বৈঠক শেষে শুভেন্দু অধিকারী।—নিজস্ব চিত্র।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ধাক্কায় বিপর্যস্ত দুই মেদিনীপুর এবং দুই ২৪ পরগনাকে ছন্দে ফেরাতে রাজ্য সরকারের কাছে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার দাবি জানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রামে নিজের কার্যালয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের ৬ বিজেপি বিধায়ককে পাশে নিয়ে এই দাবি জানিয়েছেন তিনি। শুভেন্দু বলেন, ‘‘পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বদলীয় বৈঠকের দাবি জানাচ্ছি রাজ্য সরকারের কাছে। ত্রাণ এবং মানুষের পাশে যদি সত্যিই উনি (মুখ্যমন্ত্রী) দাঁড়াতে চান তাহলে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করুন।”
বিপর্যয়ের এই সময়ে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের উপেক্ষা করা হচ্ছে বলেও বৃহস্পতিবার অভিযোগ করেছেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক। তিনি বলেছেন, “প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যেও রাজ্যে বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের উপেক্ষা করা হচ্ছে। বিধায়করা ফোন করলে ব্লক আধিকারিকরা কেউ জবাব দিচ্ছেন না। এটা গণতন্ত্রের পরিপন্থী।” তাঁর আরও অভিযোগ, “প্রধানমন্ত্রী সবার সঙ্গে বৈঠক করলেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গে প্রশাসনিক ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করলেন। অথচ এই রাজ্যের সরকার বিজেপি প্রতিনিধিদের উপেক্ষা করছেন।’’
শুভেন্দুর দাবি, ইয়াসে বিপর্যস্ত এই সময়ে রাজ্যের উচিত দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আশা করব, প্রশাসন এই ধরনের বিপর্যয়ের সময়ে দলমতের ওপরে উঠে কাজ করবে। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য তৈরি।’’ একই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘বিপর্যয় মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গের বরাদ্দকৃত অর্থ ১,০৮৭ কোটি টাকা। তার মধ্যে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ ৮০০ কোটি। সেই টাকার প্রথম কিস্তির ৪০৪ কোটি কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বুধবার বলেছিলেন রাজ্যের ১ হাজার কোটি, কেন্দ্রের ৪০০ কোটি খরচ করেছেন। সেগুলো কোথায় খরচ করলেন দেখতে পাইনি। আমরা দাবি করছি, কোথায় কোথায় ৪০০ কোটি টাকা খরচ করেছেন, কারা কারা পেয়েছেন, এটা আপনারা জানান।”
বৃহস্পতিবার জেলার বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন শুভেন্দু। সেখানে শুভেন্দু ছাড়াও খেজুরির বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক, ময়নার বিধায়ক অশোক ডিন্ডা, উত্তর কাঁথির বিধায়ক সুমতি সিন্হা, ভগবানপুরের রবীন্দ্রনাথ মাইতি, দক্ষিণ কাঁথির অরূপ দাস এবং হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল ছিলেন। ওই বৈঠক শেষে শুভেন্দু বলেন, ‘‘বিজেপি করা এবং অন্য দলকে ভোট দেওয়ার জন্য নন্দীগ্রাম-সহ বহু এলাকার মানুষকে বঞ্চিত করা হয়েছে। নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের নদী তীরবর্তী একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষের পাশে কেউ দাঁড়ায়নি। দক্ষিণ কাঁথির মাজিলাপুর গ্রামপঞ্চায়েতের ফ্লাড সেন্টারে বিজেপি করার অপরাধে ৩০০ পরিবারকে থাকতে দেয়নি। আমরাই তাঁদের ব্যবস্থা করেছি।”
শুভেন্দুর দাবিকে কটাক্ষ করে পাল্টা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘সরকার এখন যে কাজ করছে তাতে বিরোধী বা শাসক বলে কোনও কথা নেই। আর এখন তো তর্ক-বিতর্ক করার সময় নয়। এই সময় সবাই মিলে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সময়। এখন পর্যালোচনা করতে বসলে আর বাঁধ বাধা হবে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ইয়াসের পর থেকেই আমরা সবাই নেমে পড়েছি কাজে। কার্যক্ষেত্রে এখন সবার এগিয়ে এসে কাজ করা উচিত। বৈঠকের যে সব দাবি করা হচ্ছে, তা পরে হবে। এখন এ সব বিতর্ক না করে জনগণকে কী ভাবে সাহায্য পৌঁছে দেওয়া যায় সে কথা সবাই মিলে ভাবি। জনপ্রতিনিধিকে কি আমন্ত্রণ করে আনতে হবে? আমিও তো জনপ্রতিনিধি। আমাকে তো কেউ আমন্ত্রণ করেননি। ’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy