শরৎচন্দ্রের সেই মূর্তি। নিজস্ব চিত্র
অরণ্যশহরে অনাদরে পড়ে রয়েছেন কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে ঘিরে বসেন হকার। আশেপাশে ঝোলানো থাকে শাড়ি-গামছা। মূর্তিটি পরিষ্কারও করা হয় না।
ঝাড়গ্রাম শহরে বর্ধিত জুবিলি মার্কেটে প্রবেশের মুখে কোর্ট রোডের ধারে রয়েছে কথাশিল্পীর আবক্ষ মূর্তিটি। ১৯৭৬ সালে শরৎচন্দ্রের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর অর্থ সাহায্যে তৎকালীন মহকুমাশাসক শ্যামাপদ নন্দীর প্রচেষ্টায় পূর্ত দফতরের জায়গায় মূর্তিটি বসানো হয়েছিল। পরবর্তী কালে ১৯৮৩ সালে তৎকালীন অবিভক্ত মেদিনীপুরের জেলাশাসক দীপক ঘোষ মূর্তিটির আনুষ্ঠানিক আবরণ উন্মোচন করেছিলেন। যখন মূর্তিটি বসেছিল, তখন ঝাড়গ্রাম ছিল পঞ্চায়েত এলাকা। ১৯৮২ সালে পুর-শহর হয় ঝাড়গ্রাম। কিন্তু ৩৭ বছর পরেও মূর্তিটি পুরসভাকে হস্তান্তর করেনি পূর্ত দফতর। ফলে, মূর্তিটি পরিষ্কারও করা হয় না। সেখানে হয় না কোনও বার্ষিক স্মরণ-অনুষ্ঠান। মূর্তির চারপাশে জবরদখল করে বসছেন হকাররা। পর্যটন শহর ঝাড়গ্রামে শরৎচন্দ্রের মূর্তিটির যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের দাবিতে সম্প্রতি পুর-কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছে বামেরা। ঝাড়গ্রামের প্রাক্তন পুরপ্রধান সিপিএম নেতা প্রদীপ সরকার বলেন, ‘‘পূর্ত দফতর ওই মূর্তিটি পুরসভাকে হস্তান্তর না করায় কার্যত অবহেলায় অনাদরে রয়েছেন কথাশিল্পী। এ ভাবে শরৎচন্দ্রের মূর্তিটির অনাদর খুবই দৃষ্টিকটূ।’’
ঝাড়গ্রামের সাহিত্যের আড্ডার সম্পাদক বংশী প্রতিহার জানালেন, হকার বসায় আড়াল থাকায় শরৎচন্দ্রের মূর্তিটি দেখাই যায় না। প্রশাসনিক মহলে কয়েক বছর আগে শহরের কবি-সাহিত্যিকরা স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। তাঁদের দাবি ছিল, মূর্তিটির চারপাশ ফাঁকা করে সেটিকে সর্বসাধারণের দৃষ্টিগোচর করা হোক। কিন্তু সেই কাজ হয়নি।
আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর শরৎচন্দ্রের ১৪৩ তম জন্মবার্ষিকী। তার আগে মূর্তিটিকে উপযুক্ত মর্যাদা দিয়ে সর্বসাধারণের নজরে আনার দাবি করেছেন শহরের বিশিষ্টজনেরা। ঝাড়গ্রামের বর্ষীয়ান সাহিত্যিক ললিতমোহন মাহাতো বলেন, ‘‘শরৎচন্দ্রের মূর্তি ঘিরে হকাররা বসছেন। আশেপাশে আবর্জনা ফেলা হয়। মূর্তির চারপাশে সৌন্দর্যায়ন করে এলাকাটিকে ‘কথাশিল্পী মোড়’ অথবা ‘শরৎচন্দ্র মোড়’ নামকরণ করার বিষয়ে পুরসভা ভেবে দেখুক।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শরৎচন্দ্রের মূর্তিটি নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য পুরসভা পদক্ষেপ শুরু করেছে। পুর-প্রশাসক তথা ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক সুবর্ণ রায় বলেন, ‘‘শরৎচন্দ্রের মূর্তিটির চারপাশে সৌন্দর্যায়ন করা হবে। ওই চত্বরের নতুন নামকরণের বিষয়েও ভাবা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy