে এই মারণ সুতোর বিক্রি বন্ধে অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Death Chinese Kite Thread
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy