মাত্র দেড় বছর আগের ঘটনা। আড়ংকিয়ারনা এলাকায় চোলাই খেয়ে ২৫ জনের মৃত্যুর ঘটনার ক্ষত এখনও শুকোয়নি। অতগুলি প্রাণের বিনিময়ে শিক্ষা নেওয়া ময়নায় চোলাইয়ের দাপট এখন অনেকটাই কম। আর তা মাথায় রেখেই এলাকায় সরকারি অনুমোদন নিয়ে মদের দোকান খোলার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেন ময়নার বাসিন্দারা।
আবগারি দফতরের অনুমোদন পেয়ে মহিষাদলে রাজ্য সড়কের ধার থেকে মদের দোকান সরিয়ে এনে ময়নার প্রত্যন্ত দক্ষিণ আনুখা গ্রামে তা খোলার চেষ্টা হতেই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বাসিন্দারা। সরকারি অনুমোদনে মদের দোকান খোলা রুখতে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা শাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। মদের দোকানের বিরোধিতায় মঙ্গলবার গণসাক্ষর সংবলিত স্মারকলিপিও দিয়েছেন কয়েক’শো গ্রামবাসী।
জেলার আবগারি সুপার স্বপন হাজরা বলেন, ‘‘মহিষাদল থেকে একটি মদের দোকান ময়না ব্লকে স্থানান্তরের আবেদন এসেছিল। তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনও পেয়েছে। তবে মানুষ যখন আপত্তি জানিয়েছেন তখন তা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে।’’ জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘সরকারি অনুমতি নিয়ে মদের দোকান খোলায় স্থানীয় মানুষের আপত্তির কারণ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।’’
প্রশাসন ও আবগারি দফতর সূত্রে খবর, দুর্ঘটনা রুখতে জাতীয় ও রাজ্য সড়কের ধারে ৫০০ মিটার এলাকার মধ্যে মদের দোকান খোলা যাবে না বলে নির্দেশ রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে রাজ্যের জাতীয় এবং রাজ্য সড়কের ধারে থাকা মদের দোকানগুলিতে তালা পড়েছে। তবে আদালতের নির্দেশ এড়াতে রাজ্য সরকারের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিভিন্ন জেলায় রাজ্য সড়কের একাংশকে স্থানীয় পুরসভা কিংবা পঞ্চায়েতের রাস্তা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। মহিষাদল ব্লকে হলদিয়া–মেচেদা রাজ্য সড়কের ধারা থাকা একটি মদের দোকান ৩০ কিলোমিটার দুরত্বে ময়না ব্লকের দক্ষিণ আনুখা গ্রামে ময়না-মেদিনীপুর সড়কের ধারে স্থানান্তরের জন্য অনুমোদন দেয় আবগারি দফতর। গোল বাধে তারপরই।
গ্রামে মদের দোকান খোলার কথা জানতে পেরে প্রতিবাদে সরব হন গ্রামবাসী। গোকুল কুইলি, কানাই দরবার, মদনমোহন মাইতি, অর্জুন দরবারের অভিযোগ, ‘‘যেখানে মদের দোকান খোলা হচ্ছে তার কয়েক’শো ফুট দূরেই রয়েছে হাইস্কুল। এ ছাড়া কলেজও রয়েছে। তাঁদের দাবি, এখানে মদের দোকান খোলা হলে সামাজিক পরিবেশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য গৌতম দরবার বলেন, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশপাশে মদের দোকান খোলার অনুমতি পাওয়ায় আমরা বিস্মিত। এ নিয়ে জেলা প্রশাসন যাতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করে সেই আবেদন জানিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy