প্রস্তুত: মেদিনীপুর কলেজ-কলেজিয়েট মাঠে। নিজস্ব চিত্র ।
নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‘লড়াইয়ের মাঠে দেখা হবে।’’ সে মাঠ যে মেদিনীপুরের কলেজ-কলেজিয়েট স্কুলের মাঠ, তা অবশ্য তখন জানা ছিল না।
আজ, শনিবার মেদিনীপুরের এই মাঠে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের জনসভা রয়েছে। সব ঠিকঠাক থাকলে আজই শাহের হাত ধরে বিজেপিতে যোগদান করবেন শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর নতুন ইনিংস শুরু করা প্রায় নিশ্চিত। তাঁর সঙ্গে বিজেপিতে যোগদান করবেন শুভেন্দু-অনুগামী বলে পরিচিত দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং অন্য জেলার বেশ কয়েকজন নেতাও। শাহের সভা যে আদতে ‘যোগদান মেলা’ হতে চলেছে তা বিজেপি নেতৃত্বের কথাতেও স্পষ্ট। প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে শুক্রবার সভাস্থলে এসেছিলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘অনেকেরই যোগদান করার কথা। তাসের ঘরের মতো ভাঙতে শুরু করেছে তৃণমূল।’’ কে কে দলে আসছেন? সদুত্তর এড়িয়ে লকেটের জবাব, ‘‘নামগুলি সভার দিনের জন্যই তোলা থাক। তবে শনিবার চমক থাকবে। আগামী দিনেও চমকের পর চমক নিশ্চয়ই থাকবে।’’
শুক্রবার থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূলের পদত্যাগপর্ব শুরু হয়েছে। এদিন তৃণমূলের সঙ্গে পাকাপাকিভাবে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন প্রণব বসু, স্নেহাশিস ভৌমিকরা। প্রণব মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধান। এক সময়ে অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে দলের জেলা সভাপতি ছিলেন। প্রণব মানছেন, ‘‘তৃণমূলের সদস্যপদ ছেড়েছি। শনিবার মেদিনীপুরের সভায় গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেব।’’ শোনা যাচ্ছে, জেলা পরিষদ সদস্য অমূল্য মাইতি, তপন দত্ত, রমাপ্রসাদ গিরি, দুলাল মণ্ডলের মতো শুভেন্দু-অনুগামীরাও শাহের সভায় এসে বিজেপিতে যোগ দেবেন।
তবে সম্ভাব্য ‘দলবদলু’র তালিকায় কে কে রয়েছেন, তা পরখ করে নেওয়ার চেষ্টা করেছে তৃণমূলও। দলীয় সূত্রে খবর, কম সময়ের নোটিসে বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে দলের জেলা কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সদস্যদের হাজিরা দেখা হয়। দেখা গিয়েছে, জেলা কমিটির ১৬৫ জনের মধ্যে বৈঠকে এসেছেন ১৪৮ জন। অর্থাৎ, হাজিরা ছিল প্রায় ৯০ শতাংশ। প্রত্যাশিতভাবে গরহাজির ছিলেন প্রণব, অমূল্যের মতো শুভেন্দু-অনুগামীরা। বিধায়কদের সকলে অবশ্য বৈঠকে এসেছিলেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘দু’-চারজন নেতা দল ছাড়তে পারেন। কর্মী-সমর্থকেরা কেউ দল ছাড়বেন না। যে নেতারা দল ছাড়ছেন, তারা নিজেদের স্বার্থের জন্যই দল ছাড়ছেন।’’ আর তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান দীনেন রায়ের দাবি, ‘‘এক- দু’জন নেতা দল ছেড়ে গেলেও দলের কোনও ক্ষতি হবে না। মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছেন।’’
সভা ঘিরে মেদিনীপুর জুড়ে শুক্রবার দিনভর ছিল সাজ সাজ রব। গেরুয়া পতাকায় ছয়লাপ শহরের চারপাশ। বছর দুয়েক আগে মেদিনীপুরের কলেজ- কলেজিয়েট স্কুল মাঠেই জনসভা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। স্মৃতি উস্কে লকেট বলেন, ‘‘এই মাঠে আমাদের ঐতিহাসিক সভা আগেও হয়েছে। শনিবারও ঐতিহাসিক সভা হবে। ’’
সভায় দু’টি মঞ্চ হচ্ছে। একটি মঞ্চে থাকবেন শাহ-সহ দলের কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য নেতৃত্ব। অন্য জেলা নেতৃত্ব। আর দীর্ঘ কয়েক মাস পর, সম্ভবত আজই ফের রাজনৈতিক মঞ্চে দেখা যাবে মেদিনীপুরের ‘ভূমিপুত্র’ শুভেন্দুকে। যে রাজনীতির মঞ্চে দেখা হওয়ার কথা নন্দীগ্রামের মাটি থেকে তিনি আগেই ঘোষণা করেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy