গড়বেতার দোকানে প্যাঁড়ার পোস্টার। —নিজস্ব চিত্র।
ছেলেমেয়েকে নিয়ে ট্রেন থেকে নেমেই প্যাঁড়ার খোঁজ করছিলেন পেশায় শিক্ষিকা অন্তরা চক্রবর্তী। ভাইকে ফোঁটা দিতে মঙ্গলবার কলকাতা থেকে গড়বেতায় এসেছেন তিনি। ট্রেন থেকে নেমে রাধানগর মোড়ে মিষ্টির দোকানে গিয়ে অন্য মিষ্টির সঙ্গে প্যাঁড়ার প্যাকেটও একটা করে নেন তিনি। অন্তরা বলেন, ‘‘গড়বেতার প্যাঁড়ার কদরই আলাদা। এখানে এসে প্যাঁড়া না খেলাম তো আর কী খেলাম!’’
শুধু এই শিক্ষিকাই নয়, গত দু’দিনে গড়বেতার মিষ্টি দোকানগুলিতে প্যাঁড়ার বিক্রি হয়েছে দেদার। ভাইফোঁটার হাত ধরেই ফিরল গড়বেতার প্যাঁড়া। ঐতিহ্যের এই মিষ্টির জোগান দিতে কার্যত হিমশিম খেতে হয়েছে দোকানিদের। রসগোল্লা, কাঁচাগোল্লা, সন্দেশ, রসমালাই, চানসাইয়ের সঙ্গে এ বার সমান তালে বিক্রি হয়েছে ঐতিহ্যের প্যাঁড়াও। ক্রেতাদের টানতে অনেকে দোকানের সামনে ‘এখানে গড়বেতার প্রসিদ্ধ প্যাঁড়া পাওয়া যায়’ লেখা কাগজও টাঙিয়ে দেন। গড়বেতায় একটি পুরনো মিষ্টির দোকানে মঙ্গলবার সকাল থেকেই প্যাঁড়া কেনার ভিড় বাড়ে ক্রেতাদের। মিষ্টি ব্যবসায়ী বাসুদেব দে, জয়দেব দে বলেন, ‘‘প্যাঁড়ার বিক্রি এ বার অনেকটাই বেড়েছে, চাহিদা রয়েছে বলে আমরা তিন রকম দামের প্যাঁড়া করেছি, এই দু’দিনে আড়াই থেকে তিন হাজার পিস প্যাঁড়া বিক্রি হয়েছে। প্যাঁড়ার জোগান বাড়াতে হচ্ছে।’’
ধাদিকার একটি মিষ্টি দোকানের মালিক বললেন, ‘‘এ বার জামাইফোঁটা ও ভাইফোঁটাতে প্যাঁড়ার চাহিদা বেড়েছে। সকলে দেখছি প্যাঁড়া কিনছেন।’’ রাউলিয়ার একটি মিষ্টান্ন দোকানের মালিক কাঞ্চন দণ্ডপাট বলেন, ‘‘গত কয়েকদিনে পাঁচ হাজার পিস প্যাঁড়া বিক্রি করেছি। চাহিদা আছে দেখে কড়া ও হাল্কা দু’ধরনের পাকেরই প্যাঁড়া করে রেখেছি।’’ এ বার প্যাঁড়া বিক্রি ভালই হচ্ছে বলে জানান ঝাড়বনির মিষ্টান্ন বিক্রেতা চন্দন পাল।
অনেক পরিবারে মঙ্গলবার জামাইদের ফোঁটা দেওয়া হয়েছে। সেই সব পরিবারে জামাইদের পাতেও ছিল প্রসিদ্ধ প্যাঁড়া। শ্বশুর-শাশুড়িরা অন্য মিষ্টির সঙ্গে প্যাঁড়াও কেনেন জামাইদের খাওয়াতে। ভাইফোঁটাতেও প্যাঁড়ার বিক্রি বেড়েছে। গড়বেতার প্যাঁড়ার ঐতিহ্য ১০০ বছরেরও পুরনো। এক সময় গড়বেতার মেওয়ালালের প্যাঁড়া ছিল বিখ্যাত। বিহারের পটনা থেকে এখানে এসে বিশেষ পদ্ধতিতে দুধ থেকে খোয়া করে, তার সঙ্গে চিনির পাক দিয়ে এই প্যাঁড়া করতেন মেওয়ালাল গুপ্তা। তিনি প্রয়াত, তাঁর দোকান রয়ে গিয়েছে রাধানগরে। সেই দোকানেও প্যাঁড়া কেনার ভিড় ছিল এ দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy