বসার জায়গা অপরিষ্কার। তাই খবরের কাগজ পাতছেন এক যাত্রী। খড়্গপুর স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র।
করোনা পর্বে প্রথম চাকা ঘুরল লোকাল ট্রেনের। প্রথম দিনে খড়্গপুর ডিভিশনে যাত্রীর সংখ্যা ছিল অনেকটাই কম। তবে প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও করোনা বিধি না মানার ছবি দেখা গিয়েছে বিভিন্ন স্টেশনে। দিনের শুরুতে বেশ কয়েক ঘণ্টা খোদ খড়্গপুর স্টেশনেই থার্মাল স্ক্রিনিং ও জীবাণুমুক্ত ছাড়াই ভিতরে ঢুকলেন যাত্রীরা। বেশ কয়েকটি ট্রেনের আসনও পরিষ্কার ছিল না বলে অভিযোগ।
মঙ্গলবার রাত ৩টে থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত খড়্গপুর স্টেশনের দক্ষিণ অংশে যাত্রীদের থার্মাল স্ক্রিনিং হয়নি। হয়নি জীবাণুমুক্ত করার কাজও। বেলা বাড়লে থার্মাল স্ক্রিনিং হলেও জীবাণুমুক্তির কাজ করতে দেখা যায়নি। প্ল্যাটফর্মে দূরত্ব বিধি কার্যকর করতে পর্যাপ্ত আরপিএফ ছিল না। তবে ভোর থেকেই টিকিট পরীক্ষায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এ দিন। খড়্গপুর ডিভিশনের গোকুলপুর, গিরিময়দান, বালিচক, মেচেদা, পাঁশকুড়ার মতো ছোট স্টেশনগুলিতেও একই ছবি দেখা গিয়েছে। তবে বেলা বাড়ার পরে অবশ্য বিভিন্ন স্টেশনে রেল পুলিশের সংখ্যা বাড়ে। দেখা যায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের। খড়্গপুর স্টেশনের উত্তর দিকে যাত্রীদের থার্মাল স্ক্রিনিং করেছেন রাজ্যের সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা।
এ দিন খড়্গপুর স্টেশন থেকে সকাল ৭টার মেদিনীপুর-হাওড়া লোকালে উঠেছিলেন দীনেশ দাশ নামে এক যাত্রী। তিনি বলেন, “আমি হায়দরাবাদ থেকে ময়নার বাড়িতে ফিরছি। খড়্গপুরে এসে লোকাল চালু হয়েছে শুনে বালিচকে যাওয়ার জন্য উঠেছি। কিন্তু স্টেশনে আমার তাপমাত্রা পরীক্ষা বা জীবাণুমুক্তের কাজ কেউ করেনি।” ৭টা ৪০ মিনিটের হাওড়া-খড়্গপুর লোকালে ছিলেন দাঁতনের রানিসরাইয়ের বাসিন্দা দিলীপ মাহাতো। তাঁর ক্ষোভ, “ভেবেছিলাম করোনার সব নিয়ম মানা হবে। কিন্তু ট্রেনের আসনই তো ধুলোয় ভরে আছে। নিজেই খবরের কাগজ দিয়ে আসন পরিষ্কার করলাম।” প্রিয়াঙ্কা দাস নামে খড়্গপুরের ভবানীপুরের বাসিন্দা আরেক রেল যাত্রীর দাবি, ‘‘জীবাণুমুক্তির কাজ একেবারেই হচ্ছে না। ছোট ছেলেকে নিয়ে এভাবে লোকাল ট্রেনে যেতে ভয়ই লাগছে।”
খড়্গপুর-মেদিনীপুর-হাওড়া ডেইলি প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জয় দত্ত বলেন, “আমরা দু’দিন আগে খড়্গপুর স্টেশন ঘুরেই বুঝেছিলাম প্রস্তুতি ঢিলেঢালা। লোকাল চালুর পরেও দেখলাম অনেক অব্যবস্থা। তাই আমরা নিত্যযাত্রীরা আপাতত পর্যবেক্ষণ করতে চাইছি। কারণ নিত্যযাত্রীরা সবাই ট্রেন উঠলে দূরত্ববিধি কোনওভাবেই মানা যাবে না।’’ করোনা বিধি সঠিকভাবে কার্যকরের সঙ্গে ট্রেনের সংখ্যাবৃদ্ধিরও দাবি করেছেন তিনি।
করোনা পর্বে প্রথম লোকাল ট্রেন চললেও এ দিন খড়্গপুর ডিভিশনের রেল আধিকারিকদের স্টেশন পরিদর্শনে দেখা যায়নি। জেলা প্রশাসনের কর্তাদেরও দেখা মেলেনি। এই বিষয়টি নিয়ে খড়্গপুরের ডিআরএম মনোরঞ্জন প্রধানকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, “এগুলি আমাকে জিজ্ঞাসা করবেন না। আমি বৈঠকে ব্যস্ত। আপনি সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।” সিনিয়ার ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার আদিত্য চৌধুরীকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। রেল পুলিশের ডেপুটি সুপার শেখর রায় অবশ্য কয়েকটি স্টেশনে ঘুরেছেন। তাঁর দাবি, “প্রতিটি স্টেশনে আমাদের নজরদারি চলছে। সব কিছু সঠিকভাবেই চলছে বলে আমাদের নজরে পড়েছে। কোথাও বিশৃঙ্খলা দেখা যায়নি।” খড়্গপুরের স্টেশন মাস্টার দেবেন্দ্রকুমার পণ্ডারও দাবি, করোনা বিধি পালন করা হচ্ছে। যদি কোথাও ফাঁক থাকে তবে নিশ্চয় পদক্ষেপ করা হবে। খড়্গপুরের মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেন, ‘‘এ দিন বিভিন্ন স্টেশনে জিআরপি ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা ছিলেন। তাঁরা পরিস্থিতি সামলেছেন। প্রয়োজন হলে আমিও স্টেশনে যাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy