নন্দীগ্রামের আমদাবাদে দিলীপ ঘোষ বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
পূর্ব মেদিনীপুর তাঁর খাসতালুক। নন্দীগ্রাম তাঁর গড়। সেই গড়েই বৃহস্পতিবার জনসংযোগ যাত্রা করার কথা ছিল তৃণমূল বিধায়ক তথা পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বৃষ্টির ‘দোহাই’ দেখিয়ে বাতিল হয় ওই কর্মসূচি।
বৃষ্টি অবশ্য বাধ সাধেনি প্রতিপক্ষের কর্মসূচিতে। বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিন নন্দীগ্রাম এবং চণ্ডীপুরে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই হাজির ছিলেন সংঙ্কল্প যাত্রায়। হেঁটেছেন বেশ কয়েক কিলোমিটার রাস্তা। আর তাঁকে সঙ্গ দিতে ছাতা মাথায় বিজেপি’র কর্মী-সমর্থকদের সংখ্যাটাও নেহাত কম ছিল না।
শুভেন্দুর নেতৃত্বে নন্দীগ্রামের ভেটুরিয়া থেকে টেঙ্গুয়া পর্যন্ত এ দিন তৃণমূলের মিছিল হওয়ার কথা ছিল। অন্তত তেমনই জানিয়েছিলেন ব্লক নেতৃত্ব। কিন্তু সকালে বৃষ্টি হওয়ায় ওই কর্মসূচি বাতিল করা হয়। নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মেঘনাদ পাল বলেন, ‘‘বৃষ্টিতে দলের সমর্থকদের কথা ভেবেই এ দিন মিছিল স্থগিত করা হয়। তবে পরিবহণ মন্ত্রী খুব শীঘ্রই ফের জনসংযোগ যাত্রা করবেন।’’ শুভেন্দুর অবশ্য দাবি, ‘‘এ দিন আমার নন্দীগ্রামে যাওয়ার কোনও কথাই ছিল না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বুধবার পর্যন্ত সম্প্রীতি যাত্রা হয়েছে। এ দিন হয়তো বৃষ্টিতে ব্যঘাত ঘটে থাকতে পারে।’’
তৃণমূল ব্লক নেতৃত্ব যখন শুভেন্দুর কর্মসূচি বাতিলের কথা জানাচ্ছেন, তখন চণ্ডীপুরে সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ অল্প বৃষ্টির মধ্যে হাঁসচড়া বাজার থেকে পদযাত্রা শুরু করেন দিলীপ। সেখানে কিছুটা হাঁটার পরে তিনি টোটোতে দুপুর ২টো নাগাদ ১৫ কিলোমিটার দূরে আটাত্তর গ্রামের সভাস্থলে পৌঁছন। সেখানে তৃণমূলকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘অন্য দলের না কি সভা করার কথা ছিল। তাঁদের নেতাও আসেনি, কর্মীরাও আসেনি। কারণ, গায়ে এত তেল হয়ে গিয়েছে, জল আর রোদে খুব লাগে। কষ্ট করার অভ্যাস নেই।’’
চণ্ডীপুর থেকে বিকেলে দিলীপ যান নন্দীগ্রামে। নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের আমদাবাদ থেকে বিজেপি’র সঙ্কল্প যাত্রা শুরু হয়। মিছিল শুরু আগে স্থানীয় একটি মাঠে সভা করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। সেখানে বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রচুর বিজেপি কর্মী সমর্থক উপস্থিত হন। যা দেখে রীতিমত উচ্ছ্বসিত বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি। তারপর প্রায় ১০ কিলোমিটার হেঁটে নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের ঘোল পুকুর বাজার পর্যন্ত যান দিলীপ।
লোকসভা ভোটের আগের দলীয় প্রার্থী সিদ্ধার্থ নস্করের সমর্থনে প্রচার করতে প্রথমবার নন্দীগ্রামে এসেছিলেন দিলীপ। সেবার খেজুরি যাওয়ার পথে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রাজনৈতিক অশান্তির ঘটনা ঘটেনি, তবে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে প্রায় অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল বিজেপির কর্মসূচি। তা সত্ত্বেও দলের কর্মীদের উপস্থিতির সংখ্যা দেখে দিলীপের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ভেবেছিলাম আপনারা কেউই থাকবেন না। কিন্তু বৃষ্টিতেও যেভাবে হাজার হাজার মানুষ দাঁড়িয়ে রয়েছেন, তাতে আমি মুগ্ধ।’’ এরপরই শাসকদলকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের একটা মিছিল ছিল। কিন্তু কাউকে খুঁজে পাইনি। আপনাদের দেখে মনে হচ্ছে ২০২১ সালে রাজ্যের ক্ষমতায় বিজেপি আসছে।’’
এ দিনের মিছিল প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতি (তমলুক) নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনের কথা আমরা কয়েক দিন ধরেই জানতে পারছিলাম। তাই এত বৃষ্টির পরেও সাধারণ সমর্থকদের কথা ভেবে সেখানে আমরা গিয়েছিলাম। ব্যাপক সমর্থন পেয়েছি।’’
বিজেপি যতই তাঁদের কটাক্ষ করুক, পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মেঘনাদ। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের যে মিছিল হবে, তাতেই দেখিয়ে দেব নন্দীগ্রামের মানুষ কাদের সঙ্গে রয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy