—প্রতীকী চিত্র। Sourced by the ABP
খাতায়-কলমে প্রাক প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রত্যেক পড়ুয়াকে একটি শিক্ষাবর্ষে দু’সেট করে স্কুলের পোশাক দেওয়ার কথা রাজ্য সরকারের। কিন্তু চলতি শিক্ষাবর্ষ শেষ হতে চললেও তা হয়নি বেশিরভাগ জেলাতেই। জঙ্গলমহলের জেলা ঝাড়গ্রামেও অনেক পড়ুয়া দু’সেট পোশাক পায়নি। কেউ কেউ তো এক সেট পোশাকও পায়নি। আদৌও কি চলতি শিক্ষাবর্ষের মধ্যে দু’সেট নতুন পোশাক মিলবে! উঠছে প্রশ্ন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, পোশাক বিতরণের দিক এগিয়ে থাকা প্রথম পাঁচটি জেলা হল দার্জিলিং, কালিম্পং, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর। তারপরেই রয়েছে ঝাড়গ্রাম। পোশাক বিতরণের তালিকায় সবচেয়ে শেষ তালিকায় রয়েছে কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, পশ্চিম বর্ধমান ও শিলিগুড়ি। ঝাড়গ্রাম জেলার মধ্যে পোশাক বিতরণের হাল সবচেয়ে খারাপ বিনপুর-১ ব্লকে। এই ব্লকের অধিকাংশ স্কুলে এক সেট করে পোশাক দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি স্কুলে তো আবার এক সেটও পোশাক মেলেনি।
রাজ্য সরকারের নির্দেশে গত বছর থেকে জেলার স্ব-সহায়ক দলের সদস্যদের স্কুলের পোশাক তৈরির জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ঝাড়গ্রাম জেলায় ৭৮টি সঙ্ঘ, ১টি মহাসঙ্ঘের মহিলারা স্কুলে পোশাক তৈরির কাজ করেছেন। ঝাড়গ্রাম জেলায় প্রায় দু'হাজারের বেশি মহিলা এই কাজে যুক্ত রয়েছেন। গত পাঁচ বছরে এই জেলায় স্বনির্ভর গোষ্ঠী বেড়েছে। এতে জেলার মহিলারা আর্থিক ভাবে মহিলারা স্ব-নির্ভরও হচ্ছেন। জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রাম জেলার মহিলারা এখনও পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৩ লক্ষ ১৩ হাজার ১২৪টি স্কুল পোশাকের সেট তৈরি করেছেন। বিতরণ সঠিক ভাবে না হওয়াতেই তৈরি হয়েছে সমস্যা।
ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, চলতি শিক্ষাবর্ষে এই জেলায় মোট ১ লক্ষ ৫৬ হাজার ৫৬২ জন ছাত্র-ছাত্রীকে পোশাক দেওয়ার কথা। এর ফলে প্রাথমিক, জুনিয়র হাইস্কুল, হাইস্কুল মিলিয়ে ২ হাজার ৩৪২টি স্কুলের পড়ুয়ারা উপকৃত হবে। এতদিন দু’টি সেট পোশাক একসঙ্গে পড়ুয়াদের দেওয়া হত। এবার দু’ধাপে এক সেট করে দেওয়া হচ্ছে। এই জেলার মধ্যে জামবনি, ঝাড়গ্রাম গ্রামীণ, নয়াগ্রাম, সাঁকরাইল ও গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকে পোশাক বিতরণের হার ভাল। সবচেয়ে খারাপ বিনপুর-১ ব্লকে। বিনপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনীতিকুমার আখুলি বলছেন, ‘‘২০২৩ সাল শেষ হতে চলল। কিন্তু এখনও এই শিক্ষাবর্ষের এক সেট পোশাকও পায়নি পড়ুয়ারা। এরপরে পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন পডুয়া ভর্তি হবে। কবে পোশাক মিলবে জানি না।’’
শিক্ষকদের একাংশ বলছেন, অধিকাংশ স্কুলেই তৃতীয় পর্বের মূল্যায়ন শুরু হয়ে গিয়েছে। পরীক্ষার পরে পড়ুয়ারা সেভাবে স্কুলে আসে না। তাই পরীক্ষার পরে পোশাক বিতরণ হলে আরও সমস্যা হবে। পোশাক বিতরণ করতে কেন দেরি হচ্ছে? জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘স্কুলের শিক্ষকরা পড়ুয়াদের পোশাক পরিয়ে দেখে নিচ্ছেন। যার ফলে একটু সময় লাগছে।’’ যা শুনে শিক্ষকদের অনেকে বলছেন, স্কুলের পোশাক স্ব-সহায়ক দল থেকে এসে দিয়ে যাচ্ছে। বাচ্চারা পরে না দেখলে কার ছোট হচ্ছে, কার বড়— কীভাবে বোঝা যাবে! পরে সমস্যা হলে তো কাউকে পাওয়া যাবে না।
এই টানাপড়েনের মধ্যে বিষয়টি দ্রুত মেটাতে চাইছে ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসন। জেলা আনন্দধারা প্রকল্পের আধিকারিক বৃহস্পতিবার সুদীপ্ত দেবনাথ বলেন, ‘‘এক সপ্তাহের মধ্যে একশো শতাংশ স্কুলে দু’ সেট করে পোশাক দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy