ন্যায্য মূল্যের দোকানের সামনে। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
আগেই জল ঢুকেছিল ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে। শনিবার তা আরও বেড়েছে। একতলা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল রোগীদের। এ দিন বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ, পানীয় জলের সমস্যাও চূড়ান্ত। রান্নাঘরে জল ঢুকেছে, তাই রোগীদের দেওয়া হয়েছে খিচুড়ি। চরম দুর্ভোগে রোগীর পরিজনেরাও।
হাসপাতাল সুপার কুণাল মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “এই পরিস্থিতির মধ্যেই পরিষেবা দেওয়ার সব রকম চেষ্টা চলছে।” মহকুমা হাসপাতালের পাশেই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। মহকুমা হাসপাতালের এসএনসিইউ সরানো হয়েছে সেখানে। কোমর সমান জল ঠেলে মহকুমা হাসপাতালে যাতায়াত করতেও সমস্যায় পড়ছেন রোগী এবং রোগীর পরিজনেরা। সে ক্ষেত্রে ভরসা দু’টি ট্রাক্টর। নৌকো নামানো হয়নি। নৌকো না-থাকায় কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্সরা, কর্মীরাও সমস্যায় পড়েছেন।
নৌকো নামানো নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে ঘাটাল শহরের অন্যত্রও। ডিভিসি-র জল ছাড়ায় শহরের বিস্তীর্ণ এলাকায় জল বেড়েছে। পুরসভা এই পরিস্থিতিতে যথার্থ পদক্ষেপ করতে পারেনি বলে অভিযোগ তুলেছেন বাসিন্দারা। অব্যবস্থা নিয়ে এ দিন পুরসভার সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বেশ কয়েকজন। শহরবাসীর বক্তব্য, পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৈরি ছিল না পুরসভা। শহরে জলমগ্ন এলাকায় নৌকো নামানো হয়নি। অনেকেই বাড়িতে জলবন্দি হয়ে রয়েছেন।
সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই ঘাটালের একের পর এক এলাকা জলমগ্ন হতে শুরু করে। পরিস্থিতি খারাপ হয় গত বুধবার রাতে। ঘাটালের প্রতাপপুরে শিলাবতীর বাঁধ ভেঙে হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করে। বৃহস্পতিবার ভোরে ভেসে যায় ঘাটাল শহরও। আগেই মহকুমার ২৫টি পঞ্চায়েত এলাকা জলের তলায় চলে গিয়েছিল। বাধা ভাঙায় আরও ১৬টি পঞ্চায়েত এলাকা পুরোপুরি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। হাসপাতাল, বাজার, পুরসভা, থানা— সবই এখন জলের তলায়। বহু এলাকা বিদ্যুৎহীন।
গত এক দশকের মধ্যে ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতি সবথেকে খারাপ হয়েছিল ২০০৭ সালে। তারপরই এ বারের এই পরিস্থিতি। শুক্রবার পর্যন্ত প্রতাপপুরে ৬০- ৬৫ জন জলবন্দি হয়ে ছিলেন। তাঁদের উদ্ধারের ব্যাপারে উদ্যোগী হন জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা, জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। শনিবার তাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শনিবারই ঘাটালে এসেছিলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ট্রাক্টরে করেই দুর্গত এলাকায় পৌঁছন তিনি। সর্বত্র দুর্গতেরা ঠিক মতো সাহায্য পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। কিছু এলাকায় এখনও ত্রাণ পৌঁছয়নি।
প্রশাসনের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, ত্রাণ নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। এ দিনও বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এখনও ঘাটালে রয়েছে। প্রশাসনের আশা, ভারী বৃষ্টি না-হলে ধীরে ধীরে এ বার জল নামতে শুরু করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy