Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Contai

অখিলের সুপারিশে চাকরি! তালিকা শুভেন্দুর

অখিলের যে ‘সুপারিশপত্র’ শুভেন্দু শেয়ার করেছেন, তার সঙ্গে হুবহু মিল রয়েছে মামলাকারীদের তরফে জমা দেওয়া সুপারিশপত্রের।

শুভেন্দুর দেওয়া তালিকা। নিজস্ব চিত্র

শুভেন্দুর দেওয়া তালিকা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:২২
Share: Save:

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। এরপরই তৃণমূলের আরও কয়েকজন বিধায়কের নাম করে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই তালিকায় আছেন তাঁর নিজের জেলার বিধায়ক তথা মন্ত্রী অখিল গিরিও।

সমাজ মাধ্যমে শুভেন্দুর অভিযোগ,"তৃণমূলের জন প্রতিনিধিরা মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেছেন। এঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া উচিত।’’ শুভেন্দুর নিশানায় পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের বিধায়ক তথা রাজ্যের কারা দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী অখিল ছাড়াও বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ মালিক, হুগলির বলাগড়ের প্রাক্তন বিধায়ক অসীম মাঝি, বীজপুরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু রায়, সাংসদ অপরূপা পোদ্দার এবং আবু তাহের খানের নাম রয়েছে।

অখিলের প্যাডে লেখা চাকরির ‘সুপারিশপত্র’ (সেটি আনন্দবাজার পত্রিকা যাচাই করেনি) সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েও পড়েছে। অখিলের যে ‘সুপারিশপত্র’ শুভেন্দু শেয়ার করেছেন, তার সঙ্গে হুবহু মিল রয়েছে মামলাকারীদের তরফে জমা দেওয়া সুপারিশপত্রের। যাদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ, তাঁরা অনেকেই স্কুলে চাকরি করছেন। প্যাডের ওই কাগজে অখিল গিরির নাও ও কাঁথির বাড়ি র ঠিকানা, ফোন নম্বরও রয়েছে। সেই সঙ্গে তালিকায় চাকরিপ্রার্থীদের নাম, রোল নম্বর, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বিভাগের উল্লেখ করে প্রত্যেকের সম্পর্কে তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। ওই সুপারিশপত্র ২০১৩ সালের ১২ অগস্ট লেখা। ততে সব মিলিয়ে ২৬ জনের নাম রয়েছে।

যদিও এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী অখিলের বক্তব্য, ‘‘বিরোধী দলনেতা কিছু বলতেই পারেন। চাইলে যে কেউ তদন্তও করতে পারে। সেই তদন্তে আমি সহযোগিতা করব। তবে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে যে কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে তারও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’’

ওই সুপারিশপত্রের ১৭ নম্বরে নাম রয়েছে শম্পা দাস মহাপাত্রের। তিনি বর্তমানে রামনগর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। ২০১৩ সালে রামনগরের নরিহা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকতার চাকরি পান শম্পা। এ দিন শম্পার দাবি, "শারীরিক অসুস্থ নিয়েই টেট দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। কেউ আমার নামে সুপারিশ করতেই পারেন। তবে আমি যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছি। এবং আমার কাছে সব নথিপত্র রয়েছে।’’

তালিকায় নাম আছে ওই পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি নিতাই সারের ছেলে পুষ্পরঞ্জন সারেরও। তবে তিনি প্রাথমিকে চাকরি পাননি বলেই খবর। তৃণমূলের নেতা শ্রীপতি দাসের স্ত্রী এবং বিডিও অফিসের অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মীর স্ত্রীর নামও রয়েছে ওই তালিকায়। তাঁরা দু’জনেই এখনও স্কুলে চাকরি করছেন বলেই জানা গিয়েছে।

এরই মধ্যে সিপিএমের তরফেও একটি তালিকা দিয়ে দাবি করা হয়েছে, অখিলের সুপারিশপত্রে নাম থাকা ১০ জনের চাকরি হয়েছে। তার মধ্যে ৪জন রামনগর চক্রে, ৫জন পিছাবনি চক্রে আর একজন দিঘা চক্রের স্কুলে চাকরি করছেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আশিস প্রামাণিক বলেন, "বিধায়কের সুপারিশপত্রে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁরা সকলেই শাসকদলের নেতা এবং সক্রিয় কর্মীদের পরিবারের লোকজন। এঁদের মধ্যে ১০ জন কোথায় স্কুলের নিয়োগপত্র পেয়েছেন তা আমরা জানতে পেরেছি। বাকিদেরও খোঁজ করা হচ্ছে।’’

সরব বিজেপিও। দলের বিধায়ক অরূপ দাস বলছেন, "প্রাথমিকে শিক্ষকতার প্রাথমিক শর্ত টেটে পাশ করা। তবে টেটে পাশ করলেও চাকরি নাও হতে পারে। যোগ্যতা অর্জনের বাকি পরীক্ষার ধাপগুলিতে বিধায়কের সুপারিশপত্রে যাঁদের নাম লেখা রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে কিনা আদালতের যাচাই করে দেখা উচিত।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Contai Akhil Giri Suvendu Adhikari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy