শ্রীকান্ত মাহাতো। — নিজস্ব চিত্র।
দলের একাধিক নেতা-নেত্রীকে বিঁধে তোপ দাগলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো। সম্প্রতি রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্তর এমনই একটি বক্তব্য ভাইরাল হয়ে উঠেছে। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। শ্রীকান্তর অভিযোগ, উমা সরেন, সন্ধ্যা রায়, মুনমুন সেন, জুন মালিয়া, সায়নী, সায়ন্তিকা, মিমি, নুসরত, নেপাল সিংহ, সন্দীপ সিংহ এবং উত্তরা সিংহের মতো নেতানেত্রী ‘লুটেপুটে’ খাচ্ছেন। এ সত্ত্বেও তাঁদেরকে দল ‘সম্পদ’ বলে মনে করছেন বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। শ্রীকান্তর বক্তব্যে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল। এ হেন মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর শ্রীকান্তকে শোকজও করেছে দল।
আড়াই মিনিটের ওই ভিডিয়োয় শ্রীকান্তকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমাদের কি বাঁচার অধিকার থাকবে না? আমাদের নাগরিকত্ব কি থাকবে না? এটা আমরা বলতে চাই। আজ থেকে পরিকল্পনা করে জয়যাত্রা শুরু করব। আমরা পুলিশ এবং বিডিওর কাছে স্মারকলিপি জমা দেব। আমাদের নাগরিকত্ব, অধিকার বন্ধ করার ব্যবস্থা যদি করে, তা হলে আমরা কী করব? কী করা উচিত? সে জন্য পশ্চিমাঞ্চল নাগরিক সমাজ, পশ্চিমাঞ্চল কৃষক সমাজ, পশ্চিমাঞ্চল বুদ্ধিজীবী সমাজ আমরা তৈরি করব। আমরা মমতা’দি পর্যন্ত যেতে চাই। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থ, সুব্রত বক্সীকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। তাঁরা বুঝতে চাননি। খারাপ লোককেই তাঁরা ভাল লোক বলছেন। তা হলে আমরা বাঁচব কী করে? খারাপ লোককে তো খারাপ লোক বলতে হবে। আর ভাল লোককে ভাল লোক বলতে হবে। ভাল লোকের কথা শুনতে হবে। কিন্তু খারাপ লোকের কথা শুনছে। এখানে যদি দেবাদিদেব মহাদেব, উমা সরেন, সন্ধ্যা রায়, মুনমুন সেন, জুন মালিয়া, সায়নী, সায়ন্তিকা, মিমি, নুসরত, নেপাল সিংহ, সন্দীপ সিংহ, উত্তরা সিংহ যারা লুটে পুটে খাচ্ছে তারা যদি সম্পদ হয়, তা হলে তো দল করা যাবে না। তারা যদি দলের সম্পদ হয়, তারা যদি টাকা ডাকাতি করে শালবনির টাকায়, টাঁকশালে টাকা ছাপায়, তা হলে মন্ত্রী জেলে গেলে ভাল আছে। না হলে লোকে দোষারোপ করে বলবে ওই মন্ত্রীরা সকলে চোর। বলছে তো।’’
এই সূত্রে শ্রীকান্তকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘‘দল চোরদের কথা শুনবে। দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, কলকাতার লোক ডাকাতি করবে। আর আমরা চুপ থাকব। এই মন্ত্রিসভায় থাকব? এটা কি থাকা উচিত হবে? তা হলে আপনাকে পথ দেখতে হবে। না হলে আশ্রমে চলে যেতে হবে। না হলে আপনাকে সামাজিক আন্দোলন করতে হবে।’’
শ্রীকান্তর ওই ভিডিয়োর সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি। তিনি বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন। মন্ত্রী কিছু কথাবার্তা বলেছেন, যা ভিডিয়োর আকারে দলের কাছে পৌঁছেছে। যে কথাবার্তা একটু আপত্তিজনক। সেই জন্য গত কাল দলের নির্দেশে শ্রীকান্ত মাহাতোকে শোকজ করা হয়েছে। আজ উনি জবাবও দিয়েছেন। উনি দুঃখপ্রকাশ করেছেন।’’
শালবনির তিন বারের বিধায়ক শ্রীকান্ত। তাঁর মন্তব্য নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘‘যে কোনও ক্ষেত্রেই এমন দায়িত্ববণ্টনের ঘটনা ঘটলে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে, আবার বিচ্ছিন্ন ভাবে কারও আলাদা বক্তব্যও থাকতে পারে। নেতৃত্ব সব দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেন। দল কোনও সিদ্ধান্ত জানালে তা দলের অনুশাসন এবং শৃঙ্খলার কারণে মেনে নেওয়াটাও রীতি। এটা স্বাভাবিক রীতি। এমন মন্তব্যে ভুল বোঝাবুঝি বাড়তে পারে। দল এই মন্তব্য অনুমোদন করে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy