বৃক্ষছায়ে: ঘাটাল মহকুমা আদালতে গাছতলাই ভরসা। নিজস্ব চিত্র
কেউ গাছতলায় দাঁড়িয়ে, আবার কেউ বসে কাছের চায়ের দোকানের বেঞ্চে। মামলার কাজে প্রতিদিনই বহু লোক আসেন ঘাটাল মহকুমা আদালতে। যদিও বসার জায়গা না থাকায় সমস্যায় পড়েন আদালতে আসা লোকেরা। নেই শৌচাগার ও পানীয় জলের বন্দোবস্তও।
শুধু বসার জায়গা বা শৌচাগার নয়, আদালত চত্বরে নেই-এর তালিকাটা আরও দীর্ঘ। স্ট্যান্ড না থাকায় আদালতের মূল গেটের প্রবেশপথের সামনেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে সাইকেল। এসিজেএম আদালতের সামনে সার সার দিয়ে দাঁড় করানো থাকে বাইক, গাড়িও। আইনজীবী, সাক্ষী থেকে বিচারপ্রার্থীদের স্বচ্ছন্দে কথা বলার জন্য নেই কোনও ঘরের ব্যবস্থাও। আইনজীবী ও মুহুরিদের বসারও পর্যাপ্ত জায়গা নেই।
ঘাটাল মহকুমা আদালত তৈরি হয় ব্রিটিশ আমলে। এখানে বর্তমানে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত, সিভিল জাজ (সিনিয়র ডিভিশন), এসিজেএম, সিভিল জাজ (জুনিয়র ডিভিশন), জেএম-সহ মোট ছ’টি আদালত রয়েছে। এ ছাড়া লোক আদালতও রয়েছে। সাক্ষী, বিচারপ্রার্থী-সহ বিভিন্ন মামলার কাজে প্রতিদিন গড়ে ৪০০-৫০০ লোক আদালতে আসেন।
বসার শেড না থাকায় গরমে ও বর্ষায় সমস্যা আরও বাড়ে। গত বছর ঘাটাল আদালতে একটি মামলায় সাক্ষ্য দিতে এসে চড়া রোদ সহ্য করতে না পেরে একজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। আর বৃষ্টি হলে তো কাকভেজা হয়েই ফিরতে হয় আদালতে আসা লোকেদের।
বার অ্যাসোশিয়েশন সূত্রে খবর, আদালতে আইনজীবীর সংখ্যাও প্রায় একশোর কাছাকাছি। বাড়ছে মহিলা আইনজীবীর সংখ্যাও। বসার ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যায় পড়েন আদালতের আইনজীবী ও মহুরিরা। এক আইনজীবী সমীর ঘোষের কথায়, “কোনও মক্কেলের সঙ্গে জরুরি কোনও আলোচনা থাকলেই সমস্যায় পড়তে হয়। কোথায় আলোচনা করব, জায়গাই তো নেই।”
ঘাটাল আদালতের প্রবীণ আইনজীবী বিশ্বনাথ রায়ের বক্তব্য, “অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে নানা সমস্যা নিয়ে বহুবার কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কিন্তু এখনও কাজ শুরু হয়নি।” আদালতের এক সিনিয়র আইনজীবী তপন রায়ও বলছেন, “দিনে দিনে ঘাটাল আদালতে মামলার চাপ বাড়ছে। স্বাভাবিকভাবেই সাক্ষী ও বিচারপ্রার্থীদের আনাগোনাও বেশি। যদিও আদালত চত্বরের পরিকাঠামোর মান উন্নত হয়নি।” আইনজীবীদের তৃণমূল ‘ল’ সেলের ঘাটাল শাখার সম্পাদক দিলীপ দাস বলেন, “পরিকাঠামোর অভাবে সত্যিই সমস্যা বাড়ছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে আদালত সংস্কারের দাবি জানানো হয়েছে।”
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, আদালতের পরিকাঠামো দেখভাল করে পূর্ত দফতর। দফতরের জেলার নির্বাহী বাস্তুকার প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা প্রস্তাব পাঠিয়েছি। টাকা বরাদ্দ হলেই কাজ শুরু হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy