প্রতীকী চিত্র।
গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন গ্রামের এক তরুণ। এক সঙ্গীও জখম।
গোড়ায় ঘটনা টেরই পায়নি পুলিশ। গভীর রাতে জানতে পেরে পুলিশ গ্রামে পৌঁছলেও দেহ মেলেনি। ততক্ষণে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল গুলিবিদ্ধ নাবালকের দেহ। শেষে সকালে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মাটি খুঁড়ে সেই দেহ উদ্ধার করল পুলিশ।
খড়্গপুর গ্রামীণ থানার কাঁটাপাল গ্রামের এই ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে। শনিবার সকালে জমি খুঁড়ে কাশীনাথ দোলুই (১৭)-এর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার শরীরে একাধিক গুলির ক্ষত পাওয়া গিয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় কাশীনাথ গুলিতে মারা যায় বলে পরিবারের দাবি। জখম হন তার সঙ্গী রামু দোলুই। জখমকে প্রথমে পুলিশের নজর এড়িয়ে মেদিনীপুর সদর ব্লকের পাঁচখুড়ির একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর গভীর রাতে মেদিনীপুর মেডিক্যালে স্থানান্তরিত হয়। আর কাশীনাথের মৃতদেহ বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরের জমিতে পুঁতে দেওয়া হয়।
নিহতের পরিবারের দাবি, বছর দশেক ধরে বন্ধ স্থানীয় একটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানার নিরাপত্তারক্ষীর গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে কাশীনাথের। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ছররা গুলির ক্ষত রয়েছে মৃত ও জখমের শরীরে। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই তরুণরা বন্ধ কারখানায় চুরি করতে গিয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ পাচ্ছি। তখনই নিরাপত্তারক্ষী এক রাউন্ড ছররা গুলি চালিয়েছিল। কিন্তু ছররা গুলিতে এ ভাবে মৃত্যু ও আমাদের লুকিয়ে দেহ মাটিতে পুঁতে দেওয়া রহস্যজনক।”
গ্রামে অধিকাংশ শ্রমজীবী মানুষের বাস। নিহত কাশীনাথের বাবা অরুণ দোলুই দিনমজুর। অভিযোগ, চুরি, ছিনতাইয়ে হাত পাকাচ্ছে এলাকার বহু যুবক। বন্ধ স্পঞ্জ আয়রন কারখানার সরঞ্জাম চুরির অভিযোগ উঠছে বারবার। শুক্রবার সন্ধ্যাতেও চুরি ঠেকাতেই গুলি চালাতে বাধ্য হন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন নিরাপত্তারক্ষী। তবে নিহতের মা মল্লিকা দোলুই বলেন, “বাড়ির গরুটা কারখানার ভাঙা পাঁচিল দিয়ে ভিতরে চলে গিয়েছিল। ছেলে আনতে গেলে নিরাপত্তারক্ষী গুলি চালায়। তাতেই ছেলেটা চলে গেল।”
কিছু প্রশ্ন থাকছেই। নিরাপত্তারক্ষী দু’জনকে গুলি করলেও কেন পুলিশে জানানো হল না? ময়নাতদন্ত না করেই কেন দেহ পুঁতে দেওয়া হল? গ্রামের বাসিন্দা নিশীথ দোলুইও বলছিলেন, “রামুর নামে আগেও চুরির অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু কাশীনাথ এমন নয়। আর গুলিতে মরলেও কেন দেহ পুঁতে দিল বুঝতে পারছি না।” নিহতের দাদা নিমাই দোলুইয়ের দাবি, “সেই সময় আমাদের মাথা কাজ করছিল না।” পুলিশের ধারণা, চুরির বদনাম ধামাচাপা দিতেই দেহ পুঁতে দেওয়া হয়েছে। খড়্গপুর ১-এর বিডিও দেবদত্ত চক্রবর্তী বলেন, “ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে আমার উপস্থিতিতে মাটি খুঁড়ে দেহ উদ্ধার হয়েছে। তদন্ত পুলিশ করছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy