কাটমানি ফেরত পাওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন বছর সত্তরের লক্ষ্মীকান্ত জানা। এখন সেটাই তাঁর ‘কাল’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শাসক দলের ‘প্রভাবশালী’ নেতার বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ জানিয়েছিলেন বিডিওর কাছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৯ জুলাই অভিযোগকারীকে শুনানির জন্য বিডিও অফিসে ডেকে পাঠানো হয়। কিন্তু পরিবার থেকে বলা হয়, অসুস্থতার জন্য তিনি সেদিন হাজির হতে পারবেন না। এর পর সোমবার ২২ জুলাই ফের ডাকা হলে সেদিনও তিনি অসুস্থতার কারণে হাজির হননি বলে পরিবার সূত্রে খবর। এই অবস্থায় মঙ্গলবার ফের লক্ষ্মীকান্তকে শুনানিতে ডাকা হয়েছে।
কিন্তু অসুস্থতা নয়, বিরোধী বিজেপির অভিযোগ, যাঁর বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেছেন লক্ষ্মীকান্ত সেই হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা ব্লক তৃণমূল সভাপতি মেঘনাদ পালের ‘প্রতাপ’ এলাকার সকলেরই জানা। এমন নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় লক্ষ্মীকান্ত নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। তাই হয়তো অসুস্থতার ‘অজুহাত’।
নন্দীগ্রাম-১ ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, সোমবার অভিযোগকারী লক্ষ্মীকান্তকে বিডিও অফিসে ডাকা হয়। এদিন তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। পুনরায় বিডিও অফিস থেকে মঙ্গলবার তাঁকে হাজির হওয়ার জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ, লক্ষ্মীকান্ত বাড়িতে না থাকায় তাঁর ছেলেকে দিয়েই নোটিস নিতে লক্ষ্মীকান্তর নাম সই করিয়ে নেওয়া হয়। গত ১৬ জুলাই নন্দীগ্রাম-১ এর বিডিওর কাছে কাটমানি ফেরতের দাবি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন লক্ষ্মীকান্ত। তাঁর অভিযোগ, ২০১৭ সালে বাংলা আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির জন্য এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা পেয়েছিলেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ৪০ হাজার টাকা তাঁকে দেওয়া হয়নি। এর জন্য একাধিকবার পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মেঘনাদ পালের দ্বারস্থ হলেও লাভ হয়নি। তাই উপ প্রধানের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তুলে বিডিওকে লিখিত জানান।
জেলা বিজেপি সভাপতি নবারুণ নায়েকের দাবি, ‘‘শাসকদলের বিরুদ্ধে কাটমানি ফেরতের অভিযোগ জানানোর পর নানাভাবে প্রশাসন ও তৃণমূলের লোকজন লক্ষ্মীকান্তকে হুমকি দিচ্ছে। নিরাপত্তার জন্য আমরা ওই পরিবারের পাশে থাকব বলে জানিয়েছি।’’ যদিও বিজেপির এমন দাবি একেবারেই মনগড়া বলে উড়িয়ে দিয়েছেন মেঘনাদ। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘নিয়মমতো ওই উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রাপ্য টাকা চলে যাওয়ার কথা। কিন্তু লক্ষ্মীকান্ত জন ধন যোজনায় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার পর সেখানে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের চেয়ে বেশি টাকা জমা ছিল। তাই সেই অ্যাকাউন্টে আর টাকা ঢোকেনি। তবে লক্ষ্মীকান্ত যাতে তাঁর প্রাপ্য টাকা পান সে জন্য পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছে।’’
বিডিও সুব্রত মল্লিকের অবশ্য দাবি, ‘‘গত ১৯ জুলাই, শুক্রবার ওই উপভোক্তাকে ডাকা হয়েছিল। তিনি না আসায় সোমবার ফের নোটিস দিয়ে মঙ্গলবার হাজির থাকতে বলা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy