রেলমাফিয়া শ্রীনু নায়ডু খুনের মামলায় সরকারি আইনজীবী বদল হল। এতদিন এই মামলায় সরকারি আইনজীবী হিসেবে সওয়াল করতেন সৈয়দ নাজিম হাবিব। এ বার থেকে সওয়াল করবেন সমরকুমার নায়েক। আদালতের এক সূত্রের দাবি, এটি বিভাগীয় নির্দেশ।
সমরবাবু মেদিনীপুর আদালতেই কর্মরত রয়েছেন।
সম্প্রতি নাজিমের স্ত্রীর কাছে হুমকি ফোন এসেছিল। সব দিক খতিয়ে দেখে সেই প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত বলে ওই সূত্রের অনুমান। মেদিনীপুরের এক প্রবীণ আইনজীবীর কথায়, “এটা নতুন কিছু নয়। নির্দিষ্ট কারণে কোনও মামলায় বিশেষ সরকারি আইনজীবী হিসেবে কাউকে নিযুক্ত করা হয়েই থাকে। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। হুমকি ফোনের একটা অভিযোগ উঠেছিল। মনে হচ্ছে, ওই ঘটনার প্রেক্ষিতেই এই নির্দেশ।”
সম্প্রতি শ্রীনু নায়ডু খুনের মামলার সরকারি আইনজীবী সৈয়দ নাজিম হাবিবের স্ত্রীর কাছে পরপর দু’দিন হুমকি ফোন আসে। যে ঘটনায় শোরগোল পড়ে। উদ্বেগ দেখা দেয় মেদিনীপুরের আইনজীবীদের মধ্যে। প্রথম হুমকি ফোন আসে রাতের বেলায়। সরকারি আইনজীবী সৈয়দ নাজিম হাবিবের অভিযোগ ছিল, রাতে তাঁর স্ত্রীর মোবাইলে ফোন করে কেউ বলে, ‘শ্রীনু খুনে ধৃতদের বিরুদ্ধে সওয়াল করলে ফল ভাল হবে না। এই ফোনের কথা পুলিশকে জানালে ‘ফল আরও খারাপ হবে’ বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। পরে ফোন কেটে দেন স্ত্রী। ফের একদিন বিকেলে তাঁর স্ত্রীর মোবাইলে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়। রাতে কেন তিনি ফোন কেটে দিয়েছিলেন, বিকেলে ফোন করে সেই কৈফিয়তই চাওয়া হয়।
পাশাপাশি, একদিনের ব্যবধানে ওই একই নম্বর থেকে তাঁর স্ত্রীর মোবাইলে মিসড্ কলও করা হয়। ঘটনার পর মেদিনীপুর কোতয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সরকারি আইনজীবী। অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়। হাবিব সাহেবের স্ত্রী দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার এক কলেজের অধ্যাপিকা। হুমকি ফোন আসার বিষয়টি লিখিত ভাবে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনাকে জানান সরকারি আইনজীবী। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আর্জিও জানান তিনি। ঘটনার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গোড়ায় বর্ধমানের কাটোয়া থেকে দু’জন কলেজ পড়ুয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধরা পড়ে ইন্দ্রজিৎ বেরা এবং শেখ হাদিউজ্জামান নামে কাটোয়ার এক বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের দুই পড়ুয়া। ধৃতদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন এবং সিমকার্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়। পরে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জ থেকে মহাদেব মান্না নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, ঘটনার তদন্ত চলছে। আশা করা যায়, দ্রুতই ঘটনার কিনারা হবে। এর মধ্যে শ্রীনু মামলায় সরকারি আইনজীবী বদলের ঘটনায় মেদিনীপুর আদালত চত্বরেও শোরগোল পড়েছে। নানা জল্পনা নিয়ে জোর চর্চা চলছে। শ্রীনু মামলায় এতদিন যিনি সওয়াল করে এসেছেন, সেই সৈয়দ নাজিম হাবিব বিভাগীয় নির্দেশ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy