প্রতীকী ছবি।
মহিষাসুরকে বধ করে ত্রিলোকে শান্তি এনেছিলেন দেবী দুর্গা। কিন্তু তাঁর মর্ত্যে আগমণের সময়েই ‘সুরা-অসুরে’র দৌরাত্ম্য বেড়েছে এবার।
আবগারি দফতর সূত্রের খবর, পূর্ব মেদিনীপুরে গত বছর পুজোর তুলনায় এ বছর প্রায় ১০ কোটি টাকা বেশি মূল্যের মদ বিক্রি হয়েছে। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ২৭ কোটিরও বেশি।
রাজ্য সরকারের রাজস্বের একটা বড় অংশ আসে আবগারি দফতর থেকে। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত রাজ্যে বিষাক্ত চোলাই খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা আখছার ঘটত। চোলাই মদের বন্ধের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার কঠোর অবস্থান নেওয়ার ফলে চোলাই, পচাই, ধেনোর বিক্রিতে বেশ কিছুটা রাশ টানা সম্ভব হয়েছে বলে আবগারি দফতর সূত্রের খবর। এতে লাভবান হয়েছেন লইসেন্স প্রাপ্ত মদ বিক্রিতেরা। পাশাপাশি, তৃণমূল সরকারের আমলে ঢালাও মদের লাইসেন্স দেওয়ার কারণে মদের বিক্রি বেড়েছে গোটা রাজ্য জুড়েই।
বর্তমানে পূর্ব মেদিনীপুরে লাইসেন্স প্রাপ্ত সক্রিয় মদের দোকানের সংখ্যা ২৬৫টি। গত বছর করোনা কালে দুর্গা পুজোয় জেলায় ১৮ কোটি টাকার কিছু বেশি মদ বিক্রি হয়। তবে এবার মদ বিক্রি আগের পুজোর সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। আবগারি দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবার পুজোয় পঞ্চমী থেকে ষষ্ঠী পর্যন্ত ছ'দিনে জেলায় দিশি মদ বিক্রি হয়েছে ন’কোটি ৭৪ লক্ষ ২৫ হাজার ৮৪০ টাকার। বিলিতি মদ বিক্রি হয়েছে ১২ কোটি ৪৬ লক্ষ ৬১ হাজার ৫৮ টাকার। আর বিয়ার বিক্রি হয়েছে ৫ কোটি ৯২ হাজার ৯৫০ টাকা। সব মিলিয়ে এবার পুজোতে জেলায় মদ বিক্রি হয়েছে ২৭ কোটি ২১ লক্ষ ৭৯ হাজার ৮৪৯ টাকার। যা সর্বকালীন রেকর্ড বলে দাবি আবগারি আধিকারিদের। এবার বোতল পিছু দিশি মদের দাম বেড়েছে ন্যূনতম ২০ টাকা। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিলিতি মদের দাম ৩০ শতাংশ হারে বেড়েছে। কিছুটা দাম কমেছে বিয়ারের।
আবগারি দফতরের এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘এবার পুজোর আগে চোলাইয়ের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চালানো হয়। সেই কারণে সেই দোকানের বহু ক্রেতাও সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত মদের দোকানে ভিড় করেছে। বিক্রিও অনেকটা বেড়েছে। বিলিতি মদের মূল্যবৃদ্ধিও টাকার অঙ্ক বাড়ার একটা কারণ।’’ আবগারি দফতর সূত্রের খবর, চলতি বছর মে মাসে করোনার জন্য রাজ্য সরকার বিধি নিষেধ ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে দু’ঘণ্টায় জেলায় সাড়ে ২১ কোটি টাকার মদ বিক্রি হয়েছিল। সেই বিপুল পরিমাণ মদ বিক্রির রেকর্ড ভেঙেছে পুজোয়। পূর্ব জেলা আবগারি দফতরের সুপারিনটেনডেন্ট জতন মণ্ডল বলেন, ‘‘এবার পুজোতে মদ বিক্রি ২৭ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। পুজোতে মদ বিক্রির নিরিখে এটা সর্বকালীন রেকর্ড।’’
এদিকে, ‘সুরাসুরে’র দৌরাত্ম্যে পুজোয় আইন বিধি ভাঙার ঘটনাও ঘটেছে একাধিক। জেলা ট্রাফিক পুলিশের এক কর্তা জানাচ্ছেন, পুজোর ক’টা দিন বেপরোয়া মোটরবাইক চালানোর মতো ঘটনায় গড়ে ২০০টি করে অভিযোগ জমা পড়েছে। যার মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযুক্তরা মত্ত অবস্থায় বাইক চালিয়েছে। তবে করোনা কালে ‘ব্রিদিং অ্যানালাইজার’ ব্যবহার করা না যাওয়ায়, বহু ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ওই সংক্রান্ত মামলা দায়ের করা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy