Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
মকরামপুর বিস্ফোরণের বছর পার

মৃত তিন, ধরা পড়েনি কেউই

মৃতদের পরিবারের লোকজন স্থানীয় তৃণমূল নেতা সূর্যকান্ত অট্ট, অঞ্চল সভাপতি লক্ষ্মী শীট, যুব নেতা অমিত মণ্ডল, কিঙ্কর চক্রবর্তী, রঞ্জিত বোস-সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে নারায়ণগড় থানায় অভিযোগ করে।

বিস্ফোরণের পরে। ফাইল চিত্র

বিস্ফোরণের পরে। ফাইল চিত্র

বিশ্বসিন্ধু দে
মকরামপুর শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৯ ০০:৩৬
Share: Save:

কেটে গেল এক বছর। তিন জনের মৃত্যুর পরেও গ্রেফতার হয়নি একজনও।
২০১৮ সালের ২৩ অগস্ট সকালে বিস্ফোরণে ভেঙে পড়েছিল মকরামপুর বাজারের তৃণমূল পার্টি অফিস। সেই ঘটনায় তিন জনের মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছিল সুদীপ্ত ঘোষের। ওই দিন বিকেলেই হাসপাতালে মারা যান বিমল চৌধুরী। কয়েকদিন পরে হাসপাতালে মারা যান বিকাশ ভুঁইয়া। সেই ঘটনার পিছনে উঠে আসে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের কথা।

মৃতদের পরিবারের লোকজন স্থানীয় তৃণমূল নেতা সূর্যকান্ত অট্ট, অঞ্চল সভাপতি লক্ষ্মী শীট, যুব নেতা অমিত মণ্ডল, কিঙ্কর চক্রবর্তী, রঞ্জিত বোস-সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে নারায়ণগড় থানায় অভিযোগ করে। যে অফিসে বিস্ফোরণ হয় সেটি লক্ষ্মী শীটের পার্টি অফিস নামে পরিচিত ছিল। ঘটনার পরে লক্ষ্মীকে অঞ্চল সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেয় দল। ঘটনার পর তৃণমূলের নারায়ণগড় ব্লক সভাপতি মিহির চন্দ সরাসরি সূর্যকান্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, মকরামপুরের প্লাস্টিক কারখানা নিজেদের দখলে নিতে ওই অফিসে বোমা মজুত করা হয়েছিল। সূর্যকান্ত অট্ট-সহ বাকি যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল তাঁরা সবাই সেই সময়ে দাবি করেছিলেন, বিস্ফোরণের ঘটনায় তাঁদের কোনও যোগ নেই।

ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ ও সিআইডি। সেই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মৃতদের পরিবারের সদস্যরা অভিযুক্তদের শাস্তি চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। সেই মামলা চলছে।
বিস্ফোরণে যাঁরা মারা গিয়েছিলেন তাদের পরিবারের অবস্থা এখন কেমন?

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণে যে তিন জন মারা যান তাঁরা সবাই মকরামপুর পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা এবং তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে সুদীপ্তের এক শিশু সন্তান রয়েছে। ২৯ অগস্ট হাসপাতালে বিকাশের মৃত্যু হয়েছিল। তার আগের দিনই তাঁর পুত্র সন্তান জন্মেছিল। বিমল ছিলেন অবিবাহিত। তাঁর বাবা-মা বর্তমান। ঘটনার এক বছর পরেও এক জনও গ্রেফতার না হওয়ায় তিন জনের পরিবারের সদস্যরাই হতাশ। তবে একই সঙ্গে তাঁদের আশা, আদালতে বিচার মিলবেই।

বিকাশের স্ত্রী মৌসুমীর দাবি, ‘‘অভিযুক্তদের শাস্তি চাই। সরকারি চাকরিও খুব দরকার।’’ বিমলের মা পদ্মার অভিযোগ, ‘‘আমার একমাত্র ছেলেকে মিটিং হবে বলে ডেকে নিয়ে গিয়ে মেরে দিয়েছিল। এই ঘটনায় যারা জড়িত তাদের কোনও শাস্তি হবে না কেন?’’ সুদীপ্তের স্ত্রী সুপ্রিয়ার দাবি, ‘‘দু’বছরের ছেলেকে নিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। সহযোগিতা পাইনি। চাকরি দেবে বলেও দেয়নি।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘ঘটনার পরে অভিযুক্তেরা বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে গিয়েছিল। এখনও কোনও নিরাপত্তা পাইনি।’’
বিস্ফোরণে এক বছর পরেও দলীয় কর্মীদের পাশে দাঁড়াল না কেন দল? ব্লক সভাপতি মিহির চন্দের শনিবারের দাবি, ‘‘দল তিনটি পরিবারকেই কম-বেশি আর্থিক সাহায্য করেছে। চাকরির জন্য সুপারিশও করা হয়েছে। দোষীদের গ্রেফতারের বিষয়টি প্রশাসন দেখছে। এ বিষয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই।’’ জেলা সভাপতি অজিত মাইতিও বলছেন, ‘‘তিনটি পরিবার আর্থিক সাহায্য ইতিমধ্যেই পেয়েছেন। চাকরি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Makrampur Blast TMC CID Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy