Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
এ বার আইন ভেঙে ঠিকাদারি

দিবাকরকে ফের তোপ জয়দেবের

কাটমানি নিয়ে একাধিক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগে যখন শোরগোল উঠেছে, তখন দলীয় নেতার বিরুদ্ধে দলেরই আর এক নেতার ওই অভিযোগ ঘিরে উৎসাহিত বিজেপি থেকে বিরোধী কংগ্রেস ও বাম।

সস্ত্রীক দিবাকর জানা। নিজস্ব চিত্র

সস্ত্রীক দিবাকর জানা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৯ ০০:৪৫
Share: Save:

রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সম্পত্তি বৃদ্ধির অভিযোগ উঠেছিল তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকর জানার বিরুদ্ধে। দলের জেলা নেতৃত্বের কাছে সেই অভিযোগ জানিয়েছিলেন ওই পঞ্চায়েত সমিতিরই খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ জয়দেব বর্মন।

কাটমানি নিয়ে একাধিক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগে যখন শোরগোল উঠেছে, তখন দলীয় নেতার বিরুদ্ধে দলেরই আর এক নেতার ওই অভিযোগ ঘিরে উৎসাহিত বিজেপি থেকে বিরোধী কংগ্রেস ও বাম। দিবাকরের বিরুদ্ধে নোনাকুড়ি বাজারে একটি সমবায় সমিতির জমি লিজ নিয়ে সেখানে বহুতল নির্মাণের অভিযোগ তুলে সমবায় মন্ত্রীর কাছে নালিশ জানিয়েছিলেন জয়দেব। যার জেরে তাঁর বিরুদ্ধে দলীয় ভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়। দলীয় নেতার বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলায় দলের শৃঙ্খলাভঙ্গ হয়েছে এই অভিযোগে তৃণমূল থেকে জয়দেবকে বহিষ্কারের জন্য ইতিমধ্যেই জেলা সভাপতির কাছে সুপারিশ করেছে ব্লক তৃণমূল কমিটি। যদিও নিজের অভিযোগ থেকে তিনি যে সরে আসছেন না তা জানিয়ে দিয়েছেন জয়দেব।

দল থেকে বহিষ্কারের খাঁড়া মাথার উপরেও ঝুললেও তিনি যে দমবার পাত্র নন, তার প্রমাণ ফের দিবাকরের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন জয়দেব। সরকারি নিয়ম ভেঙে দিবাকর ঠিকাদারি সংস্থা চালাচ্ছেন এই মর্মে বুধবার জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন তিনি। ডিএস এন্টারপ্রাইজ নামে ওই ঠিকাদারি সংস্থার উল্লেখ করে জয়দেবের অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী পঞ্চায়েতের কোনও প্রতিনিধি ঠিকাদারি সংস্থা চালাতে বা ঠিকাদারির সংক্রান্ত কোনও কাজে যুক্ত থাকতে পারেন না। অথচ, সেই নিয়ম ভেঙে দিবাকর একটি ঠিকাদারি সংস্থা চালাচ্ছেন। তাঁর ঠিকাদারি সংস্থা কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ‘ড্রাই ফ্লাই অ্যাশ’ ক্লিনিং ও লোডিং -সহ ‘কন্ট্রাকচুয়াল’ কাজে যুক্ত।’’

সরকারি নিয়ম ভেঙে এ ভাবে ঠিকাদারি সংস্থা চালানোর জন্য দিবাকরের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক বলে জেলাশাসকের কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি।

জয়দেবের আরও অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির ক্ষমতা ব্যবহার করে ব্লক এলাকার রাস্তা সংস্কারের জন্য ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে এক হাজার ট্রিপ (লরি) পরিত্যক্ত পাথর, বোল্ডার’ নিয়েছেন দিবাকর।’’ ওই পাথর-বোল্ডার ব্যবহার করে কোন কোন রাস্তা সংস্কার হয়েছে তাঁর তালিকা প্রকাশ করারও দাবি জানান তিনি। ফের তাঁর বিরুদ্ধে জয়দেবের তোলা অভিযোগ নিয়ে এদিন দিবাকর বলেন, ‘‘এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’ আর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকরের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি।’’

দলে শাস্তি হতে পারে জেনেও এ ভাবে বার বার তাঁর তোপ দাগা নিয়ে তৃণমূলের একাংশের সন্দেহ, জয়দেবের পিছনে বিজেপির হাত রয়েছে। তাই এ ভাবে সভাপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি নিয়ে সরব তিনি। যদিও জয়দেবের দাবি, ‘‘দিবাকরের বিভিন্ন দুর্নীতি নিয়ে আগেও ব্লক স্তরে সংগঠনিকভাবে জানিয়েছি। এ বার প্রমাণ-সহ জেলা নেতৃত্ব ও প্রশাসনকে অভিযোগ জানিয়েছি। এতে অন্য কোনও দলের মদত নেই। বিজেপির সঙ্গেও এর কোনও সম্পর্ক নেই।’’

শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সহ সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা বামদেব গুছাইত বলেন, ‘‘দিবাকরের বিরুদ্ধে জয়দেব যে সব অভিযোগ করেছেন তাঁর যথার্থতা রয়েছে। এতে আমার সমর্থন রয়েছে। দিবাকরকে দলের ও পঞ্চায়েতের সমস্ত পদ থেকে অপসারণের দাবি জানাচ্ছি।’’

বিজেপির তমলুক জেলা সভাপতি নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘জয়দেববাবুর সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই। তবে সাধারণ মানুষের স্বার্থে তাঁর এই ভূমিকাকে আমরা সমর্থন করছি। উনি চাইলে বিজেপিতে যোগ দিতেন পারেন। ওঁকে স্বাগত।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Corruption TMC Tamluk Bribe Dibakar Jana
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy