ঘাটালে ডুবেছে আমন ধানের জমি। নিজস্ব চিত্র
শিলাবতী-কংসাবতীর জল বাড়ার পরিমাণ কিছুটা কমায় ঘাটাল শহর-সহ প্লাবিত কিছু এলাকায় অল্প অল্প করে জল কমেছে। তবে উদ্বেগ কমেনি তাতে। কারণ মঙ্গলবারও বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টিও হয়েছে। সামনে টানা বৃষ্টির পূর্বাভাসও আছে।
সেচ দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “এখন সব নদীর জল ফুঁসছে। খালের জলও বেড়েছে। এরমধ্যে নিম্নচাপ শুরু হলে রক্ষে নেই। তবে নতুন করে আর বৃষ্টি না হলে দু’চারদিনের মধ্যে জলমগ্ন পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হবে।”
কৃষি দফতর থেকে জানা গিয়েছে, জলমগ্ন হওয়ার ঘাটাল ব্লক-সহ পুরো মহকুমা জুড়েই আমন ধানের কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। কেশপুর ব্লকের কিছু এলাকাতেও আমনের ক্ষতি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত মহকুমায় কমবেশি ১৯ হাজার হেক্টর আমন ধানের ক্ষতির খবর এসেছে। জেলায় এখনও পর্যন্ত ৩ লক্ষ ৫৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান হয়েছিল। এ বার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লক্ষ ৮৯ হাজার হেক্টর।
ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের আক্ষেপ, চলতি মরসুমে বৃষ্টির অভাবে আমনের চাষ সময়ে শুরু হয়নি। এখনও অনেকে আমনের চারা লাগাচ্ছেন। তার মধ্যেই এই পরিস্থিতি এল। জেলায় ২ হাজার হেক্টর জমির পাট-আনাজের ক্ষতি হয়েছে। ঘাটালের মনসুকার বাসিন্দা চাষি অমর পালের আক্ষেপ, “কয়েকদিন আগেই চারা পুঁতে ছিলাম। সেই জমি এখন জলের তলায়। জল কমলে ফের রুইতে হবে।”
মহকুমা প্রশাসন সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকাল থেকে ঘাটাল ব্লকের দেওয়ানচক, আজবনগর, মনসুকা, মোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাগুলি থেকে ধীর গতিতে জল কমতে শুরু করে। ঘাটাল শহরের একাংশেও অল্প হলেও জল কমেছে। তবে জনজীবন স্বাভাবিক হয়নি। পানীয় জলের ট্যাপ জলে ডুবে থাকায় নৌকায় করে উঁচু এলাকায় গিয়ে জল সংগ্রহ করতে হচ্ছে জলবন্দি এলাকার বাসিন্দাদের। তবে দাসপুর-১ ব্লকের নাড়াজোল ও রাজনগর পঞ্চায়েতের প্লাবিত গ্রামগুলিতে অবশ্য পরিস্থিতি বদলায়নি। সেখানে আবার নৌকাও অপ্রতুল। ঘাটালের মহকুমা শাসক অসীম পাল বলেন, “মঙ্গলবার নতুন করে জল বাড়ার খবর নেই। ঘাটালের পরিস্থিতি কত দ্রুত উন্নতি হবে,তা আগামী দু’দিনের বৃষ্টির উপরে নির্ভর করছে।”
সরেজমিনে ঘাটালের পরিস্থিতি দেখতে আসার কথা থাকলেও এলাকার তারকা-সাংসদ দেবকে অবশ্য এখন গৃহ নজরবন্দি থাকতে হচ্ছে। কারণ তাঁর কলকাতার বাড়ির ম্যানেজার করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। যদিও দেব এবং তাঁর পরিবারের প্রত্যেকেরই রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে ঘাটালে জল-পরিস্থিতি দেখতে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন সাংসদ। মঙ্গলবার ফোনে দেব বলেন, ‘‘গত এক সপ্তাহ ধরেই আমি হোম কোয়রান্টিনেই রয়েছি। কিছুদিন আগে আমার এক বন্ধুর রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। তাঁর আমার বাড়িতে যাতায়াত ছিল। খবরটা জানার পরই থেকে আমি বাড়ি আর বেরোইনি।’’
সাংসদ জুড়ছেন, ‘‘আমার ঘাটাল যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই ব্যাপারটা নিশ্চিত না হয়ে, যেতে চাইনি। তবে ওখানকার পরিস্থিতির উপর আমার নজর রয়েছে। জেলাশাসক এবং পুলিশকর্তাদের সঙ্গেও আমার নিয়মিত কথা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, আগের বার যখন মেদিনীপুর গিয়েছিলেন, তখন জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি হলে কী কী পদক্ষেপ করতে হবে— তার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy