সিসিক্যামেরার এই ফুটেজের সূত্রেই উদ্ধার নবজাতক। নিজস্ব চিত্র
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চুরি গিয়েছিল সদ্যোজাত। ছ’ঘণ্টার মধ্যে সেই সদ্যোজাতকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিল পুলিশ। আটক করল অভিযুক্ত এক মহিলাকে।
সৌজন্যে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। সেখানে দেখা গিয়েছিল, রবিবার দুপুর ১২টা নাগাদ ওই সদ্যোজাত শিশুপুত্রকে নিয়ে প্রসূতি বিভাগ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন এক মহিলা। ওই ছবি দেখে শুরু হয় তল্লাশি। পুলিশের দাবি, এ দিন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ মেদিনীপুরের একটি এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় সদ্যোজাতকে। থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ওই মহিলাকে। তবে তদন্তে স্বার্থে ওই মহিলার নাম, কোথা থেকে শিশুপুত্র উদ্ধার হল তা বলতে নারাজ পুলিশ। তবে সকলের নজর এড়িয়ে কী ভাবে দিনে দুপুরে ওই মহিলা শিশু চুরি করে পালালেন তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এই চুরির সঙ্গে হাসপাতালের কোনও কর্মী বা অন্য কেউ জড়িত কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে তা-ও। জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তে সবদিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ তবে দিনের শেষে ছেলেকে ফিরে পেয়ে খুশি মা সুমিত্রা খামরই ও তাঁর পরিবার। সুমিত্রার শাশুড়ি মাধবী বলেন, ‘‘বাচ্চাকে ফিরে আমরা ভীষণ খুশি।’’
প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে শনিবার রাতে মেদিনীপুর মেডিক্যালে আসেন সুমিত্রা। সুমিত্রার শ্বশুরবাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা-৩ ব্লকের রসকুণ্ডুর কাঞ্চনগিরিতে। ওই দিন সন্ধ্যায় স্থানীয় হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকেই ওই প্রসূতিকে মেডিক্যালে পাঠানো হয়। মেডিক্যালে প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করানো হয় সুমিত্রাকে। পরিজনেরা জানিয়েছেন, ওই দিন রাতে স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে তাঁর। পুত্র সন্তানের জন্ম দেন সুমিত্রা। সদ্যোজাতকে মায়ের কাছেই দেওয়া হয়। দেখভালের জন্য সুমিত্রার কাছে ছিলেন তাঁর শাশুড়ি মাধবী। এ দিন দুপুরে মাধবী ওয়ার্ড থেকে বেরোন। খাওয়ার জন্য তিনি স্থানীয় এক হোটেলে গিয়েছিলেন। তখনই সুমিত্রা তাঁকে জানান, তাঁর সদ্যোজাতের খোঁজ মিলছে না। শুনে হোটেল থেকেই ওয়ার্ডে ছুটে যান মাধবী। তাঁর কথায়, ‘‘বৌমা ঘুমিয়ে গিয়েছিল। ঘুম ভাঙতে দেখে তাঁর কাছে বাচ্চা নেই।’’ মাধবীর দাবি, শিশু চুরির সঙ্গে জড়িত আয়াদের কয়েকজনই। তাঁর কথায়, ‘‘এখানে আয়াদের দাপট চলে। আমাদেরও আয়া রাখতে বলা হয়েছিল। আমরা খুবই গরিব। কোথায় পাব এত টাকা।’’ সুমিত্রার স্বামী অভি খামরই বলেন, ‘‘একটা ছেলেকে বিছানা থেকে তুলে নিয়ে চলে যাওয়া হল। অথচ, ওয়ার্ডের কর্মীরা বলছে ওরা না কি কিছুই জানে না। কী করে হয় এটা?’’
এ দিন দুপুরে হাসপাতালের প্রসূতি ও শিশু বিভাগের ভবন ‘মাতৃমা’র সামনে বিক্ষোভ দেখান অন্য প্রসূতির পরিজনেরা। মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। হাসপাতালের ফেসিলিটি ম্যানেজার সঞ্জীব গোস্বামীও জানান, কেউ দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সদ্যোজাত ফিরেছে মায়ের কোলে। হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে সকলে। তবে এখনও বাকি পুলিশের তদন্ত। আর হাসপাতালের প্রতিশ্রুতি পালন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy