Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Non Lethal Weapon Training

প্রাণ বাঁচিয়ে অস্ত্র প্রয়োগ, বাকচায় শিক্ষা পুলিশকে

জেলা পুলিশ জানাচ্ছে, অশান্তির পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে অনেক সময় লাঠিচার্জ করেও বিক্ষোভকারীদের বাগে আনা যায় না। সে সময় জল কামান, কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো বা রাবার বুলেট ছুড়ে ক্ষুদ্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার রেওয়াজ রয়েছে।

পুলিশের অ-প্রাণঘাতী অস্ত্রের (নন-লেথাল উইপন) প্রশিক্ষণ শিবির।

পুলিশের অ-প্রাণঘাতী অস্ত্রের (নন-লেথাল উইপন) প্রশিক্ষণ শিবির। ছবি টুইটার।

আনন্দ মণ্ডল
ময়না শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:০৩
Share: Save:

কখনও যুযুধান রাজনৈতিক দলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ। কখনও দুর্ঘটনার জেরে ক্ষুদ্ধ জনতার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো। বারবার জেলার বাকচা এলাকা খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে। এক সময় জেলার নন্দীগ্রাম, খেজুরির মতো যে সব এলাকা আশন্তি-রাজনীতির ভরকেন্দ্র হিসাবে পরিচিত ছিল, গত কয়েক বছরে সেই পরিচিতি পেয়েছে ময়নার বাকচা এলাকা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটতে হয়েছে পুলিশকে। এই বাকচাতেই এবার হল পুলিশের অ-প্রাণঘাতী অস্ত্রের (নন-লেথাল উইপন) প্রশিক্ষণ শিবির।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের তরফে রবিবার ময়না থানার ওই প্রশিক্ষণ হয়েছে বাকচার বিবেকানন্দ জনসেবা হাইস্কুল ময়দানে। প্রশিক্ষণে অংশ নেন কনস্টেবল, সাব-ইনস্পেক্টর, অ্যাসিট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর পদ মর্যাদার অন্তত ৬০ জন পুলিশ আধিকারিক-কর্মী। সেখানে তাদের স্মোক, টিয়ার গ্যাস শেল, রাবার বুলেট এবং গ্রেনেড ব্যবহার হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। দমকল বাহিনী ও চিকিৎসক দলের উপস্থিতিতে এবং কড়া নিরাপত্তায় রবিবার দিনভর ওই প্রশিক্ষণ হয়েছে।

জেলা পুলিশ জানাচ্ছে, অশান্তির পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে অনেক সময় লাঠিচার্জ করেও বিক্ষোভকারীদের বাগে আনা যায় না। সে সময় জল কামান, কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো বা রাবার বুলেট ছুড়ে ক্ষুদ্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার রেওয়াজ রয়েছে। সে জন্য পুলিশের আধিকারিক এবং কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। রবিবার তেমনই একটি প্রশিক্ষণ হয়েছে। কিন্তু পুলিশ সূত্রে খবর, সাধারণত পুলিশের ওই প্রশিক্ষণ হয়ে জেলা পুলিশ লাইন ময়দানে বা জেলা ও মহকুমা সদর শহরের কোনও মাঠে। সম্প্রতি নিমতৌড়িতেও জেলা পুলিশ লাইনে তমলুক, নন্দকুমার, কোলাঘাট থানার পুলিশ আধিকারিক-কর্মীদের নিয়ে ওই প্রশিক্ষণ হয়েছে। তা হলে ময়না থানার পুলিশ আধিকারিক-কর্মীদের নিয়ে ওই প্রশিক্ষণ আলাদা করে হচ্ছে কেন?

সেই প্রশ্নের জবাবে বাকচার অতীত কিছুটা স্মরণ করতে হবে বলে জানাচ্ছে রাজনৈতিক মহল। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকেই তৃণমূল এবং বিজেপির সংঘর্ষে বারের বাকচা উত্তপ্ত হয়েছে। এলাকায় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে কোণঠাসা করেছে গেরুয়া শিবির। পুলিশেরও দাবি, বাকচার একটি প্রত্যন্ত ও রাজনৈতিক সংঘর্ষপ্রবণ এলাকা। রাজনৈতিক সংঘর্ষে মারধর, বাড়ি ভাঙচুর, লুঠপাট, বোমাবাজি থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছিল এখানে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে পুলিশ বাহিনীকেও আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে একাধিকবার। এর ফলে ঘটনাস্থলে যাওয়া পুলিশে কাছে ক্ষুদ্ধ লোকজনের উপর আক্রমণ না চালিয়েই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া বেশ কঠিন পরীক্ষা হিসেবে
ধরা হয়েছে।

পুলিশ বাহিনী কী ধরনের অ-প্রাণঘাতী বিভিন্ন অস্ত্রের ব্যবহার করে ওই এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পারবে, সে জন্যই ময়না পুলিশকে আলাদা করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি। এতে এলাকাবাসীর পুলিশের আস্থা অর্জনের পাশাপাশি, গোলমালের ঘটনায় জড়িতদের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তাও দেওয়া হচ্ছে। যদিও তমলুকের এসডিপিও সাকিব আহমেদ বলেন, ‘‘বাকচায় পুলিশের ওই প্রশিক্ষণ রুটিন মাফিক হয়েছে। আগে তমলুকের নিমতৌড়িতে কয়েকটি থানার পুলিশকেও ওই প্রশিক্ষণ হয়েছে। এবার ময়না থানার পুলিশ আধিকারিক-কর্মীদের নিয়ে বাকচায় প্রশিক্ষণ হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bakcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy