দিলীপ ঘোষ। — ফাইল চিত্র।
দিল্লিতে রদবদল। তা নিয়ে বঙ্গ বিজেপিতে জোর জল্পনা। জল্পনার রেশ মেদিনীপুরেও।
বছর দুয়েক আগেই বিজেপির রাজ্য সভাপতির পদ খুইয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। তখন তাঁকে দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি করা হয়েছিল। এ বার সেই পদও হারালেন দিলীপ। তিনি এখন শুধুই মেদিনীপুরের সাংসদ। দলের সাংগঠনিক কোনও দায়িত্বে আর নেই। লোকসভা ভোটের আগে এমন পদক্ষেপে জল্পনা শুরু হয়েছে, ফের লোকসভায় টিকিট পাবেন তো সাংসদ!
তাঁর অনুগামী বলে পরিচিত জেলা বিজেপির একাধিক নেতার অবশ্য দাবি, “দিলীপদা টিকিট পাবেনই। মেদিনীপুর থেকেই আবারও প্রার্থী হতে পারেন।” এই অনুগামীদের ব্যাখ্যা, আগামী বছর লোকসভা ভোটে যাঁরা লড়বেন, তাঁদের নাম রাখা হয়নি জাতীয় কর্মসূচির তালিকায়। যাতে তাঁরা নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে মনোনিবেশ করতে পারেন। কারও কারও আবার অনুমান, দিলীপকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় নেওয়া হতে পারে। কর্মীদের একাংশের আবার অনুমান, পরে রাজ্যের সংগঠনে ফের ফিরিয়ে আনা হতে পারে দিলীপকে।
বিপরীত মতও রয়েছে গেরুয়া শিবিরে। নেতাদের একাংশের ধারণা, এই অপসারণ আসলে ‘শাস্তিমূলক’ পদক্ষেপ। দিলীপকে জাতীয় কর্মসমিতি থেকে ছেঁটে দেওয়া হতে পারে, এই কানাঘুষো ছিলই। কু-কথার জন্য আগেই দিলীপকে সতর্ক করেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু দিলীপ বদলাননি। ক’দিন আগে দিল্লিতে তলব করা হয় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। ঘটনাচক্রে, তার পরই দিলীপের এই অপসারণ। বিজেপির অন্দরে দিলীপ-শুভেন্দু ‘দ্বৈরথ’ নিয়ে নানা সময় জল্পনা হয়। দিলীপের নির্বাচনী এলাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সচরাচর দেখা যায় না শুভেন্দুকে। বরং অরাজনৈতিক কর্মসূচিতে থাকেন।
মেদিনীপুরে বিজেপির নেতা-কর্মীদের মধ্যেও দিলীপ-অনুগামী ও শুভেন্দু-অনুগামীদের বিভাজন রয়েছে। সূত্রের খবর, সাংগঠনিক বৈঠকে তাঁরা পারস্পরিক সুর চড়ান। খড়্গপুর সদরের বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও দিলীপের দূরত্ব রয়েছে। হিরণ আবার শুভেন্দুর ‘কাছের লোক’। তবে মেদিনীপুরে এখনও বিজেপির ‘ক্ষমতাসীন’ নেতৃত্ব দিলীপের অনুগামী বলেই পরিচিত। ফলে, দিলীপের অপসারণের পরে তাঁদের হাতে রাশ আগের মতোই থাকবে কি না, সে প্রশ্নও উঠেছে। দিলীপ অনুগামী জেলা বিজেপির এক নেতা শোনাচ্ছেন, ‘‘আমরা প্রত্যেকেই পার্টির নেতা-কর্মী। দিলীপদা বহু দিন পার্টির জন্য কাজ করেছেন। তার আগে রাহুলদা (রাহুল সিংহ) দিয়েছেন। এখন সুকান্তদা (মজুমদার) দিচ্ছেন। মতের মিল, অমিল থাকতেই পারে। কিন্তু বিরোধ নেই।’’
রাজ্য বিজেপিতে ক্ষমতা খর্ব হওয়ার পর থেকে ক্রমেই নিজেকে নির্বাচনী এলাকার মধ্যে বেঁধে ফেলছিলেন দিলীপ। এ বার পঞ্চায়েত ভোটেও মেদিনীপুর লোকসভার প্রত্যেকটি ব্লকে একাধিকবার গিয়েছেন তিনি। প্রথমে মনোনয়নপর্বে,পরে প্রচারে। গণনার দিনেও ছিলেন কেশিয়াড়িতে। তবে পঞ্চায়েতেও জেলায় ভাল ফল হয়নি বিজেপির। আর তার পরপরই দিলীপের অপসারণ।
কেন এই সিদ্ধান্ত? সদুত্তর এড়িয়ে বিজেপির রাজ্য নেতা তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, "কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত। এ নিয়ে আমাদের কিছু বলার থাকতে পারে না।" রাজ্য বিজেপির আর এক নেতার জবাব, "দিলীপদার জন্য নিশ্চয়ই ভাল কিছু অপেক্ষা করছে।" আর তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতির কটাক্ষ, "শুনছি না কি ওঁকে মন্ত্রী করা হবে। কুকথা এ বার কোথায় পৌঁছবে, ভেবেই চিন্তা হচ্ছে।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy