Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
TMC Leaders

দাঁতালের হানায় তছনছ প্রাক্তন তৃণমূল নেতার আম বাগান

সপ্তাহখানেক আগে মেদিনীপুর বন বিভাগের চাঁদড়ার দিক থেকে হাতির দলটি লালগড়ের পডিহার জঙ্গলে ঢুকেছিল।

ভেঙেছে গাছ।

ভেঙেছে গাছ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
লালগড় শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২১ ০৬:১১
Share: Save:

পর পর তিনরাত প্রাক্তন তৃণমূল নেতার সাধের আম বাগান তছনছ করল হাতির দল। অবশেষে বৃহস্পতিবার লালগড় রেঞ্জের বনকর্মীরা রাতভর অভিযান চালিয়ে হাতির দলটিকে এলাকা ছাড়া করলেন। বন দফতর সূত্রের খবর, ৪০টি হাতির দলটিকে লালগড় থেকে কংসাবতী নদী পার করিয়ে বিনপুরের মালাবতী জঙ্গলের দিকে খেদিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সপ্তাহখানেক আগে মেদিনীপুর বন বিভাগের চাঁদড়ার দিক থেকে হাতির দলটি লালগড়ের পডিহার জঙ্গলে ঢুকেছিল। লাগোয়া নতুনডিহি মৌজায় গত কয়েকদিন ধরে একটি আমের বাগানে তাণ্ডব চালাচ্ছিল হাতিরা। প্রায় দু’শোর কাছাকাছি আমগাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, হাতির দলটি কয়েকদিনে মাঠের ফসল, বাগানের ফলমূল সাবাড় করেছে। গাছ ভেঙেছে। খাবারের খোঁজে দিনকয়েক আগে একটি অঙ্গনওয়াড়ির জানালা-দরজাও ভেঙেছে। তাও হাতি খেদানো হয়নি।

যদিও বনকর্মীদের পাল্টা দাবি, স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বাধায় হাতির দলটিকে এতদিন সরানো যায়নি। হাতিদের খেদানো হলে তারা মর্জি-মতো রুট ধরে যায়, তাদের তো আর নির্দিষ্ট রুট ধরে যেতে বাধ্য করা সম্ভব নয়। কিন্তু ফসল বাঁচাতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হাতিদের গতি পথে বাধা দেওয়া হয়। তার ফলে ক্ষিপ্ত হয়ে হাতিরা আরও ক্ষয়ক্ষতি করে। পডিহা ও লাগোয়া এলাকায় তেমনই ঘটনা ঘটেছে। ২০০৬ সালে লালগড় ব্লক সদরের অদূরে পডিহা গ্রামের লাগোয়া নতুনডিহি মৌজায় ১৬ বিঘা জমিতে ওই আমের বাগান করেছিলেন তৎকালীন লালগড় ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বনবিহারী রায়। বনবিহারী বলছেন, ‘‘২০০৬ সালে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকের পদ থেকে অবসর নেওয়ার পরে প্রভিডেন্ড ফান্ডের টাকায় ওই আমের বাগান করেছিলাম। গোড়ায় চারশো আমগাছ ছিল। ২০০৯-১০ সালে মাওবাদী সন্ত্রাস-পর্বে ওই আমবাগান থেকে দু’শো গাছ লোপাট হয়ে গিয়েছিল। আরও দু’শো হিমসাগর, চৌসা, আম্প্রপালি, তোতাপুরি আমের গাছ ছিল। হাতিরা সব শেষ করে দিল।’’

বনবিহারীর ছেলে সুপ্রিম রায় বলেন, ‘‘মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতি এই তিন রাতে হাতির দলটি বাগানের ১৯১টি আম গাছ উপড়ে ভেঙে দিয়েছে। আম খেয়ে সাবাড় করেছে। সাধের বাগানটির দফারফায় বাবা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন।’’ লালগড়ের রেঞ্জ অফিসার শ্রাবণী দে বলেন, ‘‘হাতির দলটিকে কংসাবতী পার করিয়ে মালাবতীর জঙ্গলের দিকে পাঠানো হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’’

২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটের পরে বর্ষীয়ান বনবিহারীকে লালগড় ব্লক তৃণমূলের সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকে তিনি নিষ্ক্রিয় হয়ে যান। গত বছর তৃণমূলের জেলা কমিটিতে তাঁকে সদস্য করা হলেও তিনি থাকতে রাজি হননি। সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে থাকা বনবিহারী তাঁর সাধের বাগান নিয়ে মজেছিলেন। সেটাও শেষ হয়ে গেল।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Leaders elephant attack
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy