খিদের জ্বালায়
কোথায় রাখা হবে মিড ডে মিলের চাল। চিন্তায় ঘুম উড়ে যাওয়ার জোগাড় জারুলিয়া গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের।
চিন্তার কারণ গজরাজ। আগে চাল থাকত স্কুলের স্টোররুমে। তার দরজা ভেঙে চাল খেয়েছিল হাতি। এ বার চাল রাখা হয়েছিল শ্রেণিকক্ষে। বৃহস্পতিবার ভোরে সেখানেও পৌঁছে গেল একটি রেসিডেন্ট হাতি। ভাঙল স্কুলের ভবনের একাংশ। এ বার অবশ্য আর চাল খাওয়া হয়নি। গ্রামবাসীদের তাড়ায় পালিয়ে গিয়েছে হাতিটি।
ঝাড়গ্রাম শহর লাগোয়া জঙ্গলে দীর্ঘদিন ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছে নিঃসঙ্গ রেসিডেন্ট হাতিটি। একটু খুঁড়িয়ে চলে বলে বাসিন্দারা নাম দিয়েছেন খড়ু। প্রায়ই সে ঝাড়গ্রাম-লোধাশুলি রাজ্য সড়কে উঠে পড়ে। রাতে হোক বা দিন। খিদে পেলেই লোকালয়েও ঢুকে পড়ে। যেমন এ দিন ভোর পৌনে চারটে নাগাদ আস্তাশুলির জঙ্গলের দিক থেকে জারুলিয়া গ্রামে ঢুকে পড়ে খড়ু। পাঁচিল ঘেরা স্কুলের সামনে গিয়ে শুঁড় দিয়ে গ্রিলের দরজা উপড়ে ফেলে। গ্রামবাসীরা জানান, খড়ু দরজা ভেঙে স্কুল চত্বরে ঢুকে প্রথমে মিড ডে মিলের চাল রাখার মজুত ঘরের দিকে গিয়েছিল। তারপর থমকে দাঁড়িয়ে সে শুঁড় তুলে যেন কিছু বোঝার চেষ্টা করে। এরপরে স্কুল ভবনের দিকে যায় সে। শুঁড় দিয়ে বারন্দার গ্রিল উপড়ে ফেলে। স্কুলের বারন্দার দু’টি গ্রিলের দরজাও বাঁকিয়ে খুলে ফেলে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে হাতিটি। বারান্দা দিয়ে ঢুকলে স্কুলের পরপর চারটি শ্রেণিকক্ষে। এই খড়ুর জন্যই চাল রাখার জায়গা পরিবর্তন হয়েছে। চালের বস্তা ছিল চতুর্থ শ্রেণির কক্ষে। ওই শ্রেণিকক্ষের কাঠের দরজাটি ভাঙার আগেই রে-রে করে ছুটে আসেন গ্রামবাসীরা। তাড়া খেয়ে খড়ু স্কুল প্রাঙ্গণ ছেড়ে বেরিয়ে সিমলির জঙ্গলের দিকে পালিয়ে যায়।
জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর, ২০১৯
ঝাড়গ্রাম জেলায় চালের খোঁজে হাতির হানা
• প্রাথমিক স্কুল ৮টি • অঙ্গনওয়াড়ি ৪ • শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে ২
হাতিদের ঘ্রাণশক্তি প্রখর। তাই চালের গন্ধ চাপা দেওয়ার জন্য স্কুল চত্বরের চারপাশে ব্লিচিং বা ফিনাইল অথবা ওই জাতীয় উগ্র গন্ধদ্রব্য ছড়িয়ে রাখলে হাতি সহজে চালের গন্ধ পাবে না।
সমীর মজুমদার (প্রাক্তন বনকর্তা)
তথ্য: ঝাড়গ্রাম জেলা বন দফতর
স্কুলের টিচার ইনচার্জ নোটন বেরা বলেন, ‘‘গত ১০ জুলাই স্কুলের মিড মিলের স্টোর রুমের দরজা ভেঙে চাল খেয়েছিল হাতি। এখনও স্টোর দরজা মেরামতের জন্য ক্ষতিপূরণ পাইনি। তাই চাল রাখা হয়েছিল ক্লাসে। কিন্তু ফের স্কুলে হানা দিয়ে হাতিটি যে ভাবে ক্ষতি করল চালের বস্তা কোথায় রাখব বুঝতে পারছি না।’’ ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হলেইচ্চির আশ্বাস, ‘‘ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেখে স্কুলকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy