স্টেশনের কারশেডের কাছে রেল লাইনে মেরামতি। ছবি: কিংশুক আইচ
করোনার আগে দিনে চলত ২১৫টি লোকাল ট্রেন। গত ২২ মার্চ শেষ তাই চলেছিল। তারপর সব বন্ধ। অবশেষে আগামী ১১ নভেম্বর খড়্গপুর শাখায় নামবে ৮১টি লোকাল ট্রেন। একে ট্রেনের সংখ্যা কম, তায় ভিড় নিয়ন্ত্রণের মস্ত চ্যালেঞ্জ। সেই মতোই চলছে প্রস্তুতি। তবে মাত্র ৪০ শতাংশ লোকাল চালানোর সিদ্ধান্ত অপরিকল্পিত দাবি করে দুর্ভোগের আশঙ্কা করছেন নিত্যযাত্রীরা।
আগামী বুধবার রাজ্যের অন্য ডিভিশনের সঙ্গে খড়্গপুর শাখাতেও চালু হচ্ছে লোকাল ট্রেন। দিনে মাত্র ৮১টি লোকাল ট্রেনে ভিড় নিয়ন্ত্রণ কী ভাবে সম্ভব প্রশ্ন সেটাই। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় রেলের সঙ্গে তৎপরতা শুরু করেছে রেল পুলিশও। বড় স্টেশনের থেকেও মধ্যবর্তী ছোট স্টেশনগুলিতে কীভাবে ভিড় নিয়ন্ত্রণ হবে সেটাই মাথাব্যথা রেল প্রশাসনের। আপাতত বিভিন্ন স্টেশনে অসংরক্ষিত টিকিট ব্যবস্থাকে সচল করা, টিকিট পরীক্ষায় জোর দেওয়া হয়েছে। পানীয় জল, আলো, বসার জায়গার মতো যাত্রী পরিষেবার বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খড়্গপুর রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার আদিত্য চৌধুরী বলেন, “আমরা ধাপে-ধাপে প্রস্তুতি নিচ্ছি। যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা আমরা, না রাজ্য করবে সেটাও কথা চলছে।” লোকাল ট্রেনে আপাতত হকারদের উঠতে দেওয়া হবে না বলেই জানান আদিত্য। যদিও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের রেলপথ হকার ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্লব ভট্ট বলেন, “হকাররা না থাকলে লোকাল ট্রেনের যাত্রীরা পানীয় জলটুকুও পাবেন না। তাই করোনা বিধি মেনেই আমাদের হকাররা লোকালে উঠবেন।”
ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুরোদমে প্রস্তুতি শুরু করেছে রেল পুলিশ। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, খড়্গপুরের মতো বড় স্টেশনে সমস্যা তেমন নেই। কিন্তু মেদিনীপুর, মাদপুর, বালিচকের মতো ছোট স্টেশন নিয়েই চিন্তা। সেখানে বিভিন্ন দিক দিয়ে যাত্রীদের ঢোকার সুযোগ থাকায় প্ল্যাটফর্মের শেষ মাথাতেও পুলিশ মোতায়েনের পরিকল্পনা চলছে। ঢোকা-বেরনোর আলাদা পথ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে মেদিনীপুরের মতো স্টেশনে একটি মাত্র পথ হওয়ায় তা ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে। তবে খড়্গপুরে বোগদার সাবওয়ে দিয়ে ঢোকা ও ফুটব্রিজ দিয়ে বেরনোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। মালগুদামের দিক থেকেও ঢোকার পথ দু’ভাগে ভাগ করা হচ্ছে। প্রতিটি প্ল্যাটফর্মে দূরত্ববিধি বজায়ে কাটা হচ্ছে গণ্ডি। রেল পুলিশের ডেপুটি সুপার শেখর রায় বলেন, “আমরা, রেল প্রশাসন ও আরপিএফের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যাবতীয় প্রস্তুতি শুরু করেছি। ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও করোনা সতর্কতা বিধি পালন আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ। যাত্রীদেরও সচেতন হতে হবে।”
খড়্গপুর-হাওড়া, মেদিনীপুর-হাওড়া, আমতা-হাওড়া, হলদিয়া-হাওড়া মিলিয়ে খড়্গপুর ডিভিশনের জন্য ৮১টি ট্রেনে কতটা ভিড় নিয়ন্ত্রণ সম্ভব তা নিয়ে অবশ্য জল্পনা চলছেই। খড়্গপুর-মেদিনীপুর-হাওড়া ডেইলি প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোশিয়েশনের সম্পাদক জয় দত্ত বলেন, “অপরিকল্পিত সিদ্ধান্ত। আমরা রাজ্য ও রেলকে চিঠি দেব। এ বাবে নিত্যযাত্রীদের বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এতে বিশৃঙ্খলা যেমন বাড়বে তেমন সংক্রমণও। আরও বেশি ট্রেন নামাতে হবে।” খড়্গপুর রেলের জনসংযোগ আধিকারিক আদিত্য চৌধুরীর আশ্বাস, “আগামী দিনে পরিস্থিতি বুঝে নিশ্চয়ই ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy