শুভেন্দুর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে তৃণমূল নেতাদের থাকা নিয়ে বিতর্ক। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের নাম ‘শুভেন্দু প্রেমে আসক্ত আমরা’। গ্রুপের ‘অ্যাডমিন’ স্বয়ং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। সেই গ্রুপেই কি না রয়েছেন দুই তৃণমূল নেতা! এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরে রাজনৈতিক চাপানউতর তুঙ্গে। তৃণমূলের এক উপপ্রধান এবং এক তৃণমূল যুব নেতার বিজেপি নেতার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে থাকা নিয়ে বিতর্ক শুরু হচতেই তড়িঘড়ি ওই গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যান। কিন্তু তাতেই বিতর্ক থামছে না। দুই তৃণমূল নেতার দাবি, তাঁরা জানতেনই না যে এমন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আছেন। জানলে অনেক আগেই বেরিয়ে যেতেন।
দাসপুরে তৃণমূলের যুব নেতা তথা তমলুক ঘাটাল সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালন কমিটির সম্পাদক কৌশিক কুলভী এবং দাসপুরে তৃণমুল পরিচালিত বাসুদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা দাসপুর ১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সাধরণ সম্পাদক কাজল সামন্ত। তাঁরা ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীর ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে। শনিবার এই ব্যাপারটি প্রকাশ্যে আসতে শুরু হয় জোর তরজা। তার কিছু ক্ষণ পরেই ওই গ্রুপ ছাড়েন দুই তৃণমূল নেতা। তাঁদের ঘনিষ্ঠদের দাবি, শুভেন্দু যখন তৃণমূলে ছিলেন সেই সময় হয়তো ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি হয়। তার পর গ্রুপ ছাড়তে ভুলে গিয়েছিলেন দুই নেতা। যদিও শুভেন্দু ঘাসফুল ছেড়ে পদ্মে গিয়েছেন প্রায় এক বছর আগে। তার পর স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিধানসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এখন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এত দিন কী ভাবে দুই তৃণমূল নেতা ‘ভুল করে’ গ্রুপে থেকে গেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁদের দলেরই একাংশ।
আরও উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের নাম ‘শুভেন্দু প্রেমে আসক্ত আমরা’। যেখানে শুধুমাত্র ‘দাদার অনুগামী’রাই রয়েছেন। যদিও বিতর্কের মুখে কাজল সামন্তের যুক্তি, ‘‘যখন উনি (শুভেন্দু) তৃণমূল করতেন তখন ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। বর্তমানে তিনি বিজেপি করেন। তাই কোনও যোগাযোগ নেই। অজান্তে ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ছিলাম। বিষয়টি জানতে পেরেই বেরিয়ে গিয়েছি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘তৃণমূলে আছি তৃণমূলে থাকব। কারণ, যখন দাদার অনুগামী হয়ে কাজ করার জন্য আবেদন এসেছিল, তখনই স্পষ্ট জানিয়ে দিই বিজেপিতে যোগ দেব না। এটা নিয়ে অহেতুক রাজনীতি হচ্ছে। তা ছাড়া ওই গ্রুপে কোনও মন্তব্যও কোনও দিন করিনি।’’ আর এক তৃণমূল নেতা কৌশিক কুলোভি বলেন, ‘‘আগে জানলে বেরিয়ে যেতাম। শনিবার জানতে পারলাম। জানার সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে গিয়েছি।’’ অবাক হয়ে তিনি জানাচ্ছেন, কী ভাবে ওই গ্রুপে তিনি যুক্ত হয়েছিলেন, সেটাই তাঁর কাছে বিস্ময়ের।
এ নিয়ে কটাক্ষের সুর ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক বিধায়ক শীতল কপাটের গলায়। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির আদর্শ মেনে কাজ করতে চাইলে স্বাগত। তবে তৃণমূলে থেকে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলা মেনে নেওয়া যায় না। অনেক তৃণমূল নেতা এখনও যোগাযোগ করছেন বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য। সে সব বিষয় নেতৃত্ব দেখছেন। আর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে কী ভাবে তৃণমূলের নেতারা ছিলেন সেটাও দেখা হচ্ছে।’’ তৃণমূলের তরফে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আশিস হুদাইতের প্রতিক্রিয়া, ‘‘শুনেছি দু’জন নেতার নম্বর বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে রয়েছে। বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হবে। যা সিদ্ধান্ত হবে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy