Advertisement
২০ ডিসেম্বর ২০২৪
Illegal sand mining

‘চোরা-বালি’তে পশ্চিমে নীরব,  ঝাড়গ্রামে সরব  

মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের আগে রবিবার রাতে ঘাটালে রূপনারায়ণ নদে বালি চুরি চক্র প্রকাশ্যে এসেছিল।

 করজোড়ে: প্রশাসনিক বৈঠকে। নিজস্ব চিত্র।

করজোড়ে: প্রশাসনিক বৈঠকে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২০ ০৩:২৫
Share: Save:

দু’দিনের সফর। পাশাপাশি দুই জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক। পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম। বালির চোরা কারবার নিয়ে অভিযোগ ওঠে দুই জেলাতেই। কিন্তু পশ্চিমের বৈঠকে বালি নিয়ে নীরব থাকলেও ঝাড়গ্রামে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

দুই জেলায় অবৈধ বালি কারবারের অভিযোগ নতুন নয়। এর আগে প্রশাসনিক বৈঠকে বালি নিয়ে সাধারণত মুখ্যমন্ত্রীর বকাঝকা খেতেন গড়বেতার বিধায়ক আশিস চক্রবর্তীরা। মঙ্গলবার খড়্গপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে আশিসকে বকাঝকা করেননি মুখ্যমন্ত্রী। শুধু জিজ্ঞেস করেছেন, ‘‘গড়বেতার অনেক কমপ্লেন পাচ্ছি কেন?’’ আশিসের উত্তর ছিল, ‘‘আর কোনও গোলমাল নেই।’’ কথা বাড়াননি মমতা।

বুধবার ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক বৈঠকে অবশ্য মমতা নিজে টেনে আনেন বালির প্রসঙ্গ। নদী থেকে বালি তুলে নিলে যে সেতুর ভিত নড়ে যায় তা আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। এরপর বৈঠকে ফের বালির প্রসঙ্গ তোলেন জেলা পরিষদের ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মামনি মুর্মু। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নালিশ করেন, ‘‘রাত এগারোটার পরে বালি ও মোরাম পাচার হচ্ছে।’’

মুখ্যমন্ত্রী আধিকারিকদের প্রশ্ন করেন, ‘‘এটা দেখে না কেন? কার এত ইন্টারেস্ট! সে যেই হোক। বালি-টালি পাচার করতে দেব না। স্ট্রং অ্যাকশন নিতে হবে।’’ জেলাশাসক আয়েষা রানি সভায় দাবি করেন, রোজ অভিযান হচ্ছে। এফআইআর করা হচ্ছে। জরিমানা করা হচ্ছে। মমতা বলেন, ‘‘অ্যারেস্ট করুন কয়েকটাকে। তবেই তো ঠিক হবে।’’

মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের আগে রবিবার রাতে ঘাটালে রূপনারায়ণ নদে বালি চুরি চক্র প্রকাশ্যে এসেছিল। রবিবার রাতে ঝাড়গ্রাম ব্লকের রাধানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের জারালাটা গ্রামে অবৈধ খাদান থেকে মোরাম তুলে লরিতে পাচার হওয়ার সময়ে হাতেনাতে ধরেন মামনি। ভূমি কর্মাধ্যক্ষের তৎপরতায় তিনটি মোরাম ভর্তি লরি ও একটি খালি লরি আটক করা হয়। ধরা পড়েন লরিগুলির চারজন চালক। এ ছাড়াও মোরাম খোঁড়ার সরঞ্জাম ও একটি মোটরবাইকও আটক করা হয়।

বালি নিয়ে অভিযোগ দুই জেলাতেই রয়েছে। সফরের আগে বালি চুরি প্রকাশ্যে এসেছে দু’জায়গাতেই। তা হলে দুই জেলায় দুই অবস্থান কেন? প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশের ব্যাখ্যা, পশ্চিমের বৈঠকে কেউ বালির প্রসঙ্গ খুঁচিয়ে তোলেননি। কিন্তু ঝাড়গ্রামে তা করেছেন মামনি। তাই স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন মমতা। তা ছাড়া পশ্চিমের বৈঠকে তথ্য সহকারে তিনি দেখিয়েছেন, গ্রিভান্স সেলে তেমন কোনও অভিযোগ জমা পড়ে নেই।

পশ্চিম মেদিনীপুরে গ্রিভান্সের ৯৮.৮১ শতাংশ কাজ হয়েছে। দেখা গিয়েছিল, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে তেমন কেস পড়ে নেই। ঝাড়গ্রামেও অভিযোগ ও তার সমাধান সংক্রান্ত তথ্য দিয়ে‌ছেন মমতা। বিরোধীদের একাংশের ব্যাখ্যা, ঝাড়গ্রামে ‘চোরা-বালি’র জেরে ভোটব্যাঙ্কে ধস নামার আশঙ্কা বেশি— সম্ভবত এটা আঁচ করেই খড়্গহস্ত হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

অন্য বিষয়গুলি:

Illegal sand mining Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy