Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
Jhargram

১৯৫ বছরের পুজোয় ছেদ পড়েনি কখনও

ঐতিহ্যের পুজো কখনও থেমে থাকেনি। তা সে পূর্ববঙ্গের বানভাসি পরিস্থিতি হোক, কিংবা জঙ্গলমহলের মাওবাদী সন্ত্রাস অথবা করোনার করাল কোপ! সেন পরিবারের এই পুজোয় আড়ম্বর নেই।

প্রতিপদে চণ্ডীর ঘটে দেবীর আবাহন সেন বাড়ির পুজোয়।

প্রতিপদে চণ্ডীর ঘটে দেবীর আবাহন সেন বাড়ির পুজোয়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:১২
Share: Save:

মহালয়ার পরদিন দেবীপক্ষের প্রতিপদে চণ্ডীর ঘট বসিয়ে ৩৭ নৈবেদ্যের উপাচার দিয়ে শুরু হয় দেবীর পুজো। ১২৩৫ বঙ্গাব্দে পূর্ববঙ্গের ময়মনসিংহের আকুয়াপাড়ায় পুজোটি শুরু করেছিলেন ভূস্বামী রামরতন সেনশর্মা। সেই পুজো ঠাঁইনাড়া হয় দেশভাগের পরে। রামরতনের উত্তরসূরিরা চলে আসেন ঝাড়গ্রাম শহরে। পূর্ববঙ্গে পুজো হতো একচালার প্রতিমায়। পঞ্চাশের দশকের গোড়ায় ঝাড়গ্রামে পুজো শুরু হয় ঘটে। প্রায় ছয় দশক পরে ২০১৩ সাল থেকে ফের একচালার মূর্তি গড়ে পুজোটি হচ্ছে। এবার সেই পুজোর ১৯৫ তম বর্ষ।

ঐতিহ্যের পুজো কখনও থেমে থাকেনি। তা সে পূর্ববঙ্গের বানভাসি পরিস্থিতি হোক, কিংবা জঙ্গলমহলের মাওবাদী সন্ত্রাস অথবা করোনার করাল কোপ! সেন পরিবারের এই পুজোয় আড়ম্বর নেই। তবে রয়েছে সাবেকিয়ানাকে বজায় রাখার আন্তরিক প্রচেষ্টা। সেন পরিবার সূত্রে জানা গেল, রামরতনের নাতি প্রবোধকুমার সেন ছিলেন ময়মনসিংহের রাজ এস্টেটের ম্যানেজার। ঝাড়গ্রামে সেন পরিবারের বেশ কিছু জমিজমা ও বিষয় সম্পত্তি ছিল। দেশভাগের পরে প্রবোধ সপরিবারে চলে আসেন ঝাড়গ্রামের বাছুরডোবায়। ১৯৫২ সাল পর্যন্ত পরিবারের শরিকরা পূর্ববঙ্গে দুর্গাপুজো করেছিলেন। ১৯৫৩ সালে প্রবোধের উদ্যোগে ঝাড়গ্রামের বাড়িতে শুরু হয় দুর্গাপুজো। এখন পুজোর দায়িত্বে রয়েছেন প্রয়াত প্রবোধের দুই ছেলে ৮৫ বছরের সুবোধ সেন এবং সত্তর ছুঁই ছুঁই বরুণকুমার সেন।

বরুণের ছেলে পেশায় কলেজ শিক্ষক দেবব্রত সেন বলছেন, ‘‘১৯৫ বছরে দুই বাংলার নানা দুর্যোগে কখনও পুজোয় ছেদ পড়েনি। মহালয়ার আগের দিন থেকেই দশমী পর্যন্ত পরিবারের সকলেই নিরামিষ আহার গ্রহণ করেন।’’ পূজারী জ্ঞানেন্দ্র ভট্টাচার্য ও সুদর্শন ভট্টাচার্য জানালেন, সেন পরিবারের সাবেক রীতি অনুযায়ী দেবীপক্ষের প্রতিপদকল্পে বাড়ির একটি ঘরে চণ্ডীর ঘট বসিয়ে শাস্ত্রীয় মতে ৩৭ নৈবেদ্যের উপাচারে পুজো শুরু হয়। ওই দিন বাড়ির দুর্গামন্দিরে দেবীর চক্ষুদান হয়। প্রতিপদকল্প থেকে নবমী পর্যন্ত চণ্ডীপাঠ হয়। মহাসপ্তমীর সকালে চণ্ডীর ঘট নিয়ে আসা হয় দুর্গামন্দিরে মৃন্ময়ী প্রতিমার সামনে। সপ্তমী থেকে নবমী তিনদিনই দেবীর নিরামিষ অন্নভোগ হয়। এমনকি সন্ধিপুজোতেও চামুণ্ডার নিরামিষ ভোগ হয়।

ঘট বিসর্জন হলে মঙ্গল কামনার পাশাপাশি যৌথ পরিবারের বন্ধন আরও দৃঢ় করার বার্তাবাহী প্রশন্তি বন্ধনের আশীর্বাদী থালা সবার কপালে ঠেকিয়ে মঙ্গল কামনা করেন পূজারী।

অন্য বিষয়গুলি:

Jhargram Durga Puja 2022
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy