মাস্ক ছাড়া রাস্তায়। কান ধরে শেষে পুলিশের কাছে ক্ষমা চাওয়া। শুক্রবার কোলাঘাটের নতুন বাজার এলাকায়। নিজস্ব চিত্র
প্রথম ছিল না তেমন কড়াকড়ি। দ্বিতীয় দিনে রাস্তায় শুরু হয়েছে পুলিশের টহল।
করোনা সংক্রমণ রুখতে রাজ্য সরকারের নির্দেশে পূর্ব মেদিনীপুরে নতুন গণ্ডিবদ্ধ এলাকা (কনটেনমেন্ট জ়োন) চিহ্নিত করেছে জেলা প্রশাসন। সেই এলাকাগুলিতে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা থেকে নতুন করে লকডাউন শুরু হয়েছে। কিন্তু প্রথম দিন লকডাউন কার্যকর করতে প্রশাসনকে তেমন উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল। পাঁশকুড়া পুরএলাকা ছাড়া জেলার অন্য গণ্ডিবদ্ধ এলাকাগুলিতে ঢিলেঢালা ভাবই দেখা গিয়েছিল প্রশাসনের। দোকানপাট তো খোলা ছিলই, সঙ্গে রাস্তাতেও ভিড় ছিল যথেষ্ট
শুক্রবার অবশ্য ওই ছবির পরিবর্তন ঘটেছে। কোথাও কোথাও ফিরেছে প্রথম লকডাউন শুরুর দৃশ্য— যেখানে পুলিশ নিয়মভঙ্গকারীদের লাঠি উচিয়ে তাড়া করেছে। কোলাঘাট শহর এবং ব্লক এলাকায় পুলিশি তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। সকালে কোলাঘাট নতুন বাজার এলাকায় টহল দেয় কোলাঘাট বিট হাউস থানার পুলিশ। সেখানের নতুন বাজারে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সামগ্রীর দোকান সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত খুলে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি কোলাঘাট ব্লক প্রশাসনের।
ওই সব দোকানগুলিতে যে সব ক্রেতা মাস্ক পরে আসেননি, তাঁদের পুলিশ মাস্ক কিনে পরতে বাধ্য করে। আর পথচারীদের মধ্যে যাঁদের মাস্ক ছিল না, তাঁদের লাঠি উঁচিয়ে পুলিশ তাড়া করে। কোলাঘাটের আমলহন্ডা এলাকার দেনান, বাবুয়া গ্রাম, দেউলিয়া বাজার, গোপালনগর বাজার এলাকার যেখানেই জটলা ছিল, পুলিশ গিয়ে তাদের সরিয়ে দেয়। কোলাঘাটের বিডিও মদন মণ্ডল বলেন, ‘‘কোলাঘাটে লকডাউন ভালোভাবেই হয়েছে। কোথাও কোনও জটলা হয়নি। মাস্ক পরে বাইরে বেরোনো বাধ্যতামূলক করতে ব্লক প্রশাসনের তরফে লাগাতার প্রচার চালানো হবে।’’
পাঁশকুড়া ও তমুলক শহরের গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় সকাল থেকেই ছিল পুলিশি টহল। পাঁশকুড়ার প্রতাপপুর বাংলো মোড়, সুরার পুল, পাঁশকুড়া লেভেল ক্রসিং এলাকায় ছিল পুলিশ পিকেট। পাঁশকুড়া স্টেশন বাজারের পাইকারি আনাজ বাজার বন্ধ থাকায় এমনিতেই সুনসান ছিল বাজার চত্বর। লকডাউনের আওতায় থাকা এলাকাগুলিতে এদিন খোলেনি অন্য দোকানও। স্থানীয় বাসিন্দা কল্যাণ রায়ের কথায়, ‘‘নতুন লকডাউনে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা প্রশংসনীয়।’’
অন্যদিকে তমলুকের গ্রামীণ গণ্ডিবদ্ধ এলাকা পদুমপুর-১ এর হিজলবেড়িয়ায় এ দিন সকালেই টহল দিয়েছে পুলিশ। নিমতোড়ি এলাকা গণ্ডিবদ্ধ না হলেও সেখানেও টহল দেওয়া হয়েছে। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের ধলহারা পঞ্চায়েতে এলাকার বাজারে সকাল থেকেই ছিল দোকানপাট বন্ধ। তমলুক শহরের ব্যবসায়ীদের একাংশ বৃহস্পতিবারই জানিয়েছিলেন, প্রশাসন কড়াকড়ি করলেই দোকান বন্ধ করে দেবেন। এ দিন সেই কড়াকড়ি দেখিয়েছে প্রশাসন। তার জেরে বড় বাজার, জেলখানার মোড়, মহাপ্রভু বাজার এলাকা এ দিন ছিল কার্যত ফাঁকা। তমলুকের এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘লকডাউন কার্যকর করতে সমস্ত গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় যথেষ্ট পরিমাণে পুলিশ মোতায়েন ছিল। কোথাও অনিয়মের অভিযোগ আসেনি।’’
হলদিয়া মহকুমার চারটি এলাকা গণ্ডিবদ্ধ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সেগুলিতে কড়া পদক্ষেপ করেছে পুলিশ। প্রয়োজন ছাড়া কাউকে এলাকায় ঢুকতে এবং বেরোতে দিচ্ছে না। তবে কিছুটা ব্যতিক্রম দেখা গিয়েছে পটাশপুরের অমর্ষি বাজার এলাকায় রাস্তাঘাটে লোকজন কম থাকলেও নিয়ম ভেঙে পানের দোকান খোলা থাকতে দেখা গিয়েছে সেখানে। এগরার এসডিপিও শেখ আখতার আলি বলেন, ‘‘গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় পুলিশ নজরদারি রয়েছে। তবে পানের দোকান খোলা রাখার বিষয়টি আমাদের নজরে নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy