Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
শিশু শ্রমিক থেকে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু— কী হাল এদের স্কুলের। খোঁজ নিল আনন্দবাজার।  
Education

Special schools: বিশেষ স্কুলও সঙ্কটে, পিছিয়ে পড়ছে পড়ুয়ারা     

অভিযোগ, জেলার বিভিন্ন শ্রবণ, দৃষ্টিহীন, মানসিক প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ স্কুলের অধিকাংশতেই পড়াশোনা এখনও  শুরু হয়নি।   

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:৩৬
Share: Save:

নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খুলেছে পুজোর পরে। চলছে স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা। রাজ্য-সহ জেলার সর্বত্র একই ছবি দেখা গেলেও ব্যতিক্রম বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু এবং প্রতিবন্ধীদের স্কুলে। অভিযোগ, জেলার বিভিন্ন শ্রবণ, দৃষ্টিহীন, মানসিক প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ স্কুলের অধিকাংশতেই পড়াশোনা এখনও শুরু হয়নি।

পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক, ময়না, হলদিয়া ও কাঁথি এলাকায় সাতটি ‘স্পেশাল স্কুল’ রয়েছে। এর মধ্যে কাঁথির দু’টি, হলদিয়ার দু’টি, তমলুকের নিমতৌড়ির একটি এবং ময়নার একটি স্কুল রাজ্য সরকারের জনশিক্ষা দফতরের অধীনে রয়েছে। আর কেন্দ্রীয় সরকারের সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ণ মন্ত্রকের অধীনে ‘দীনদয়াল উপাধ্যায় প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন প্রকল্পে’ নিমতৌড়িতে তমলুক উন্নয়ণ সমিতির পরিচালনায় শ্রবন ও দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের একটি স্পেশাল স্কুল রয়েছে। অভিযোগ, সরকারি নির্দেশিকা না পাওয়ায় জনশিক্ষা প্রসার দফতরের অধীনে থাকা জেলার ছ’টি ‘স্পেশাল স্কুলে’ পড়ুয়াদের এখনও ক্লাস চালু হয়নি।

ওই সব স্কুলগুলিতে কয়েকশো প্রতিবন্ধী পড়ুয়া রয়েছে। যারা শ্রবণ শক্তিহীন, এবং মানসিক প্রতিবন্ধী। অধিকাংশ পড়ুয়াই স্কুলের হস্টেলে থেকে পড়াশোনা করত। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে গত বছর ১৬ মার্চ থেকে স্কুল বন্ধ থাকায় পড়ুয়াদের বেশির ভাগই নিজেদের বাড়ি ফিরে গিয়েছে। আর সেই সময় থেকেই এই সমস্ত পড়ুয়াদের পড়াশোনাও প্রায় বন্ধ রয়েছে।

হলদিয়ার বাড় বাসুদেবপুরে শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের জন্য যে স্কুল রয়েছে (শ্রুতি) সেখানে ১০৮ জন পড়ুয়ার প্রাক-প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা চলে। পূর্ব মেদিনীপুর ছাড়াও হাওড়া, পুরুলিয়া, নদিয়া, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ছাত্রছাত্রীরা সেখানে পড়ে। ক্লাস বন্ধ থাকায় তাদের সবাই এখন নিজেদের বাড়িতে রয়েছে। স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা লগ্ন থেকে জড়িয়ে থাকা পান্নালাল দাস বলেন, ‘‘১৯৯৩ সাল থেকে স্কুল শুরুর পরে ২০০০ সালে সরকারি অনুমোদন পায়। স্কুলে পড়াশোনা ছেলে-মেয়েদের সাইন ল্যাঙ্গুয়েজের মাধ্যমে পড়াশোনা চলে। পড়ুয়াদের জন্য শ্রবণযন্ত্র দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জন্য স্কুল বন্ধ থাকায় ক্লাস হচ্ছেনা। অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীদের স্মার্টফোন না থাকায় অনলাইনেও পড়াশোনা হচ্ছে না।’’ পান্নালাল জানাচ্ছেন, গত দু’বছরে শ্রবণ প্রতিবন্ধী ছেলে-মেয়েদের হিয়ারিং এড দেওয়ার শিবিরও হয়নি। এদিকে, অনেকেই পুরনো যন্ত্র খারাপ হয়েছে। ফলে খুবই সমস্যার মধ্যে পড়েছে ওই পড়ুয়া।

তমলুকের নিমতৌড়িতে কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের অনুমোদিত একটি স্পেশাল স্কুলে শ্রবণ ও দৃষ্টিহীন মিলিয়ে ৮৮ জন পড়ুয়া রয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা হয়। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় পুজোর পর থেকেই স্কুলে পড়ুয়াদের ক্লাস শুরু হয়েছে। কিন্তু প্রায় তিনবছর ওই স্কুলে সরকারি অর্থ সাহায্য আসেনি বলে জানাচ্ছেন স্কুলের পরিচালনায় থাকায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা যোগেশ সামন্ত।

যোগেশের কথায়, ‘‘২০০৬ সাল থেকে স্কুল চলছে। পুজোর পর থেকেই ফের স্কুল চালু করা হয়েছে। কিন্তু গত তিন বছর ধরে সরকারি অর্থ সাহায্য না আসায় শিক্ষক-শিক্ষিকা-অশিক্ষক কর্মীদের বেতন ও পড়ুয়াদের থাকা-খাওয়ার খরচ চালাতে ঋণ করতে হয়েছে। প্রায় ৮৬ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে।’’ সরকারিভাবে অর্থ বরাদ্দের জন্য জেলা সমাজ কল্যাণ দফতর সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার আবেদন জানানো হয়েছে বলে জানাচ্ছেন যোগেশ। যদিও এ ব্যাপারে জেলা সমাজ কল্যাণ অধিকারিক পূর্ণেন্দু পৌরাণিক বলছেন, ‘‘ওই স্কুল আর্থিক সাহায্য পাওয়ার জন্য আমাদের তরফে যা সাহায্য করার প্রয়োজন তা করা হয়েছে। কেন এখনও অর্থ পাননি তা জানা নেই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Education Special Child
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE