নিহতের পরিবারকে চেক দিচ্ছেন মমতা। ছবি: শুভেন্দু কামিলা
মিলেছে ক্ষতিপূরণ। হোমগার্ডের চাকরি। কিন্তু তা কি আর ফেরাবে প্রিয়জনদের! মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকার আশ্বাস মেলার পরেও সেই প্রশ্ন ঘুরছে এগরার বাজি বিস্ফোরণে মৃতদের অধিকাংশ পরিজনের মনে।
গত ১৬ মে এগরার খাদিকুলে বাজি বিস্ফোরণের ১১ দিন পরে শনিবার এলাকায় গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন না করলেও সেখান থেকে ৮০০-৯০০ মিটার দূরে আলিপুর মৌজায় একটি সভাস্থলে তিনি মৃতের পরিজনের সঙ্গে দেখা করেন। বাজি কারখানার মালিক তথা নিহত কৃষ্ণপদ বাগের পরিবারকে বাদ দিয়ে সেখানে মমতা বাকি ১০ জন মৃতের পরিবারের হাতে আড়াই লক্ষ টাকার চেক এবং হোম গার্ডের চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন। কিন্তু ক্ষতিপূরণ পেয়েও প্রিয়জন হারানোর বেদনা ভুলতে পারছে না তারা। বরং তারা বলছে, আগে পুলিশি পদক্ষে করা হলে এই দুর্ঘটনা ঘটত না।
বিস্ফোরণে মারা গিয়েছেন অম্বিকা মাইতি। তাঁর স্বামী সুরেশ এবং দুই মেয়ে এদিন ক্ষতিপূরণ নেন। তবে তাঁরা খুব খুশি নন। অম্বিকার বড় মেয়ে শিউলি মাইতি দূরে নার্সিংয়ের চাকরি করেন। তাঁকে যাতে এই জেলায় বদলি করা হয়, মুখ্যমন্ত্রী জেলা শাসক পূর্ণেন্দু মাজিকে সেই নির্দেশ দিয়েছেন। যদিও শিউলি বলেন, ‘‘চাকরি ও টাকা দিলে তো আমার মাকে ফিরে পাব না। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের শান্তনা দিলেন। পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন। আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছি এভাবে যাতে কেউ মারা না যান, সেই বিষয়ে দেখতে।’’ আরেক মৃত মাধবী বাগের স্বামী সঞ্জীব বাগ দুই নাবালক ছেলেকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে ক্ষতিপূরণ এবং চাকরির নিয়োগ পত্র নেন। মুখ্যমন্ত্রী ছেলে অংশু ও আকাশের শরীর এবং পড়াশুনা নিয়ে খোঁজ নিয়েছেন। তাদের পড়াশুনা যাতে ঠিক ভাবে হয়, সেই নির্দেশও দেন জেলাশাসককে। যা দেখে সঞ্জীব বাগ বলেন, ‘‘ক্ষতিপূরণ ও চাকরির দিলেও স্ত্রীকে তো পাব না। তবে মুখ্যমন্ত্রী যে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, এটাই শান্তনা।’’ চাকরি পেয়ে আবার খুশি মৃত মিনতি মাইতির ভাইপো বেনুধর মাইতি। তিনি বলেন, ‘‘যে মারা গিয়েছেন, তাঁকে তো ফিরে পাবো না জানি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী চাকরি দেওয়ায় খুশি হয়েছি।’’
এলাকায় মিনিট পঁচিশের থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বেরিয়ে যান। ক্ষতিপূরণ বিলির এই অনুষ্ঠানে কোনও দলীয় নেতৃত্বদের উপস্থিত লক্ষ্য করা যায়নি। মুখ্যমন্ত্রীকেও এ দিন বলতে শোনা যায়, ‘‘রাজনীতি করতে আসিনি। অনেক রাজনীতির জলঘোলা করা হয়েছে। মানবিক উদ্দেশ্যে এসেছি।’’ তবে এলাকায় মুখ্যমন্ত্রী এলেও স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের না ডাকায় কটাক্ষ করছে বিজেপি। খাদিকুল সাহাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। যা আপাতত বিজেপি নিয়ন্ত্রনাধীন। সাহাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান স্বপন দন্ডপাঠ জানিয়েছেন, প্রশাসনিক ভাবে তাঁদের ওই কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এ নিয়ে বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুদাম পন্ডিত বলেন, ‘‘আগে ওঁর পুলিশ যদি এই বেআইনি কারবার বন্ধ করত, তা হলে এতগুলি মানুষের মৃত্যু হত না। এ দিনের কর্মসূচিতে স্থানীয় প্রধান ও উপ প্রধানদেরও আমন্ত্রণ করা হয়নি। উনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই কর্মসূচি করেছেন।’’ যদিও স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তরুণ মাইতি বলেন, ‘‘কিছু লোক এটাকে নিয়ে রাজনীতি করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মানবিক ভাবে মৃতের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy