বুলবুলের ভয়ে মাঠ থেকে কাটা হচ্ছে ধান। মেদিনীপুর সদর ব্লকের কনকাবতীতে। নিজস্ব চিত্র
পাকা ধানে মই দেবে কি বুলবুল! সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে ধানচাষিদের মধ্যে।
হাওয়া অফিস বলছে, শুক্রবার রাত থেকেই উপকূলবর্তী জেলার সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরেও বুলবুলের প্রভাব পড়বে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে ভারি বৃষ্টির প্রভাব কৃষিক্ষেত্রেও পড়বে। এটা বুঝতে পেরেই ঘুম ছুটেছে জেলার চাষিদের। কারণ মাঠে এখন ধান পাকার সময়।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার পশ্চিম মেদিনীপুরে ৩ লক্ষ ৭২ হাজার ১১৩ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। এ বার আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার জন্য জেলায় আমন ধান চাষ একটু দেরি করে শুরু হলেও পুজোর আগে আগে বৃষ্টি হওয়ায় ফলন আশানুরূপ হয়েছে। গড়বেতা, গোয়ালতোড়, চন্দ্রকোনা, শালবনি, কেশপুর-সহ জেলার বেশ কয়েকটি ব্লকেই এখন আমন ধান পাকতে আরম্ভ করেছে। অনেকে ধান কাটা শুরুও করেছিলেন। এই অবস্থায় চাষির হাসি কাড়তে পারে বুলবুল।
গোয়ালতোড়ের পিয়াশালার বিভূতি কুণ্ডু, জোগারডাঙার মদন ঘোষেদের আশঙ্কা, ‘‘ধান পাকতে আরম্ভ করেছে। এবার যদি বুলবুল সব লণ্ডভণ্ড করে দেয় তাহলে খুব ক্ষতি হয়ে যাবে।’’ বুলবুল আসার খবর পেয়ে রসকুণ্ডুর রঞ্জিত ঘড়া, চন্দ্রকোনার হারু রায়, পীযুষ রায়দের মতো অনেকেই তড়িঘড়ি ‘হারভেস্টর’ মেশিন চালিয়ে মাঠের পাকা ধান কেটে নিচ্ছেন। তাঁরা বলেন, ‘‘ঝুঁকি নিচ্ছি না। একটু বাড়তি খরচ করে পাকা ধান কেটে ঘরে তুলছি। এতে ক্ষতির সম্ভাবনা কমবে।’’ ধান চাষিরা জানান, হারভেস্টার মেশিন ১ ঘণ্টায় ৩ বিঘা জমির ধান কাটছে ও ঝাড়ছে। এরজন্য ঘণ্টাপিছু চাষিকে ২৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। এর ফলে হারভেস্টার মেশিনের মালিকেরাও লাভের মুখ দেখছেন। নন্তু বারিক নামে চন্দ্রকোনার এক বাসিন্দার হারভেস্টার মেশিন রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার থেকে প্রচুর বরাত পাচ্ছি। অনেকের ধান পাকতে আরও কয়েকদিন দেরি থাকলেও চাষিরা তাড়া দিচ্ছেন।’’ মেশিন না পেয়ে অনেকে শ্রমিক দিয়েও ধান কাটতে শুরু করেছেন। গড়বেতার তিনটি ব্লকে পুরোপুরি ধান পাকতে আরও এক সপ্তাহের মতো সময় লাগবে বলে জানাছেন ধানচাষিরা। বুলবুলের শঙ্কা চেপে বসছে সেইসব কৃষক পরিবারদের মধ্যে।
জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, ‘‘বুলবুলের প্রভাবে চাষে ক্ষতির সম্ভাবনা আছে। আমরা নজর রাখছি। দফতরের কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।’’ জেলা কৃষি দফতরের উপ অধিকর্তা প্রভাতকুমার বসু বলেন, ‘‘কৃষি দফতর নজরদারি চালাচ্ছে। জেলা-সহ প্রতিটি ব্লকের কৃষি দফতরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy