Advertisement
০৭ জানুয়ারি ২০২৫
Haldia Pollution

শীতের শিল্পশহরে বায়ু দূষণে উদ্বেগ

চিকিৎসকদের একাংশের মতে, ধূলিকণা উপরের দিকে ওঠায় চোখের ভেতর দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে। এই শিল্পশহরে চোখের অসুখেও ভুগছেন বহু মানুষ।

দূষণের মাত্রা দেখা যাচ্ছে ডিসপ্লে বোর্ডে।

দূষণের মাত্রা দেখা যাচ্ছে ডিসপ্লে বোর্ডে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:০৭
Share: Save:

শিল্পশহর হলদিয়ার বায়ু দূষণ নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রশাসন। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে প্রায় ২৫টি শিল্পসংস্থাকে ইতিমধ্যে একাধিক নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে।

জানা যাচ্ছে, শীতকালে বায়ু দূষণের মাত্রা উর্ধ্বমুখী হয়। তাই পারদ নামতেই একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ দফতর। নির্দেশিকা পালন করা হচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে অভিযানও চালানো হচ্ছে। পরিবেশ দফতর সূত্রে খবর, বায়ু দূষণ দুই প্রকার। প্রথমটি হল স্ট্যাক এমিসন অর্থাৎ শিল্প সংস্থার চিমনি থেকে নির্গত ধূলিকণা । অপরটি হল রাস্তার ধূলিকণা। শীতকালে ধূলিকণা শুকনো হয়ে যায়। শুকনো ধূলিকণার উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করলে সেগুলির উপর দিকে ওঠার প্রবণতা তৈরি হয়। একে বলা হয় ‘রি সাসপেনশন অফ ডাস্ট পার্টিকলস্‌’। ধূলিকণার উপরে ওঠার প্রবণতা থাকায় মানুষ শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত অসুবিধার সম্মুখীন হয়। যাঁদের অ্যাস্থমা বা শ্বাসকষ্টজনিত অসুখ আছে, তাঁদের সমস্যা এই ধূলিকণার জেরে আরও বাড়ে।

চিকিৎসকদের একাংশের মতে, ধূলিকণা উপরের দিকে ওঠায় চোখের ভেতর দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে। এই শিল্পশহরে চোখের অসুখেও ভুগছেন বহু মানুষ। বুধবার হলদিয়া শহরে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (এ কিউ আই) ছিল ১০৫ এর আশেপাশে। কেন্দ্রীয় দূষণ পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, ১০১ থেকে ২০০ মধ্যে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স থাকলে তাকে মধ্যপন্থী বা মডারেট বলা হয়। পরিবেশবিদদের একাংশের মতে, মডারেট একিউআই থাকলে যে সব প্রবীণ নাগরিক শ্বাসকষ্টে ভুগছেন, তাঁরা অসুবিধায় পড়বেন। পরিবেশ দফতর সূত্রে খবর, বছরখানেক আগে হলদিয়ায় একিউআই ছিল ১৩০-এর আশেপাশে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাকে ১০৫-এর কাছাকাছি নামানো সম্ভব হয়েছে।

সম্প্রতি পরিবেশ দফতরের তরফে শিল্পসংস্থাগুলিকে বেশ কিছু রাস্তা চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। যে সব রাস্তা দিয়ে কারখানার কাঁচামাল যাতায়াত করে, সেই সব রাস্তাই চিহ্নিত করা হয়েছে। হলদিয়া শহরের সিটি সেন্টার থেকে মঞ্জুশ্রী পর্যন্ত এইচপি লিঙ্ক রোড, সিটি সেন্টার থেকে রানিচক, হনুমান মন্দির থেকে একটি বেসরকারি কারখানা পর্যন্ত রাস্তাগুলি ওয়াটার স্প্রিংলার ও জল কামান দিয়ে ধুয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জল কামানের মাধ্যমে উপর থেকে তীব্র গতিতে জল স্প্রে করলে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণাগুলি নীচে পড়ে যাবে। ফলে কমবে বাতাসে ধূলিকণার মাত্রা। কমবে, বায়ু দূষণের মাত্রাও।

ইতিমধ্যেই পরিবেশ দফতরের সঙ্গে শিল্প সংস্থাগুলিকে নিয়ে সমাজ মাধ্যমে একটি গ্রুপ খোলা হয়েছে। প্রত্যেক সংস্থা প্রতিদিনের পদক্ষেপ সেই গ্রুপে ছবি-সহ দেবে, এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হলদিয়া শহরে পরিবেশ দফতরের তরফে ডিসপ্লে বোর্ডও বসানো হয়েছে। সেখানে ২৪ ঘন্টা এয়ার কোয়ালিটি কন্ট্রোল কত তা দেখানো হচ্ছে। একটি বোর্ড বসেছে পরিবেশ দফতরের আঞ্চলিক কার্যালয়ে, অন্যটি হলদিয়া সিটি সেন্টার মোড়ে। পাশাপাশি, পরিবেশ দফতর ও জাতীয় পরিবেশ মন্ত্রকের সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। পরিবেশ মন্ত্রক সরাসরি হলদিয়ায় এয়ার কোয়ালিটি কন্ট্রোলের মান কেমন তা দেখতে পারবে।

পরিবেশ দফতরের হলদিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের এক অধিকারিক বলেন, ‘‘শীতকালে আবহাওয়া শুকনো থাকার ফলে বাতাসে ধূলিকণার মাত্রা বাড়ে। সেই জন্য দূষণের মাত্রা কমাতে কারখানাগুলিকে একাধিক নির্দেশিকা দেওয়া হয়ছে।’’ হলদিয়ার মহকুমাশাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘শিল্পসংস্থাগুলিকে পরিবেশ দফতরের নির্দেশ পালন করার কথা বলা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এর ফলে বায়ু দূষণের মাত্রা কমবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Pollution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy