স্কুলে চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
প্রধান শিক্ষক ছাত্রীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন, এই অভিযোগে বুধবার দফায় দফায় বিক্ষোভ হল শালবনির পিঁড়াকাটা হাইস্কুলে। সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক-সহ অন্যান্য শিক্ষকেরা ঘেরাও হয়েছিলেন।
অভিভাবকদের একাংশই ওই অভিযোগে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক গৌতম জানা ছাত্রীদের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই অশালীন আচরণ করেন। বিক্ষোভের জেরে স্কুলে পঠনপাঠন ব্যাহত হয়েছে। ছাত্রদের একাংশ ‘হেড মাস্টারের শাস্তি চাই, বিচার চাই’ প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে। পিঁড়াকাটার উপর দিয়েই চলে গিয়েছে ভাদুতলা- লালগড় রাস্তা। অবরোধের জেরে দুর্ভোগে পড়েন পথচলতি মানুষজনও। পুলিশ এসে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে। দুপুর থেকে শুরু হওয়া অবরোধ ওঠে বিকেলে।
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ প্রধান শিক্ষক। সন্ধ্যায় তিনি বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন। কয়েকজন ছাত্রীকে দিয়ে মিথ্যা কথা বলানো হচ্ছে। আমি ভাল ভাবে স্কুল চালানোর চেষ্টা করি। স্কুলের শিক্ষক থেকে অভিভাবক, সকলেই তা জানেন।’’ পুলিশের কাছেও প্রধান শিক্ষক দাবি করেছেন, তিনি নির্দোষ। তাঁর নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। কোনও ছাত্রীর সঙ্গে তিনি কখনও অশালীন আচরণ করেননি।
বিক্ষোভরত অভিভাবকদের দাবি, মঙ্গলবার দশম শ্রেণির ক্লাস নিতে গিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষক। শুরুতে তিনি ছাত্রদের ক্লাস থেকে বের করে দেন। শুধু ছাত্রীরাই ক্লাসে ছিলেন। পরে এক সময়ে তিনি ক্লাসের জানালা বন্ধের নির্দেশ দেন। ছাত্রীরা তাতে রাজি হয়নি। এরপর এক ছাত্রী ক্লাস থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলে তিনি তার হাত ধরে টানাটানি করেন বলেই অভিযোগ। ওই ছাত্রী বাড়ি ফিরে বিষয়টি তার পরিজনেদের জানায়। খবর চাউর হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে বুধবার সকালে স্কুলে জড়ো হন অভিভাবকদের একাংশ। বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবকের দাবি, ‘‘প্রধান শিক্ষক যখন তখন গার্লস হস্টেলে চলে যান। ওনাকে আগেও বারবার সতর্ক করা হয়েছে। উনি কোনও কিছুর পরোয়া করেন না। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলে প্রধান শিক্ষক আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।’’
শালবনির বিডিও সঞ্জয় মালাকার বলেন, ‘‘পিঁড়াকাটা হাইস্কুলে একটা সমস্যা হয়েছে। বিষয়টি দেখছি।’’ পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘সমস্যার কথা জানতে পেরে স্কুলে পুলিশ গিয়েছিল।’’ জেলা শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানান, নির্দিষ্ট অভিযোগ এলে এ ক্ষেত্রে উপযুক্ত ব্যবস্থাই নেওয়া হবে। প্রয়োজনে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও হতে পারে। সকাল থেকে ‘আটকে’ থাকার পরে রাতে স্কুল থেকে বেরোন শিক্ষকেরা। কেন শুধু ছাত্রীদের নিয়ে মঙ্গলবার ওই ক্লাস করছিলেন? প্রধান শিক্ষকের জবাব, ‘‘শুরুতে ক্লাসে ছাত্র ও ছাত্রী সবাই ছিল। কিন্তু ছাত্ররা গোলমাল করছিল বলে পরে ওদের ক্লাসের বাইরে বের করে দিই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy