মেদিনীপুরে পৌঁছলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র
কাল, সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর পূর্বনির্ধারিত মেদিনীপুর সফর। তার আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। তার মধ্যেই রবিবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুর শহরে পৌঁছে গেলেন মমতা। রবিবার শহরের সার্কিট হাউসে থাকবেন তিনি। সূত্রের খবর, সেখানেই জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তার প্রস্তুতি হিসাবে জেলাশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার রিপোর্ট তৈরি করে ফেলেছেন বলেও জানা গিয়েছে। কাল পুরোদস্তুর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার কথা তৃণমূলনেত্রীর।
দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় ডাক পেয়েছেন শুভেন্দু ঘনিষ্ঠদের অনেকেই। আবার ডাক পাননি বলেও উষ্মা প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ।শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত মেদিনীপুর পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান প্রণব বসু সদ্য অপসারিত হয়েছেন পুরসভার প্রশাসনিক বোর্ড থেকে। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, আমন্ত্রণ না পেলে তিনি কোথাও যান না। মমতার সভাতেও যাবেন না। একই কথা জানিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু অনুগামী জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরি। আর এক শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ নেতা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতির নিরাপত্তারক্ষী ফিরিয়ে নিয়েছে জেলা পুলিশ। তিনি অবশ্য, ডাক না পেলেও শ্রোতা হিসেবে সভায় থাকবেন বলে জানিয়েছেন। মেদিনীপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক স্নেহাশিস ভৌমিক আবার শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ হয়েও সভায় ডাক পেয়েছেন। তিনি সভায় যাবেন বলে জানিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরকে কেন্দ্র করে মেদিনীপুর শহরে রীতিমতো ‘সাজ-সাজ রব’। রাস্তা সাজানো হচ্ছে দলীয় পতাকা দিয়ে। যদিও দিন দুই আগে শহরের অনেক এলাকা থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পতাকা, ফেস্টুন এবং কাটআউট সরিয়ে দেয় মেদিনীপুর পৌরসভা। পুরসভা সূত্রে খবর, শহরের সৌন্দর্যায়নের জন্য এই উদ্যোগ। তবে বিজেপি এর পিছনে অন্য অভিসন্ধি দেখতে পাচ্ছে। বিজেপি-র জেলা সভাপতি শমিত দাশের অভিযোগ, ‘‘পরিকল্পনা করেই বেছে বেছে আমাদের দলের পতাকা খুলে ফেলা হয়েছে। ওরা শহরজুড়ে লাগিয়েছে নিজের দলের পতাকা। এটা নির্লজ্জতা ছাড়া অন্য কিছুই নয়। যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মেদিনীপুরের সভায় এসেছিলেন, তখন তাঁকে স্বাগত জানাতে তৃণমূলের পতাকা দিয়ে শহরে মুড়ে ফেলেছিল। এখন ওরা গেরুয়াকে ভয় পাচ্ছে বলেই বিজেপির পতাকা সব খুলে ফেলে দিয়েছে।’’
যদিও মেদিনীপুর পৌরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য নির্মল চক্রবর্তী দাবি, ‘‘সব রাজনৈতিক দলের পতাকা ফেস্টুন ব্যানার ফ্লেক্স খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত পৌরসভার। পৌর প্রশাসক তথা মহকুমা শাসক দায়িত্বে থাকাকালীন শহরের সৌন্দর্যায়নের ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দলকে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশিকা কার্যকর করা হয়েছে।’’
রবিবার শহরে দলনেত্রী আসতে পারেন, এই খবর পেয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় শনিবার রাত জেগে লাগানো হয়েছে মমতা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দিয়ে ব্যানার। যে ব্যানারে রয়েছে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচির বিষয়গুলি। তৈরি হয়েছে দু’টি অস্থায়ী হেলিপ্যাড। তাছাড়াও আপৎকালীন হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়েছে গড়বেতার ধাদিকা এলাকায়।
প্রশাসন সূত্রে খবর, মেদিনীপুর শহরে কলেজ মাঠে মমতার সভা সোমবার দুপুর সাড়ে বারোটায়। সভাস্থলে পিছনে তৈরি হয়েছে অস্থায়ী হেলিপ্যাড। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির কথায়, ‘‘সভায় প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত হবে। সব কর্মী-সমর্থকদের জায়গা দেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না।’’ মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও আসার কথা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সির।
রবিবার দেখা গেল, মঞ্চ তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। কর্মী-সমর্থকদের বসার জন্য পাতা হচ্ছে আসন। রাস্তায় নিরাপত্তায় জোর দিয়েছে জেলা পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী আসার ফলে বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকেরা কোথাও বিক্ষোভ দেখাতে পারে কি না, সে ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে গোয়েন্দা দপ্তর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy