Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Jhargram

ওটি থেকে পালিয়ে রোগী ঝুললেন পাইপে

রোগীর বাঁ কাঁধের হাড় ছিল ভাঙা। ফলে, এক হাতে কাঠের রেলিং ধরে নামার বিপত্তি এড়ানো যায়নি। 

হাসপাতালের পাঁচতলা থেকে দড়ি বেঁধে উদ্ধার করা হচ্ছে সুদর্শনকে (চিহ্নিত)। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

হাসপাতালের পাঁচতলা থেকে দড়ি বেঁধে উদ্ধার করা হচ্ছে সুদর্শনকে (চিহ্নিত)। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২০ ০৩:২১
Share: Save:

অপারেশন থিয়েটার থেকে পালিয়েছিলেন এক রোগী। তারপর পাঁচতলা থোকে কাঠের রেলিং ও শৌচাগারের পাইপ ধরে নামার চেষ্টা করছিলেন। রোগীর বাঁ কাঁধের হাড় ছিল ভাঙা। ফলে, এক হাতে কাঠের রেলিং ধরে নামার বিপত্তি এড়ানো যায়নি।

কয়েকটি রেলিং ভেঙে পড়তেই শৌচাগারের পাইপ ধরে ঝুলতে থাকেন বছর আটচল্লিশের সুদর্শন দণ্ডপাট। সোমবার সকালে এই ঘটনায় হাসপাতালের পাঁচ ঠিকাকর্মীর চেষ্টায় রক্ষা পান সুদর্শন। পরে দমকল কর্মীরা এসে তাঁকে উদ্ধার করেন। গোটা ঘটনায় হাসপাতালের নিরাপত্তা র গলদ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রোগীর পরিজনেরা। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই রোগীর ‘অ্যালকোহল উইথড্রয়্যাল সিনড্রোম’ ছিল। তাই তিনি এমন কাণ্ড বাধিয়েছেন।

সুদর্শনের বাড়ি জামবনির চিল্কিগড়ে। গত শুক্রবার ছাগলের জন্য পাতা নিতে তিনি বটগাছে চড়েছিলেন। তখনই গাছ থেকে পড়ে বাঁ হাতে চোট পান। চিল্কিগড় গ্রামীণ হাসপাতালে থেকে তাঁকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটিতে ‘রেফার’ করা হয়। শুক্রবার থেকে তিনি সুপার স্পেশালিটির মেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন। এক্স-রেতে জানা যায়, তাঁর বাঁ কাঁধ ও হাতের সংযোগস্থলে হাড় ভেঙেছে।

এ দিন সকালে হাতে প্লাস্টার করতে সুদর্শনকে পাঁচতলায় ওটি-তে নিয়ে যাওয়া হয়। ওটি-তে নিরাপত্তা রক্ষী থাকেন না। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ভেতরে তখন ছিলেন অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ শুভাশিস দাস ও দু’জন নার্স। সকাল সোয়া এগারোটা নাগাদ নার্সদের ধাক্কা মেরে ওটির এমার্জেন্সি ফায়ার এক্সিট দিয়ে পালিয়ে যান সুদর্শন। তারপরে পাঁচতলার ছাদ থেকে শৌচাগারের পাইপ বেয়ে নামতে থাকেন তিনি। হাসপাতালের বাগানের মালি সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় প্রথম তাঁকে পাইপ ধরে ঝুলতে দেখেন।

একতলায় বহির্বিভাগে তখন ভাল ভিড়। হাসপাতালের অস্থায়ী নিরাপত্তা কর্মী মনোতোষ গরাই, সত্যদেব মল্লিক, লিফ্টম্যান নন্দন মাইতি, পাইপ লাইনের কর্মী পিন্টু ভুঁইয়া ও পেস্ট কন্ট্রোল কর্মী অশ্বিনী মাহাতো নীচ থেকে কাঠের রেলিং বেয়ে উপরে উঠে সুদর্শনকে দড়ি দিয়ে শৌচাগারের পাইপের সঙ্গে বেঁধে ফেলেন। পরে দমকল কর্মীরা এসে ছাদ থেকে দড়ি ঝুলিয়ে নেমে সুদর্শনকে উদ্ধার করেন।

হাসপাতালের বেসরকারি সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেসিলিটি ম্যানেজার দীপু সিংহ বলেন, ‘‘ওই পাঁচ কর্মী সময় মতো উপরে উঠে ওই রোগীকে বেঁধে না ফেললে মারাত্মক বিপদের আশঙ্কা ছিল।’’ ঘটনার পরেই এ দিন থেকে ওটির ভিতরেও হাসপাতালের নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষী বহাল করা হয়েছে। কেন ওটির ‘ফায়ার এক্সিট ডোর’ খোলা ছিল তা জানতে তদন্ত কমিটি হয়েছে। হাসপাতাল সুপার ইন্দ্রনীল সরকার বলেন, ‘‘সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ সুদর্শনের স্ত্রী সুমিত্রা দণ্ডপাট বলেন, ‘‘মদ না পেলেই আমার স্বামী অপ্রকৃতস্থ আচরণ করেন।’’ আর সুদর্শন বলছেন, ‘‘কী যে হয়েছিল মনে নেই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Jhargram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy