আক্রান্ত: দুষ্কৃতীদের হামলার চিহ্ন। —নিজস্ব চিত্র।
ধাওয়া করে গাড়ি আটকে চার ধান ব্যবসায়ীর গলায় বন্দুক ঠেকিয়ে ও ভোজালির আঘাত করে লক্ষাধিক টাকা লুঠের অভিযোগ উঠল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। আহত দুই ব্যবসায়ী। সোমবার রাতে তমলুক থানার রাধামণি বাজারের কাছে হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে এই ঘটনায় দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ধান ব্যবসায়ীদের গাড়ি আটকে তাঁদের থেকে কয়েক লক্ষ টাকা লুঠের অভিযোগ এসেছে। দুষ্কৃতীদের ধরতে তল্লাশি চলছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর থানার প্রতাপদিঘি, কালীরবাজার, আড়গোয়াল, ভৈরবদাঁড়ির চার ধান ব্যবসায়ী অজয় মান্না, চৈতন্য খাটুয়া, নন্দদুলাল জানা ও লক্ষ্মীকান্ত জানা সোমবার ট্যাক্সি করে উত্তর চব্বিশ পরগনার হাবরা বাজারে গিয়েছিলেন। সেখানে ধান বিক্রির টাকা নিয়ে ফের ওই গাড়িতেই রাত ১০টা নাগাদ বাড়ির দিকে রওনা হন তাঁরা। রাত ১২টা নাগাদ কোলাঘাটের মেচেদা বাজারের কাছে হলদিয়া-মেচেদা জাতীয় সড়কের ধারে একটি হোটেলে খাওয়া দাওয়া করেন। রাত একটা নাগাদ হোটেল থেকে বেরিয়ে ওই সড়ক ধরে নন্দকুমারের দিকে যাচ্ছিলেন। গাড়ির মালিক ও ব্যবসায়ী অজয়বাবু বলেন, ‘‘সওয়া ১ টা নাগাদ তমলুকের রাধামণি বাজারের কাছে গাড়ির পিছনে আসা অন্য একটি ট্যাক্সি আচমকা গতি বাড়িয়ে এগিয়ে আমাদের পথ আটকায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই গাড়ি থেকে ৫-৬ জন সশস্ত্র দুষ্কৃতী নেমে ভোজালি দিয়ে আমাদের গাড়ির দু’দিকের দরজার কাচ ভেঙে দায়। তারপর আমাদের গলায় বন্দুক ও ভোজালি ঠেকিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে টাকার ব্যাগ দিতে বলে।’’ তিনি জানান, রাজি না হওয়ায় দুষ্কৃতীরা তাঁর ডান হাতে ও পেটে ভোজালির আঘাত করে। আর এক ব্যবসায়ী চৈতন্য খাটুয়ার বাঁ পায়ে ভোজালি দিয়ে আঘাত করে। আঘাতের চোটে তাঁরা বেসামাল হয়ে পড়লে দুষ্কৃতীরা টাকার ব্যাগ নিয়ে গাড়িতে উঠে হলদিয়ার দিকে পালিয়ে যায়।
অজয়বাবু বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের সকলেরই মুখে কাপড় বাঁধা ছিল। দু’জনের কাছে বন্দুক ও বাকিদের হাতে ভোজালি ছিল।’’ তাঁর দাবি, ব্যাগে ৩৪ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা ছিল। দুষ্কৃতীরা টাকার সঙ্গে তাঁর মোবাইল ফোনও কেড়ে নেয়। দুষ্কৃতীরা চলে গেলে নন্দদুলাল ও লক্ষ্মীকান্তবাবু আহতদের তমলুক জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে রাতেই তদন্তে নামে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার সহ পদস্থ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে যান।
পুলিশ সূত্রে খবর, জাতীয় সড়কে ব্যবসায়ীদের উপর দুষ্কৃতীদের এই হামলা সেখানকার সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে সর্বত্র তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কিন্তু জাতীয় সড়কে যেখানে পুলিশের টহলদারি থাকে সেখানে এমন ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গত বছর জানুয়ারি মাসে কাপাসএড়িয়ার কাছে টহলদারির সময় দুষ্কৃতীদের গুলিতে প্রাণ হারাতে হয়েছিল মহিষাদল থানার কনস্টেবল নবকুমার হাইতকে। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত কর্ণ বেরা গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে জেলে। ওই ঘটনার পর জাতীয় সড়কে নিরপত্তা বাড়াতে পুলিশি টহলদারির পাশাপাশি সিসি ক্যামেরাও বসানো হয়েছে।
কিন্তু রাতের সড়কে ব্যবসায়ীদের উপর এ হেন হামলা পুলিশের সেই নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy