সংস্কারের কাজ চলছে ত্রিবেণিসঙ্গম অতিথি নিবাসে। নিজস্ব চিত্র
তাজপুর, মন্দারমণির অনেক আগে থেকেই পরিচিতি গেঁওখালির। হুগলি আর হলদি নদী এখনে হাত ধরেছে রূপনারায়ণ নদের। তিনজনের মিলনে এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের হাতছানি এড়ানো কঠিন ভ্রমণপিপাসুদের কাছে। অথচ তাজপুর, মন্দারমণির উন্নয়নে কাজ হলেও গেঁওখালি এখনও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে দুয়োরানিই থেকে গিয়েছে। এমন অভিযোগ স্থানীয় মানুষেরই। তাঁদের অভিযোগ, পর্যটনের যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এখানে সে ভাবে পরিকাঠামোই গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রশাসন উদাসীন।
সামনেই বড়দিনের ছুটি। তারপর ইংরেজি নতুন বর্ষবরণ। ছুটি আর উৎসবের তালিকায় একে একে রয়েছে পৌষ পার্বণ, নেতাজি জন্মজয়ন্তী, প্রজাতন্ত্র দিবস। শীতের মরসুমে বেড়ানোর পাশাপাশি পিকনিকের আয়োজনও হয় প্রচুর। সপ্তাহান্তে দু’একদিনের ছুটি মানেই কাছেপিঠে কোথাও ঘুরে আসা। কিন্তু পর্যটকদের তৃপ্তি দিতে গেঁওখালিতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের অভাব না থাকলেও অভাব রয়েছে অনেক কিছুরই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গেঁওখালি বাজার ছাড়িয়ে খানিকটা দূরে রয়েছে ‘ত্রিবেণিসঙ্গম’ নামে একটি মাত্র অতিথি নিবাস। হলদিয়া উন্নয়ন পর্যদের তরফে এই অতিথি নিবাস বানানো হয়েছিল বছর কয়েক আগে। কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ নদীর ধার ঘেঁষে গড়ে ওঠা এই অতিথি নিবাসে রাত কাটাতে এক সময় ভিড় জমাতেন পর্যটকেরা। কিন্তু এ বছর সেই উপায়টুকুও নেই। কেননা, অতিথিনিবাস সংস্কার করা হচ্ছে। আর কোনও থাকার বন্দোবস্ত নেই বললেই চলে। গেঁওখালির অদূরে বামনচকে একটি সরকারি বাংলো থাকলেও তা সাধারণের কাজে আসে না বলেই অভিযোগ পর্যটকদের। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলোটি সেচ দফতরের মাধ্যমে এবং ত্রিবেণিসঙ্গম অতিথিনিবাস হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের কাছে অনলাইন পদ্ধতিতে বুকিং করতে হয়। কিন্তু এ বছর এখনও অনলাইন বুকিং বন্ধ রেখেছে এইচডিএ। ফলে গেঁওখালি বেড়াতে এসে তিন নদীর সঙ্গমে রাত কাটানো দূরঅস্ত, সূর্যাস্ত দেখাও সম্ভব হবে কি না, সংশয়ে পর্যটকেরা।
শীতের মরসুমে বেড়াতে বা পিকনিক করতে তমলুক ও হলদিয়া ছাড়াও হাওড়া জেলার বিভিন্ন প্রান্ত এমনকী কলকাতা থেকেও প্রচুর মানুষ গেঁওখালিতে আসেন। যাঁরা রূপনারায়ণ নদ পেরিয়ে হাওড়া থেকে আসেন তাঁদের কাছে বড় সমস্যা গেঁওখালির ফেরিঘাট। ঘাটে কাঠের পাটাতন পেরিয়ে লঞ্চে ওঠানামা করতে হয়। যেখানে সব সময়েই দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
মহিষাদল ব্লক প্রশাসনের দাবি, ওই এলাকায় সম্প্রতি পরিকাঠামোর উন্নতিতে জোর দেওয়া হয়েছে। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ সেখানে একটি পার্ক গড়ে তুলছে। সুইমিংপুল সহ নানা বিনোদনের ব্যবস্থা থাকার কথা। তবে পার্ক নির্মাণের কাজ কিছুটা বাকি রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মহিষাদলের বিডিও জয়ন্ত কুমার দে বলেন, ‘‘ওই এলাকায় পরিকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। ত্রিবেণিসঙ্গম অতিথি নিবাস ও পুরনো পার্ক সংস্কার এবং একটি নতুন আধুনিক পার্ক বানানোর কাজ চলছে। গেঁওখালি থেকে পর্যটকদের যাতায়াতে সমস্যা মেটাতে পল্টন জেটি বানানো হবে।’’
কিন্তু কেন এত বছর গেঁওখালিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে সে ভাবে তুলে ধরা হয়নি, সে প্রশ্নের উত্তরে পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তিলক কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গেঁওখালির উন্নয়নে রাজ্য সরকার যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। ধাপে ধাপে গেঁওখালিও একদিন ঘুরে দাঁড়াবে এবং পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy