রুজির টানে বিদেশে গিয়ে প্রাণ খোয়াতে হল পূর্ব মেদিনীপুরের দুই পরিযায়ী শ্রমিককে। উজবেকিস্তানের তাসকেন্ত শহরে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে গিয়ে তুষারপাতে মারা গিয়েছেন মহিষাদলের চকদ্বীপা গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজনগরের বাসিন্দা সাইফুদ্দিন মাইতি (২৮)। এগরার চোরপালিয়ার বাসিন্দা রাজীব করনেরও (৩৪) সেখানে মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দুই পরিবারই দেহ ফেরানোর তোড়জোড় শুরু করেছে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাইফুদ্দিনের বাবার নাম মুজিবর মাইতি। মাস ছয়েক আগে এই যুবক ফিটারের কাজে উজবেকিস্তানে গিয়েছিলেন। ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা নাগাজ তুষারপাতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবার জানতে পেরেছে। রোজকার মতোই কাজ শুরুর আগে জড়ো হয়েছিলেন ভারতীয় শ্রমিকরা।সব মিলিয়ে দু'শোরও বেশি শ্রমিক ছিলেন। তখনই প্রচণ্ড তুষারপাতে শ্রমিকদের ছাউনি ভেঙে পড়ে। তার নীচে ছাপা পড়ে যান অনেকে। মৃত্যু হয় সাইফুদ্দিনের।
বুধবার সাইফুদ্দিনের স্ত্রী রেজিনা বিবি উজবেকিস্তানের ভারতীয় দূতাবাসকে এফিডেফিট করে চিঠি পাঠিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর দুই বছরের শিশুসন্তান রয়েছে। ফলে, তাঁর পক্ষে স্বামীর দেহ আনা সম্ভব নয়। দেহ পেরাতে ভারতীয় দূতাবাসের সাহায্য প্রার্থনা করেছেন তিনি। চিঠি পাঠিয়ে ভারতীয় দূতাবাসের কাছে একই অনুরোধ জানিয়েছেন রাজীবের স্ত্রী দীপালি করনও। রাজীবে ভাই সঞ্জীব করন বলেন, ‘‘দিল্লি থেকে দাদা যে সংস্থার মাধ্যমে উজবেকিস্তান গিয়েছিল, তারা জানিয়েছে দাদার মৃত্যু হয়েছে। তবে সেই দেশের প্রশাসন বা আমাদের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এ নিয়ে কোনও তথ্য এখনও জানানো হয়নি। ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টায় ফোনে পরিবারের সঙ্গে শেষবার দাদার কথা হয়েছিল।’’
হলদিয়া ব্লকের পূর্ত ও খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ শেখ শামিম আলি বলেন, "ভারতীয় দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। কলকাতায় যাতে ওর পরিবার দেহ নিতে যেতে পারে সেই অনুরোধ করে ই-মেল করা হয়েছে।" পরিবারের দাবি, যে সংস্থার মাধ্যমে সাইফুদ্দিন পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজে গিয়েছিলেন, তারা পেশাদার নয়। শ্রমিকদের যে ছাউনির নীচে তুষারপাতের সময় আশ্রয় নিতে হত তা-ও মজবুত নয়। ফলে, তুষার জমে ভেঙে পড়ে সেই ছাউনি। সব মিলিয়ে চার ভারতীয় শ্রমিক মারা যান। সেই তালিকাতেই রয়েছেন জেলার এই দু'জন।
মৃত সাইফুদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে এ দিন কথা বলেছেন মহিষাদলের বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী। তাঁর আশ্বাস, "দেহ ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy