Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
High Tide

জোয়ারে শান্তই রইল তিন নদী

সেই মতো কিছু বাসিন্দা সরকারি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয়ও নেন। তবে এ দিন ভরা কটালের সময়  জোয়ারের জলের উচ্চতা নদী বাঁধের বেশ খানিকটা নীচেই ছিল।

শুক্রবার তেমন জলোচ্ছ্বাস হয়নি। পুলিশের নজর এড়িয়ে দিঘার সৈকতে সমুদ্র উপভোগ পর্যটকদের।

শুক্রবার তেমন জলোচ্ছ্বাস হয়নি। পুলিশের নজর এড়িয়ে দিঘার সৈকতে সমুদ্র উপভোগ পর্যটকদের। ছবি: কিংশুক আইচ

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক ও নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২১ ০৫:৫৪
Share: Save:

সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকার পাশাপাশি জেলার তিন নদী তীরবর্তী এবং বাঁধ সংলগ্ন অঞ্চলে ভয় ছিল জল উপচে যাওয়ার। তবে পূর্ণিমার ভরা কটালের সময়ে পুনরাবৃত্তি হল না শুক্রবার। অমাবস্যার ভরা কটালের জোয়ারের সময় নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেলেও তা ছাড়িয়ে প্লাবিত হল না পার্শ্ববর্তী এলাকা।

পূর্ব মেদিনীপুরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিনটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নদী হল রূপনারায়ণ, হুগলি ও হলদি। এই সব নদীগুলির বাঁধ বা পাড় ছাপিয়ে গত ২৬ মে ভেসেছিল মহিষাদল ব্লকের মায়াচর, অমৃতবেড়িয়া, তমলুক শহরের উত্তরচড়া ও দক্ষিণচড়া শঙ্করআড়া, আবাসবাড়ি চর, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের আচাইপুর, জামিত্যা, সোয়াদিঘি, কোলাঘাট শহর, নন্দকুমার ব্লকের নরঘাট ও চণ্ডীপুর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা।

সেচ দফতরের তরফে ক্ষতিগ্রস্ত নদী বাঁধগুলি যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামতি করা হচ্ছিল। পাশাপাশি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে ওই সব বাসিন্দাদের ত্রাণ শিবিরে চলে যাওয়ার জন্য মাইক প্রচার করা হয়েছিল। সেই মতো কিছু বাসিন্দা সরকারি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয়ও নেন। তবে এ দিন ভরা কটালের সময় জোয়ারের জলের উচ্চতা নদী বাঁধের বেশ খানিকটা নীচেই ছিল। ফলে আপাতত জলোচ্ছ্বাসের বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছে মায়াচর, অমৃতবেড়িয়া, তমলুক শহরের উত্তরচড়া, দক্ষিণচড়ার মতো আর বেশ কিছু এলাকা।

মায়াচরে রূপনারায়ণের ক্ষতিগ্রস্ত নদী বাঁধ মেরামতির কাজ চালাচ্ছিল সেচ দফতর। সেখানে বৃহস্পতিবার সারাদিন এবং রাতে জেনারেটর চালিয়ে বাঁধ মেরামতির কাজ চলে। শুক্রবার সকালে অমাবস্যার জোয়ারের জলের উচ্চতা কম থাকায় স্বস্তি পান মায়াচের বাসিন্দারা। মায়াচর পশ্চিম পল্লির বাসিন্দা সুশান্ত বাড় বলেন, ‘‘ইয়াসের দিনের জোয়ারের তুলনায় এ দিন জলের উচ্চতা প্রায় দু’ফুট কম ছিল। ঝোড়ো বাতাসও ছিল না। ফলে জলোচ্ছ্বাস হয়নি।’’

নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের ভেকুটিয়া, কালিচরণ পুর কেন্দেমারি, সোনাচূড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রভূত ক্ষতি হয়েছিল ইয়াসে। নন্দীগ্রামে এ দিন সকাল থেকেই শুরু হয়। ফলে সিঁদুরে মেঘ দেখছিলেন নন্দীগ্রামের নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষজন। নন্দীগ্রাম-১ ব্লক প্রশাসনের তরফে আগাম চারটি ত্রাণ শিবির প্রস্তুত করা হয়েছিল। তবে সেই শিবিরের এ দিন প্রয়োজন হয়নি। মনুচকে এবং পঞ্চম খণ্ড জলপাই— এই দুটি অঞ্চলে হলদি নদীতে জলস্তর কিছুটা বেড়ে গেলেও জল লোকালয়ে প্রবেশ করেনি।

এ দিন এলাকা পরিদর্শনে যান নন্দীগ্রাম-১ এর বিডিও সুমিতা সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘আগাম ত্রাণ শিবিরগুলি তৈরি রাখা হয়েছিল। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে সে রকম কোনও ক্ষয়ক্ষতি এ দিন হয়নি। কোনও মানুষকে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতেও হয়নি।’’ এ দিন হলদিয়া, সুতাহাটা ব্লকের এড়িয়াখালি গ্রাম, হলদিয়া পুরসভার-৭ নম্বর ওয়ার্ডের রূপনারায়ণ চক, শালুকখালি ও ঝিকুরখালি এলাকাতেও জলস্তর তেমন বাড়েনি।

আগামী ২৬ জুন ফের রয়েছে পূর্ণিমার কটাল। তার আগে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের মেরামতির দাবি করছেন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। এ ব্যাপারে সেচ দফতরের পূর্ব মেদিনীপুরে বিভাগের নির্বাহী বাস্তুকার অনির্বাণ ভট্টাচার্য এদিন বলেন, ‘‘আগামী পূর্ণিমার কটালের জোয়ারের আগে নদী বাঁধগুলির মেরামতির কাজ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। ভরা কটালের সময় ছাড়াও সারা বর্ষাকাল ধরে বাঁধে নজরদারি চলবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Rupnarayan River High Tide Hoogly River Haldi River
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy