Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

আইআইটি-র অদূরে গাঁজা, সিআইডি

 সিআইডি সূত্রে খবর, সেখানে তল্লাশি চালিয়ে খাটের তলা থেকে দু’টি বস্তা ও শৌচাগার থেকে বেশ কিছু পুরিয়া উদ্ধার হয়।

ধৃত সঞ্জয় দোলুই। নিজস্ব চিত্র

ধৃত সঞ্জয় দোলুই। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:১৫
Share: Save:

সারাদিন ফাঁকা। তবে আইআইটি ক্যাম্পাস থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে থাকা রেলবস্তির ঝুপড়িতে সন্ধ্যা হলেই ভিড় জমে। ক্রেতাদের বেশিরভাগই নতুন প্রজন্মের। তার মধ্যে খড়্গপুর আইআইটির অনেক পড়ুয়াও রয়েছেন। দরজা ঠক-ঠক করে ধাক্কা দিয়ে ১০০ টাকা বাড়িয়ে দিলেই হাতে আসে পুরিয়া। বাইরে থেকে সেটিকে দেখতে হোমিওপ্যাথি ওষুধের মতো হলেও সেটি আসলে গাঁজা। এমনই অভিযোগ পেয়ে সোমবার রাতে পুরীগেট সংলগ্ন সুভাষনগর রেলবস্তিতে অভিযান চালাল সিআইডি ও খড়্গপুর টাউন পুলিশ। নেতৃত্বে ছিলেন সিআইডির নারকোটিক্স বিভাগের ওসি সন্দীপ গঙ্গোপাধ্যায় ও টাউন আইসি রাজা মুখোপাধ্যায়।

সিআইডি সূত্রে খবর, সেখানে তল্লাশি চালিয়ে খাটের তলা থেকে দু’টি বস্তা ও শৌচাগার থেকে বেশ কিছু পুরিয়া উদ্ধার হয়। গ্রেফতার হয় গাঁজা কারবারে যুক্ত ওই ঝুপড়ির বাসিন্দা সঞ্জয় দোলুইকে। সবমিলিয়ে প্রায় ২২ কেজি ৩২৫ গ্রাম গাঁজা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তার বাজারমূল্য প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ‘নারকোটিক ড্রাগস অ্যাণ্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সেস’ বা এনডিপিএস আইনে মামলা রুজু করেছে খড়্গপুর টাউন থানা।

সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, আইআইটির পক্ষ থেকে বারবার সিআইডির সদর দফতর ভবানী ভবনে গাঁজা সংক্রান্ত অভিযোগ করা হচ্ছিল। এরপরেই বিষয়টি নারকোটিক্স বিভাগকে দেখতে বলা হয়। টাউন থানার পুলিশও নজরদারি শুরু করে। জানা যায়, পুরীগেট এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় গত কয়েকবছর ধরেই এই গাঁজা কারবারে যুক্ত। আড়াই বছর আগে সঞ্জয়ের মা বুলুকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছিল। ১৭ মাস জেলবন্দি থাকার পরে বুলু ছাড়া পেয়েছে। সঞ্জয়ের পড়শি ও সম্পর্কিত ভাই গুণা দোলুইয়ের দাবি, “সঞ্জয়ের মা ধরা পড়ার পরে আমাদের বাধায় এই কারবার বন্ধ ছিল। এখন কীভাবে কী হল বুঝতে পারছি না।”

গঞ্জিকা কাহিনি

• আইন: গাঁজা পেলেই এনডিপিএস ধারায় মামলা। গাঁজার নেশাও আইনত দণ্ডনীয়।
• আমদানি: ওড়িশার জলেশ্বর, কটক এলাকা থেকে।
• কোন পথে আসছে: রেল ও সড়কপথ।
• বিক্রির মাধ্যম: বাড়ি, পান-চা দোকানে গোপনে বিক্রি।
• দাম: ১০ গ্রাম গাঁজার পুরিয়ার দাম ১০০-১২০টাকা।

খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজি সামসুদ্দিন আহমেদ জানান, আইআইটি কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে পড়ুয়াদের গাঁজায় আসক্ত হওয়ার প্রবণতার অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তারপরে নজরদারি চলছিল। সিআইডি-র পাশাপাশি আমরাও তদন্ত চালাচ্ছি।

আইআইটি ও রেলের শহর খড়্গপুরের বাসস্ট্যান্ড, খরিদা, পুরীগেট, প্রেমবাজার, ডিভিসি, বোগদা, কৌশল্যা, কমলা কেবিন-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ঝুপড়ি দোকান ও বাড়িতে গাঁজা রেখে ব্যবসা চলে বলে অভিযোগ। দিন কয়েক আগেই আরপিএফের টাক্স ফোর্স খড়্গপুর স্টেশন থেকে ১১ কেজি গাঁজা-সহ এক মহিলাকে ধরেছিল। জেরায় সঞ্জয় দাবি করেছে, সে গোপালির একজনের থেকে গাঁজা এনে বিক্রি করত। আইআইটির পড়ুয়ারা ছাড়াও কয়েকজন অধ্যাপকও গাঁজা কিনত।

তবে প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়া ও অধ্যাপকদের গাঁজা কেনার অভিযোগ মানতে নারাজ আইআইটির রেজিস্ট্রার ভৃগুনাথ সিংহ। তিনি বলেন, “কে কোথায় কীভাবে সিআইডিকে অভিযোগ জানিয়েছে এই বিষয়ে আমার জানা নেই।”

অন্য বিষয়গুলি:

Marijuana IIT
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy