—প্রতীকী চিত্র।
দলের জেলা সম্পাদকের পদ থেকে ইতিমধ্যে কি ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন সুশান্ত ঘোষ, কিংবা অদূরে এমন কোনও সম্ভাবনা রয়েছে, জল্পনা জেলা সিপিএমের অন্দরেই। সুশান্ত সত্যিই ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করে থাকলে, এর নেপথ্যে ঠিক কী কারণ রয়েছে, তা নিয়েও চর্চা রয়েছে।
সূত্রের খবর, ক’দিন আগেই আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে গিয়েছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক। তাঁকে সেখানে জরুরি ভিত্তিতে ডেকে পাঠানো হয়েছিল কি না, তা নিয়েও চর্চা রয়েছে। এই আবহে, সব ঠিক থাকলে আগামী সোমবার মেদিনীপুরে আসতে পারেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব। ওই দিন এখানে দলের এক কর্মসূচি রয়েছে। তাঁর পদক্ষেপ নিয়ে বিস্তর জল্পনা রয়েছে। সেই জল্পনা জিইয়েও রাখছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুশান্ত। আপনি না কি দলের জেলা সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন, কিংবা অদূরে করতে পারেন? সুশান্তর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘কোথা থেকে শুনলেন এটা? এমন কথা আপনাকে কে বললেন?’’ সত্যিই কি এমন কিছু হয়েছে? সিপিএমের জেলা সম্পাদকের জবাব, ‘‘কিছুই হয়নি এখনও। যখন হবে, তখন নিশ্চয়ই জানতে পারবেন!’’ সুশান্তর ইস্তফা দিতে চাওয়ার ইচ্ছার নেপথ্যে একটি ‘রাজনীতি- বহির্ভূত’ কারণও দলের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে। তবে তা একেবারেই অসমর্থিত সূত্রের খবর। এটি নিয়ে বিশেষ আলোচনা করতে রাজি নন দলীয় নেতৃত্ব। আগামী জানুয়ারির দিকে সিপিএমের জেলা সম্মেলন হওয়ার কথা। চলতি অগস্টের শেষ দিকে দলের রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন রয়েছে। এর আগে জেলা সিপিএমের বৈঠক হতে পারে।
সুশান্ত কি স্বপদেই থাকছেন? সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের জবাব, ‘‘আমরা পার্টির সুশৃঙ্খল সদস্য। পার্টির অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়ে কোনও কথা বাইরে বলি না।’’ যদি সুশান্ত সরে দাঁড়ান, তাহলে দলের পরবর্তী জেলা সম্পাদক কে হবেন, সে নিয়েও জল্পনা রয়েছে। দৌড়ে রয়েছেন তিনজন। বছর আড়াই আগে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিপিএমের ২৪ তম পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্মেলন থেকে দলের জেলা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন সুশান্ত। দীর্ঘ সময় ধরে জেলা সম্পাদক ছিলেন দীপক সরকার। দীপকের অনুগামী হিসেবে সুশান্তর পরিচিতি রয়েছে। একাংশ নেতা মনে করাচ্ছেন, ওই জেলা সম্মেলনে দলের ‘অফিসিয়াল’ প্যানেলে নাম ছিল না সুশান্তর। নাম ছিল তাপস সিংহের। তাপস দলের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। দলের জেলা সম্পাদক নির্বাচন ঘিরে ভোটাভুটি হয়েছিল। ভোটাভুটিতে ৪১ জনের সমর্থন পেয়েছিলেন সুশান্ত। ২১ জনের সমর্থন পেয়েছিলেন তাপস। ৩ জন সমর্থন দেওয়া থেকে বিরত থেকেছিলেন। ভোটাভুটি হয়েছিল হাত তুলেই। জেলা কমিটির একাংশ সদস্যের অবশ্য দাবি, ‘‘ভোটাভুটি হয়নি। ওই সম্মেলনে জেলা সম্পাদক হিসেবে দু’জনের নাম প্রস্তাব আকারে এসেছিল। সর্বসম্মতিক্রমেই সুশান্ত ঘোষ সম্পাদক হয়েছিলেন।’’
এর আগে অবশ্য একাধিক ঘটনা ঘটে গিয়েছিল। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ‘দলবিরোধী কাজে’র অভিযোগে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল প্রাক্তন মন্ত্রী তথা এক সময়ের ‘দাপুটে’ বিধায়ক সুশান্তকে। সে সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে প্রথমে পোর্টালে কলম এবং পরে বই লিখে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র-সহ দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিষোদগারের অভিযোগ উঠেছিল। দলীয়স্তরে কমিশন গড়া হয়েছিল সে অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য। জেলা নেতৃত্বের বড় অংশ সুশান্তের বহিষ্কারই চেয়েছিলেন। কিন্তু রাজ্য নেতৃত্ব শেষ পর্যন্ত গুরুতর শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করেছিলেন। রাজ্যে পালাবদলের পরে বেনাচাপড়া কঙ্কাল-কাণ্ডে নাম জড়িয়েছিল সুশান্তর। এই মামলায় দীর্ঘদিন জেলে ছিলেন তিনি। সেই ২০১১ থেকে গড়বেতা- ছাড়া ছিলেন তিনি। ২০২০ এর ডিসেম্বরে নিজের এলাকায় ফেরেন, দীর্ঘ ৯ বছর পরে। সুপ্রিম কোর্ট তাঁর জামিনের শর্ত থেকে জেলায় ঢোকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরে নিজের এলাকা, চন্দ্রকোনা রোডে ফিরেছিলেন সুশান্ত।
হঠাৎ তাঁর ইস্তফা- জল্পনা কেন? সুশান্তর অনুগামী হিসেবে পরিচিত, জেলা সিপিএমের এক নেতার কথায়, ‘‘ভুলভাল কথা। কারা যে এ সব রটায়, কে জানে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy