চাঁদে জমি কেনার দলিল হাতে মার্থা টুডু। সঙ্গে স্বামী সুমন্ত মুর্মু। নিজস্ব চিত্র
প্রথম বিবাহবার্ষিকীতে স্ত্রীকে চাঁদে এক একর জমি কিনে দিলেন ঝাড়গ্রাম শহরের বাসিন্দা বছর পঁয়ত্রিশের সুমন্ত মুর্মু।
আজ, শুক্রবার ২ জুলাই সুমন্তের প্রথম বিবাহবার্ষিকী। তার আগেই বৃহস্পতিবার স্ত্রী মার্থাকে চাঁদে কেনা জমির দলিল উপহার দিয়েছেন সুমন্ত। আকাশের চাঁদ হাতে পেয়ে রীতিমতো আপ্লুত মার্থা বলছেন, ‘‘আমাদের জীবদ্দশায় চাঁদে থাকার সুযোগ হবে না। তবে এই দলিলের ভিত্তিতে আমাদের ভবিষ্যৎ কোনও এক প্রজন্ম হয়তো চাঁদে থাকবে, এটা ভেবেই রোমাঞ্চিত হচ্ছি। সুমন্তের এমন উপহার কোটি টাকার চেয়েও দামি।’’ বিদ্যুৎ দফতরের ঝাড়গ্রাম সাব স্টেশনের কর্মী সুমন্ত একটি মার্কিন সংস্থার কাছ থেকে অনলাইনে চাঁদে জমি কিনেছেন ৪৫ ডলারে (ভারতীয় মুদ্রায় ৩২৪০ টাকা)। ডাকযোগে জমির দলিলও পেয়ে গিয়েছেন তিনি। অবসরে সঙ্গীত ও অভিনয়ের চর্চা করেন সুমন্ত। নিজে গান লিখে সুর করেন। সাঁওতালি জীবনমুখী গানের অন্যতম প্রথম সারির শিল্পী সুমন্ত একজন পর্বতারোহীও। রাজ্য থেকে তিনিই প্রথম হিমাচলের মাউন্ট রামজাকের শীর্ষে আরোহণ করেছিলেন। এ ছাড়াও অন্যান্য বহু পর্বত-অভিযানেও যোগ দিয়েছেন তিনি।
সুমন্তের জীবনে ছন্দপতন ঘটে ২০১৭-র নভেম্বরে। তখন তিনি বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার নন্দীগ্রামের আমতলিয়া সাবস্টেশনে কর্মরত ছিলেন। বাইকে নন্দীগ্রাম যাওয়ার পথে লরির ধাক্কায় ডান পায়ে আঘাত পান। পরে ডান হাঁটুর নিীচ থেকে ডান পা সম্পূর্ণ কেটে বাদ দিতে হয়। কিন্তু ভেঙে পড়েননি সুমন্ত। কয়েকমাসের মধ্যেই কৃত্রিম পায়ের সাহায্য নিয়ে ফেরেন স্বাভাবিক জীবনে। গত বছর কলকাতার দমদমের বাসিন্দা মার্থা টুডুকে বিয়ে করেছেন। সেই বিয়ের বর্ষপূর্তিতে স্ত্রীকে ব্যতিক্রমী উপহার দেবেন বলে ঠিক করেছিলেন। সুমন্ত বলেন, ‘‘ছোটবেলা থেকেই চাঁদের প্রতি আগ্রহ ছিল। হঠাৎই ইন্টারনেট ঘাঁটতে গিয়ে চাঁদে জমি কেনা যায় বলে জানতে পারি। ক্রেতাদের তালিকায় রোনাল্ড রেগন, জর্জ বুশের মত আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টরাও রয়েছেন দেখে যোগাযোগ করি। আমেরিকার ওই সংস্থাটি প্রকৃতই চাঁদের জমির মালিকানা নিয়ে এ পর্যন্ত ৬০ লক্ষ ক্রেতাকে ৬১ কোটি একর জমি বিক্রি করেছে। আন্তর্জাতিক মানের কয়েকটি হোটেল কর্তৃপক্ষও চাঁদে জমি কিনেছেন। তাই সব দিক খতিয়ে দেখে নিশ্চিত হয়ে জমি কিনেছি।’’
ডেনিস হোপের মালিকানাধীন আমেরিকার ‘লুনার এমব্যাসি’ নামের সংস্থাটি চাঁদের জমি বিক্রি করে। রাষ্ট্রপুঞ্জের আনা একটি প্রস্তাবের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিশ্বের কোনও দেশ বা কোনও দেশের সরকার সৌরজগতের কোনও মহাজাগতিক বস্তুর উপর নিজেদের অধিকার, মালিকানা বা আইনি স্বত্ব দাবি করতে পারবে না। আটের দশকের একেবারে গোড়ার চাঁদের জমি এবং খনিজ সম্পদের মালিকানা দাবি করে রাষ্ট্রপুঞ্জকে চিঠি লেখেন হোপ। রাষ্ট্রপুঞ্জের মৌনতাকে সম্মতি ধরে নিয়েই চাঁদের জমি বিক্রি করতে শুরু করেন হোপ। তৈরি করেন ‘গ্যালাকটিক ইনডিপেন্ডেন্ট গভর্নমেন্ট’। হোপ নিজে সেই সরকারের প্রেসিডেন্ট। ২০০৯ সালে হোপের গ্যালাকটিক গভর্নমেন্ট আমেরিকার সরকারের মান্যতাও পায়। খোদ হিলারি ক্লিন্টন সই করেছিলেন গ্যালাটিক ইনডিপেন্ডেন্ট সরকারের স্বীকৃতিপত্রে। আমেরিকার পূর্ব উপকূলে নেভাদায় লুনার এমব্যাসির মূল কার্যালয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy