Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

উঠে যাচ্ছে স্কুল, চিন্তায় অভিভাবক-শিক্ষকেরা

হলদিয়া থেকে বিদায় নিতে চলেছে ঐতিহ্যবাহী সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল। ২০১৮ সালের জুন মাসের পর এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে স্কুল সূত্রে জানানো হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৭ ০১:৩৯
Share: Save:

হলদিয়া থেকে বিদায় নিতে চলেছে ঐতিহ্যবাহী সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল। ২০১৮ সালের জুন মাসের পর এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে স্কুল সূত্রে জানানো হয়েছে।

এর কারণ হিসাবে সেন্ট জেভিয়ার্স-এর প্রিন্সিপাল অজয়কুমার এক্কা বলেন, ‘‘স্কুল পরিচালনার জন্য দায়িত্বে থাকেন জেসুইট (খ্রিস্টান যাজক বা ফাদার)। একটি স্কুলে ন্যূনতম তিনজন জেসুইট থাকেন। অথচ স্কুলে বর্তমানে রয়েছেন মাত্র দু’জন। তাও একজন অবসরপ্রাপ্ত। নিয়মমতো তিনি প্রশাসন দেখতে পারেন না। প্রশাসনিক সমস্যার কারণে বাধ্য হয়েই আমাদের যেতে হচ্ছে।’’

স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকেরা। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তাঁরা। ‘সেভ এডুকেশন, সেভ সেন্ট জেভিয়ার্স’ নামে একটি কমিটিও তৈরি করেছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে সমাধান সূত্রে মেলেনি। প্রয়োজনে তাঁরা বৃহত্তরে আন্দোলনে নামবেন বলে জানিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ১৯৭১ সালে নতুন শিল্পনগরী হিসেবে হলদিয়ার আত্মপ্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে হলদিয়ায় বসবাস বাড়ে। এখানকার ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য ভাল স্কুলের কথা মাথায় রেখে হলদিয়া বন্দর সংস্থা ও ইন্ডিয়ান অয়েল রিফাইনারি কর্তৃপক্ষ গড়ে তোলেন ইংরেজি ও বাংলা মাধ্যমের একটি স্কুল। স্কুল পরিচালনার জন্য আমন্ত্রণ করা হয় জেসুইটদের। তাঁদের হাত ধরেই হলদিয়ায় সেন্ট জেভিয়ার্স শিক্ষাক্ষেত্রে একটি উজ্জ্বল নাম হয়ে উঠেছিল। এখন সেন্ট জেভিয়ার্স কর্তৃপক্ষ বিদায় নেওয়ার কথা জানানোয় বিকল্প একটি বেসরকারি স্কুলকে আমন্ত্রণ করা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন স্কুলের স্পনসর হলদিয়া বন্দর ও হলদিয়া রিফাইনারি কর্তৃপক্ষ।

‘সেভ এডুকেশন, সেভ সেন্ট জেভিয়ার্স’ কমিটির আহ্বায়ক দেবাশিস দাশ বলেন, ‘‘২৬০০ ছাত্রছাত্রী এই স্কুলে পড়ে। স্কুল চলে গেলে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অভিভাবকেরা চিন্তিত। স্কুল যাতে না চলে যায় সে জন্য বন্দর সংস্থা ও ইন্ডিয়ান অয়েল রিফাইনারির কাছেআবেদন জানিয়েছি।’’

কমিটির সম্পাদক অসিত শতপথি বলেন, ‘‘সেন্ট জেভিয়ার্স-এর বেতন তুলনামূলক কম ছিল। মধ্যবিত্ত পরিবারের ছাত্রছাত্রীরাও পড়াশোনা করতে পারতেন। কিন্তু বিকল্প হিসেবে যে স্কুল আসবে তার বেতন কাঠামো কী হবে তা নিয়ে আমরা চিন্তিত।’’ মৌসুমী বাগ নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘‘আমরা চিন্তায় রয়েছি। কারণ প্রশ্নটা ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে।’’

সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলের প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত হলদিয়া বন্দরের সিনিয়র ডেপুটি ম্যানেজার (ফিনান্স) অভিজিৎ গুপ্তর আশ্বাস, এত ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক–শিক্ষিকাদের কথা মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত হবে। কিন্তু কী হবে সেন্ট জেভিয়ার্স এর শিক্ষক–শিক্ষিকাদের? তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন তাঁরা। এই অবস্থায় কাজ হারানোর আশঙ্কা করছেন অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা।

অন্য বিষয়গুলি:

School Guardians Close
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE