তালিকায় শ্যামল মাইতির নাম। নিজস্ব চিত্র
মৃত্যুর বারো বছর পরেও সেই ব্যক্তির নামে সরকারি প্রকল্পে পানের বরজের জমা টাকা এল। তৃণমূলের পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতে এমন ভুতুড়ে কাণ্ডে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে সরব পঞ্চায়েত সদস্যদের একাংশ। আরও অভিযোগ, এলাকার উন্নয়ন নিয়ে প্রধান কোনও আলোচনাই করেন না পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে।
পটাশপুর-১ ব্লকের চিস্তিপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে ১২ জন সদস্যের মধ্যে ১০ জন তৃণমূলের ও দু’জন নির্দল। পঞ্চায়েতে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে প্রথম নির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রধান মেঘলা বেরাকে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দর্শীয়ে ছুটি নিতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছিল শাসক দলেরই বিরুদ্ধে। ছুটির মেয়াদ শেষে প্রাক্তন প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে নতুন করে আনন্দ সাউকে প্রধান নির্বাচিত করা হয়। অভিযোগ এলাকার উন্নয়ন নিয়ে প্রধান নির্দল পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে কোনও বৈঠক করেন না। তাঁদের কোনও কিছু জানান না। এ বার পঞ্চায়েত থেকে বারো বছর আগে মৃত এক ব্যক্তির নামে পান বরজের টাকা মঞ্জুর হয়েছে। প্রকল্পের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর।
পঞ্চায়েতের ৫ নম্বর সংসদ পালপাড়া গ্রামের শ্যামল মাইতি বারো বছর আগে মারা গিয়েছেন। তাঁর নামই নতুন পান বরজ প্রাপকের তালিকায় উঠেছে। মৃতের পরিবার সেই বরজ তৈরির কাজও শুরু করেছে। সরকারি প্রকল্পে একটি পান বরজ তৈরির জন্য ১.৬৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। একশো দিনের কাজের প্রকল্পে শ্রমিক ও বরজ তৈরির আনুষঙ্গিক সামগ্রী মিলিয়ে এই টাকা পায় উপভোক্তারা। অভিযোগ, অনেককে পুরনো বরজ দেখিয়ে ওই টাকা তুলে নিচ্ছে। কেউ অন্যের পান বরজ দেখিয়েও টাকা নিচ্ছে। এর পিছনে পঞ্চায়েতকে কাটমানি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
আমপানে পালপাড়া সংসদে ৫২ জনের নামে পান বরজের ক্ষতিপূরণ বাবদ পাঁচ হাজার টাকা করে এসেছে। অভিযোগ তিনজন বাদে ৪৯ জনের আদৌ কোনও পান বরজ নেই। সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত অফিসের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী ব্লক প্রশাসন নতুন বরজ প্রাপকদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। সেখানে কী করে একজন মৃত ব্যক্তির নামে নতুন পান বরজের জন্য টাকা বরাদ্দ হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই ঘটনায় পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন বিরোধী পঞ্চায়েত সদস্যরা। অবিলম্বে পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন তাঁরা। পালপাড়া সংসদে নির্দল পঞ্চায়েত সদস্য অপর্ণা মেইকাপ বলেন, ‘‘প্রধান ও তৃণমূলের নেতারা শ্যামল মাইতির মতো মৃত ব্যক্তির নামে প্রকল্পের টাকা দিয়ে কমিশন নিচ্ছে। এলাকায় উন্নয়ন না করে প্রকল্পের টাকা এই ভাবে আত্মসাত করা হচ্ছে। প্রতিবাদ করলেও আমাদের কোনও কথাই শুনছে না প্রধান ও উপপ্রধান। ব্লক প্রশাসন সব জেনেও চুপ।’’
অভিযুক্ত পঞ্চায়েত অঞ্চল প্রধান আনন্দ সাউয়ের দাবি, ‘‘মৃত ব্যক্তি নামে পান বরজের টাকা বরাদ্দের বিষয়টি জানা নেই। এ এ ব্যাপারে খোঁজ নেব। তবে পঞ্চায়েত স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করে।’’
পটাশপুর-১ এর বিডিও সুভাষ কুমার ঘোষ বলেন, ‘‘এমন ঘটনা আমাদের জানা নেই। অবশ্যই খোঁজ নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy