Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

দিদিমণির লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়ে শিক্ষারত্ন

শিক্ষক দিবসে কলকাতার নজরুল মঞ্চে সুস্মিতাদেবী-সহ রাজ্যের ১৫ জন প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে সম্মানিত করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরস্কারের টাকা এবং নিজের জমানো কিছু টাকা দিয়ে স্কুলে তহবিল গড়ার কথা জানিয়েছেন সুস্মিতাদেবী।

সুস্মিতা ঘোষ মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

সুস্মিতা ঘোষ মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৬:০০
Share: Save:

শিক্ষার আলোয় মেয়েদের ভুবন আলোকিত করাই তাঁর স্বপ্ন। আর তা সত্যি করতে লড়াই করছেন ঝাড়গ্রাম শহরের অশোক বিদ্যাপীঠ নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের টিচার-ইনচার্জ সুস্মিতা ঘোষ মণ্ডল। সুস্মিতাদেবীর সেই লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়ে এ বার রাজ্য সরকার তাঁকে ‘শিক্ষারত্ন’ সম্মানে ভূষিত করছে। ঝাড়গ্রামের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক (পশ্চিম চক্র) প্রকাশ সরকার বলেন, ‘‘ঝাড়গ্রাম জেলায় এ বার সুস্মিতাদেবীই একমাত্র শিক্ষারত্ন পাচ্ছেন।’’

কাল, শিক্ষক দিবসে কলকাতার নজরুল মঞ্চে সুস্মিতাদেবী-সহ রাজ্যের ১৫ জন প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে সম্মানিত করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরস্কারের টাকা এবং নিজের জমানো কিছু টাকা দিয়ে স্কুলে তহবিল গড়ার কথা জানিয়েছেন সুস্মিতাদেবী। তা থেকে দুঃস্থ পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষায় সাহায্যের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।

সুস্মিতাদেবীর স্কুলে মূলত নিম্ন আয়ের পরিবারের ছেলেমেয়েরাই পড়ে। দুঃস্থ ওই শিশুদের নিয়েই শিক্ষিকার আনন্দের জগৎ। প্রাথমিকের পরেও যাতে তাদের পড়া থমকে না যায়, সে জন্য নিয়মিত স্কুলে অভিভাবকদের নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মশালার হয়। দু’দশকে তার ফলও মিলেছে। স্কুলের প্রাক্তনীরা কেউ এখন চিকিৎসক, কেউ নার্স, কেউ সরকারি কর্মী। পড়ুয়াদের জন্মদিনে স্কুলের তরফে উপহারও দেওয়া হয়।

সুস্মিতাদেবী নিজের উদ্যোগে শিশু পড়ুয়াদের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করিয়ে কার্ডও বানিয়ে দিয়েছেন। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এক পড়ুয়াকে দেখে ২০১৪ সাল থেকে স্কুলে নিয়মিত থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা ও নির্ণয় শিবির চালু করেছেন। ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন হাইস্কুল ও প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জেও থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা শিবির করেন এই শিক্ষিকা। তাঁর প্রচেষ্টায় ঝাড়গ্রামে তৈরি হয়েছে একটি রক্তদাতা গোষ্ঠী। সুস্মিতাদেবীর স্কুলের তিনজন শিক্ষকও এই কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে রয়েছেন।

সুস্মিতাদেবীর বাড়ি ঝাড়গ্রাম শহরের রঘুনাথপুরে। স্বামী হরেন্দ্রনাথ মণ্ডল অবসরপ্রাপ্ত হাইস্কুলের শিক্ষক। দুই ছেলে ইঞ্জিনিয়ার। পদার্থবিদ্যার স্নাতক সুস্মিতাদেবী ছোট থেকেই শিক্ষিকা হতে চেয়েছিলেন। তবে তাঁর স্কুলে বহু বছর স্থায়ী প্রধান শিক্ষক নেই। পর্যাপ্ত ক্লাস ঘর, পাঁচিলেরও অভাব। নিজের চেষ্টায় বিভিন্ন সংস্থার সাহায্য নিয়ে তিনি স্কুলে জল পরিশোধন যন্ত্র বসিয়েছেন। পানীয় জলের সমস্যা মিটিয়েছেন।

অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রকাশবাবুও মানছেন, ‘‘সুস্মিতাদেবীর স্কুল সংলগ্ন দরিদ্র এলাকায় স্কুল ছুটের হার অনেক কমে়েছ। স্কুলটিকে আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার জন্য উনি আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy