এমন রাস্তা পেরিয়েই পৌঁছতে হয় পাখিরালয়ে। —নিজস্ব চিত্র।
ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশা সীমানা লাগোয়া গোপীবল্লভপুর ১ ব্লকের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হল ঝিল্লি পাখিরালয়। কেন্দুয়ানাচক থেকে ঝিল্লি পাখিরালয় পর্যন্ত সাত কিলোমিটার পিচ রাস্তার কার্যত বেহাল দশা। পরিস্থিতি এমনই যে, পর্যটন কেন্দ্রে যেতে হোঁচট খাচ্ছেন পর্যটকেরা। জেলায় বিভিন্ন এলাকায় ঝাঁ চকচকে রাস্তা থাকলেও পর্যটন কেন্দ্রে যাওয়ার বেহাল রাস্তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন!
গত বছর নভেম্বর মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেলপাহাড়িতে এসে সার্কিট ট্যুরিজ়ম গঠন করার কথা বলেছেন। অথচ গোপীবল্লভপুরে পর্যটন কেন্দ্রে পৌঁছতে নাকাল হচ্ছেন পর্যটকরা। রাস্তা সংস্কারের দাবি তুলছে পর্যটন সংস্থাগুলি। ‘ঝাড়গ্রাম ডিস্ট্রিক হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’এর সম্পাদক শিবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গোপীবল্লভপুরের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র ঝিল্লি পাখিরালয়। শীত পড়তেই পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে। পর্যটন শিল্পে বিকাশের স্বার্থে তাই পর্যটন কেন্দ্রে রাস্তা সারানো খুবই প্রয়োজন।’’
গোপীবল্লভপুর ১ ব্লকের ঝাড়খণ্ড সীমানার প্রত্যন্ত এলাকায় রয়েছে এই পর্যটনকেন্দ্রটি। চারিদিকে শাল জঙ্গলে ঘেরা অপরূপ এই পর্যটন কেন্দ্রটিতে প্রচুর মানুষজন আসেন। গোপীবল্লভপুর ১ ব্লকের সাতমা গ্রাম পঞ্চায়েতের কেন্দুয়ানাচক থেকে সাত কিলোমিটার গেলেই পড়বে ঝিল্লি পাখিরালয়। গত কয়েক বছর ধরে ধীরে ধীরে পর্যটন কেন্দ্রটি সাজানোর উদ্যোগ করেছিল ব্লক প্রশাসন। পর্যটকদের থাকার জন্য অতিথি নিবাস তৈরি রয়েছে। দু’টি ঘরে মোট চারজনের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। জলাশয় ও জঙ্গলের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করার জন্য নজরমিনারও তৈরি হয়েছে। নতুন প্রবেশদ্বার তৈরি করা হয়েছে। লাগানো হয়েছে সিসি ক্যামেরাও। এ ছাড়াও বাচ্চাদের জন্য খেলার পার্ক, ফুলের বাগান তৈরি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এই পর্যটন কেন্দ্রের ১৫০ বিঘা জলাশয়ে প্রতি বছরই বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি আসে। জলাশয়ে বোটিংয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে। জঙ্গল ঘেরা এই পর্যটন কেন্দ্রে বাইরে থেকে প্রচুর পর্যটক বেড়াতে আসেন। গোপীবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতির তরফ থেকে পর্যটন কেন্দ্রটি দেখভাল করা হয়। প্রতিটি অতিথি নিবাসের প্রতিদিনের ভাড়া দু’হাজার টাকা। ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে তাঁবু চালু করা হয়েছে। ঝিল্লি পাখিরালয়ের অতিথি নিবাসের বুকিং অনলাইন ও অফলাইন— দু’ভাবেই করা যায়। গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের সাতমা গ্রাম পঞ্চায়েতের কেন্দুয়ানাচক থেকে ঝিল্লি পাখিরালয় পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার আগে মোরাম রাস্তা ছিল। কয়েক বছর আগে পিচ রাস্তা তৈরি করা হয়। কিন্তু কয়েক বছর যেতে না যেতেই রাস্তার পাথর উঠে একেবারে বেহাল হয়ে গিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তাটি তৈরি হয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে।
পুজোর ছুটিতে ঝিল্লি পাখিরালয়ে বেড়াতে আসা দেবলীনা দাস বলছেন, ‘‘এত সুন্দর পর্যটন কেন্দ্রের রাস্তাটি বড্ড খারাপ। রাস্তাটি অবিলম্বে সংস্কার করা প্রয়োজন।’’ জানা গিয়েছে, ওই রাস্তাটি জেলা পরিষদের। ব্লকের তরফ থেকে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য জেলায় জানানো হয়েছে। ঝাড়গ্রামের জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘রাস্তাটি সংস্কারের জন্য অনেক টাকা প্রায়োজন। বরাদ্দ এখনও মেলেনি।’’ জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নিশীথ মাহাতো বলেন, ‘‘শীত পড়তেই পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে। রাস্তার সংস্কারের ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy