Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus

করোনা-যুদ্ধে নেই পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটর

প্রশাসনের অবশ্য দাবি, জেলায় পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটরই রয়েছে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২০ ০০:০৬
Share: Save:

করোনা সংক্রমণে তীব্র শ্বাসকষ্টের রোগীকে বাঁচাতে ভেন্টিলেটর ছাড়া গতি নেই। অথচ পশ্চিম মেদিনীপুরে পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটরই নেই! সূত্রের খবর, জেলার সরকারি হাসপাতালগুলিতে সব মিলিয়ে ২৫টি ভেন্টিলেটর রয়েছে। তার মধ্যে সবগুলি আবার সচল নয়!

প্রশাসনের অবশ্য দাবি, জেলায় পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটরই রয়েছে। জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘এখানে পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটর রয়েছে। এ নিয়ে কোনও সমস্যা নেই।’’ একই দাবি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডল এবং জেলার জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্রের। শ্যামপদ আরও জুড়ছেন, ‘‘প্রয়োজন হলে আরও ভেন্টিলেটর রাজ্য থেকে আনানো হবে।’’ জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের আবার ব্যাখ্যা, খুব কম সংখ্যক রোগীকেই ভেন্টিলেটরে রাখার প্রয়োজন পড়ে। করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সঙ্কটজনক অবস্থায় ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হয় প্রায় ৩ শতাংশের। ফলে, সমস্যার কিছু নেই।

বাস্তব পরিস্থিতি অবশ্য বলছে জেলায় যে হারে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছে, সেই অনুপাতে এমনিতেই ভেন্টিলেটরের সংখ্যা কম। কয়েকটি ভেন্টিলেটর আবার অচল হয়ে পড়ে রয়েছে। সেগুলি মেরামতের প্রয়োজন। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় চালু হওয়া শালবনি করোনা হাসপাতালে (লেভেল- ৪) ‘হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট’ (এইচডিইউ) এবং ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) চালুর কথা। এই করোনা হাসপাতাল চালুর সময় মাত্র ২টি ভেন্টিলেটর ছিল, তা-ও আবার নিওনেটাল, অর্থাৎ নবজাতকদের জন্য। শেষে জেলাশাসকের নির্দেশে অন্য হাসপাতাল থেকে ৪টি ভেন্টিলেটর আনাতে হয়েছে। ওই ৪টির মধ্যে ১টি ছিল লেভেল-১ করোনা হাসপাতালে, ৩টি ছিল লেভেল-২ করোনা হাসপাতালে।

কোথায় ক’টি

• ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি, এইচডিইউ: ৪
• খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল, ট্রমা কেয়ার ইউনিট: ৩
• ডেবরা সুপার স্পেশালিটি, সিসিইউ: ৩
• শালবনি সুপার স্পেশালিটি, সিসিইউ এবং এইচডিইউ: ৬
• মেদিনীপুর মেডিক্যাল, সিসিইউ: ৯

তথ্যসূত্র: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর

দিন কয়েক হল, লেভেল-২ হাসপাতালটি বন্ধ হয়েছে। জানা যাচ্ছে, সেখানে এক দিন এমন পরিস্থিতি হয়েছিল যে ৬ জন রোগীকে ভেন্টিলেটরে রাখার প্রয়োজন পড়েছিল, অথচ ভেন্টিলেটর সচল ছিল তিনটি। ঘাটাল সুপার স্পেশালিটিতে ৪টি ও খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ৩টি ভেন্টিলেটর রয়েছে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১২টি ভেন্টিলেটর ছিল। এর মধ্যে ৩টি লেভেল-২ করোনা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। পরে সেগুলি শালবনিতে পাঠানো হয়েছে। এখন মেডিক্যালে ৯টি ভেন্টিলেটর রয়েছে।

চিকিৎসক মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর কিংবা পশ্চিমবঙ্গ নয়, ১৩০ কোটির এই দেশ জুড়ে সরকারি হাসপাতালে ভেন্টিলেটর যথেষ্ট নেই। মাত্র ৪২ হাজার ভেন্টিলেটর রয়েছে। ২০১১ সালের জনসংখ্যা অনুযায়ী, পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রায় ৪৭ লক্ষ মানুষের বসবাস। অথচ সরকারি হাসপাতালে ভেন্টিলেটর রয়েছে মাত্র ২৫টি। অর্থাৎ, সরকারিস্তরে ১ লক্ষ ৮৮ হাজার

মানুষ পিছু একটি করে ভেন্টিলেটর রয়েছে জেলায়।

জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে তিনশো ছাড়িয়েছে। আক্রান্তদের অনেকের শ্বাসকষ্টের উপসর্গ ছিল। এমনকি, করোনা সংক্রমিত যে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে জেলায়, তাঁদের একাংশেরও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ ছিল। ফলে, অনেকে মনে করছেন, জেলায় পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটর না থাকলে আগামী দিনে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইটা সাধ্যের বাইরে চলে যেতে পারে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের আশ্বাস, ‘‘সরকারি হাসপাতালগুলিতে ভেন্টিলেটরের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা হবে। প্রয়োজনে রাজ্যের কাছ থেকে আরও কিছু ভেন্টিলেটর চাওয়া হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Ventilators COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy