শিবিরে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ সুপারকে রাস্তার দাবি জানাচ্ছেন দুই প্রবীণ। নিজস্ব চিত্র
একসময়ের মাওবাদী প্রভাবিত এলাকায় ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের উদ্যোগে শুরু হল ‘দুয়ারে পুলিশ’ কর্মসূচি। বুধবার বেলপাহাড়ির বাঁশপাহাড়ি পঞ্চায়েতের ছুরিমারা গ্রামের ফুটবল মাঠে শিবিরের সূচনা করেন জেলা পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ ঘোষ। এলাকাবাসীর অভাব-অভিযোগ শুনতে গিয়েছিলেন পুলিশ সুপার সহ জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারা। কিন্তু এ দিন পুলিশের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ জানালেন না এলাকাবাসী। বরং পঞ্চায়েতের উন্নয়ন পরিষেবা না পাওয়া, এলাকার রাস্তাঘাট, পানীয় জলের মতো নানা সমস্যা নিয়ে পুলিশ কর্তাদের কাছে নালিশ জানালেন বাসিন্দারা।
ওই শিবিরে ছিলেন বেলপাহাড়ির যুগ্ম বিডিও শৌভিক সরকার-সহ বন দফতর ও ভূমি দফতরের প্রতিনিধিরাও। আদিবাসী হওয়া সত্ত্বেও যাঁরা জাতিগত শংসাপত্র পাননি, তেমনই ৪৩২ জনকে পুলিশের শিবির থেকে ব্লক প্রশাসনের তরফে জাতিগত শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়। শিবির শুরুর সময় পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘অনেক সময়ে দূরত্বের কারণে পুলিশ সংক্রান্ত অভিযোগ থানায় গিয়ে জানাতে পারেন না। সে জন্য আমরাই আপনাদের কাছে এসেছি। আপনাদের সমস্যা আমাদের কাছে জানাতে পারেন।’’ পুলিশ সুপার জানান, শুধু পুলিশ সংক্রান্ত নয়, অন্য সমস্যার সমাধানেও আন্তরিক চেষ্টা করা হবে। পুলিশ সুপারকে কাছে পেয়ে ছুরিমারার কাপুরমণি হাঁসদা, ওড়লির রমণী মাহাতোরা জানালেন, তাঁরা বার্ধক্যভাতার আবেদন করেও পাননি। পচাপানি গ্রামের শেখ ইয়াসিন, আমিরুদ্দিন আনসারি পুলিশ সুপারকে জানান, পচাপানি গ্রামের একটি রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। বৃষ্টিতে হাটাচলা করা যায় না।
এদিন পর্যায়ক্রমে ছুরিমারা সহ আশেপাশের বিদরি, জোড়াশাল, দেশমূল, চিটামাটি, ওড়লি, মানিয়ারডির মতো বিভিন্ন গ্রামের হাজার খানেক বাসিন্দা হাজির হন। সেখানে বিভিন্ন প্রকল্পে সুযোগ পাওয়ার জন্য নামও লেখান এলাকাবাসী। প্রকল্পের সুযোগ পাওয়ার আবেদনপত্রও সংগ্রহ করেন। ছুরিমারার রমেশ হাঁসদা এক সময়ে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় অভিযুক্ত হয়ে গ্রেফতার হন। কিন্তু এখনও সরকারি প্যাকেজ পাননি তিনি। প্রত্যন্ত ঢেকিয়া গ্রামের শশাঙ্কশেখর মুড়ার নেতৃত্বে স্থানীয় যুবকরা সাতটি রাস্তা, তিনটি সেতু- সহ বিভিন্ন দাবি জানান।
সূত্রের খবর, মূলত মাওবাদী প্রভাবিত এলাকার মানুষজনের মনের অন্দরে কোনও ক্ষোভ রয়েছে কি-না সেই সুলুকসন্ধানই পুলিশের উদ্দেশ্য। তাই বেলপাহাড়ি ব্লকের বাঁশপাহাড়ি, শিমূলপাল ও ভুলাভেদা এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন গ্রামে সপ্তাহে দু’দিন করে এ ধরনের শিবির করতে উদ্যোগী হয়েছে পুলিশ। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘এলাকা শান্ত রয়েছে। কিন্তু আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না। স্পর্শকাতর এলাকার বাসিন্দাদের মন বুঝতে হবে। সেটাই করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy